চাঁদাবাজি-মারধরের অভিযোগে কাউন্সিলর সেন্টুর বিরুদ্ধে মামলা
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৬:৪৬
ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ‘চাঁদার টাকা না পেয়ে’ এক ব্যবসায়ী, তার বাবাসহ দোকান কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টুর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সেন্টুসহ মামলার আসামিরা হলেন দলটির স্থানীয় নেতা সেলিম, ব্যবসায়ী সমিতির নেতা বাবুল, আবুল মণ্ডল, মো. সালাম, মো. লাবু, মো. চৌধুরী এবং মো. মোহন।
মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে মোহাম্মদপুর থানায় আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম।
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ সারাবাংলাকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ওসি বলেন, ‘যে অভিযোগে মামলা হয়েছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এখনও কাউকে গ্রেফতার করা না হলেও তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার বাদী তরিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানান, মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারে ‘সিঙ্গাপুর জুস অ্যান্ড কফি বার’ নামে একটি দোকান চালান তিনি।
গত ২০ সেপ্টম্বর দুপুরে কাউন্সিলর সেন্টু তার অফিসের কর্মচারী কামরুলকে দোকানে পাঠিয়ে ‘৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু তরিকুল চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় পরদিন কাউন্সিলর সেন্টু দলবল নিয়ে ওই দোকানে গিয়ে তরিকুল ও তার কর্মচারীদের মারধর করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এজাহারে তরিকুল অভিযোগ করেন, কাউন্সিলর সেন্টুর সঙ্গে থাকা লোকজন তার দোকানের ক্রেতাদেরও মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছেন। একপর্যায়ে তরিকুলের বাবা আবু তাহের এগিয়ে গেলে কাউন্সিলর সেন্টু পিস্তল দিয়ে তার মাথা ও মুখে আঘাত করেন এবং চাঁদার টাকার জন্য গুলি করার ভয় দেখান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টু বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় সারাবাংলাকে বলেন, ‘বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করে। বিশেষ করে সন্ধ্যার দিকে ওই পথ দিয়ে কেউ চলাচল করতে পারে না। সাধারণ জনগণ অভিযোগ করেন। ফুটপাত ছেড়ে ব্যবসা করতে বলা হয়েছে। এরপর যে যার মতো কাজ করছি। গতকাল হঠাৎ জানতে পারি, আমার নামে মামলা করেছে ব্যবসায়ী তরিকুল।’
এক প্রশ্নের উত্তরে সেন্টু বলেন, ‘টাকা (চাঁদা) চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। আর মারধরের যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটিও মিথ্যা। কারণ পিস্তুল দিয়ে মাথায় আঘাত করলে তাদের হাসপাতালে থাকার কথা। অথচ তারা দিব্বি দোকান করছে।’
সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে বড় বড় কাজ বাগিয়ে নেওয়া, বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, ক্যাসিনোর কারবারে শত শত কোটি টাকা অর্জন করে বিদেশে পাচারের অভিযোগে ২০০ জনের তালিকা ধরে যে অনুসন্ধান দুদক করছে, তার অংশ হিসেবে সম্প্রতি কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।