Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সিরাজগঞ্জে যমুনায় ব্যাপক ভাঙন, নদীগর্ভে বিলীন শতাধিক ঘরবাড়ি


২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৫:৪২

সিরাজগঞ্জ: মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বসত বাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এতে স্থানীয়রা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নদী ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে এনায়েতপুর কাপড়ের হাট, খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মসজিদ, মাদরাসা, স্কুলসহ বহু স্থাপনা। ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেতে নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ ঘরগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

বিজ্ঞাপন

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য এনায়েতপুরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য ছয়শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। প্রকল্প বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা।

স্থানীয়রা জানান, চলতি বছরে চার দফা বন্যার পর যমুনা নদীতে পানি কমতে শুরু করে। হঠাৎ করে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে যমুনায় পানি বাড়তে শুরু করে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এনায়েতপুরে শুরু হয় ব্যাপক নদী ভাঙন। গত দুদিনে শতাধিক বসতবাড়ি, ফসলি জমি, মসজিদ, মাদরাসা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। অনেকে কিছুই সরাতে পারেনি। মুহূর্তের মধ্যে নদীতে ধসে পড়ে তাদের বসতবাড়ি।

এদিকে অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে এনায়েতপুরের পাঁচটি গ্রামের কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে চৌহালী উপজেলাধীন দেশের সর্ববৃহৎ এনায়েতপুর কাপড়ের হাট, খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, নার্সি ইন্সটিটিউট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বহু তাঁত কারখানাসহ হাটবাজার যমুনার অদূরে রয়েছে। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে যমুনা পারের মানুষ। সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব এসব মানুষ এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষ দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে অনশন পালন করেন স্থানীয় দুই বৃদ্ধ। খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌছে দ্রুত বাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুই বৃদ্ধের অনশন ভাঙান।

সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সদস্য ও পাকুরতলা গ্রামের বাসিন্দা কামরুজ্জামান বলেন, ‘গত কয়েকদিনে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি যমুনার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি বাড়ার সময় ভাঙন ঠেকাতে জরুরি কিছু কাজ করা হলেও স্থায়ী কাজের অভাবে এখন হুমকির মুখে পড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল এলাকা। দ্রুত কাজ করা না হলে বৃহত্তম একটি জনপদের অস্তিত্ব বিলীন হবে।’

স্থানীয় ইয়াসিন প্রামানিক বলেন, ‘৮০ বছরের জিন্দিগিতে সাতবার নদী ভাঙনের কবলে পড়েছি। ভাঙতে ভাঙতে সব শেষ হয়ে গেছে। ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ চাই। বাঁধ নির্মাণের দাবিতে অনশনে বসেছিলাম। পানি উন্নয়নের কর্মকর্তারা বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে অনশন ভঙ্গ করান। প্রধানমন্ত্রী কাছে আবেদন, নদী ভাঙনের হাত থেকে এনায়েতপুরকে রক্ষার করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।’

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাজীপুরের পাটাগ্রাম এবং এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে কৈজুরি পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এলাকা অরক্ষিত। এই দুটি স্থানে ভাঙন রয়েছে। ভাঙন রোধে সাড়ে ১১শ কোটি টাকার দুটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করছি শুস্ক মৌসুমে স্থায়ী কাজ শুরু করতে পারব।’

এনায়েতপুর নদীগর্ভে বাড়িঘর বিলীন ভাঙন যমুনা সিরাজগঞ্জ

বিজ্ঞাপন

রিশাদ-জাহানদাদে কুপোকাত সিলেট
৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:২১

আরো

সম্পর্কিত খবর