অক্সফোর্ডের করোনা টিকা ট্রায়ালে ফিরেছে
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:৫৭ | আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:৫৬
তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল চলাকালে এক ভ্যাকসিন ভলান্টিয়ারের অসুস্থতার জেরে, সপ্তাহখানেক বন্ধ থাকার পর ফের ট্রায়ালে ফিরেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ফার্মা’র করোনা টিকা। খবর রয়টার্স।
শনিবার(১২ সেপ্টেম্বর) অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র তরফ থেকে গণমাধ্যমকে বলা হয়েছে, টিকার নিরাপত্তাসংক্রান্ত দিকগুলো স্বাধীনভাবে পর্যালোচনা করে, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সবুজ সংকের পাওয়ার পরই ফের টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করেছেন তারা।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক এক টুইটার বার্তায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র করোনা টিকার ট্রায়াল পুনরায় চালুর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। একই সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বাগ্রে প্রাধান্য দেওয়ায় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
Good news for everyone the Oxford vaccine trials are back up and running. This pause shows we will always put safety first. We will back our scientists to deliver an effective vaccine as soon as safely possiblehttps://t.co/RUtTE3sPim
— Matt Hancock (@MattHancock) September 12, 2020
এর আগে, একজন ভ্যাকসিন ভলান্টিয়ার অসুস্থ হয়ে পড়লে সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখ থেকে কিলিনিকাল ট্রায়ালের সবকয়টি কেন্দ্রে ভ্যাকসিনেশন স্থগিত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
এখন টিকার নিরাপত্তা পর্যালোচনাকারী আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ যুক্তরাজ্যের মেডিসিনস হেলথ রেগুলেটোরি অথোরিটিকে (এমএইচআরএ) জানিয়েছে, এখন ওই টিকার পুনরায় ট্রায়াল শুরু করা নিরাপদ।
এদিকে, যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই করোনা টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে টিকাটি তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে আছে।
ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় ৩০ হাজার ভ্যাকসিন ভলান্টিয়ার এই টিকার ট্রায়ালের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ট্রায়ালের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এ পর্যায়ের ট্রায়ালে সকল টিকার ক্ষেত্রেই কয়েক হাজার অংশগ্রহণকারীকে যুক্ত করতে হয়। এবং চূড়ান্ত ফলাফল আসতে কয়েক বছর সময়ও লাগতে পারে।
অন্যদিকে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে টিকা নেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়া স্বেচ্ছাসেবক মেরুদণ্ডের প্রদাহজনিত স্নায়ুবিক সমস্যায় (ট্রান্সভার্স মায়েলাইটাস) ভুগছেন। তবে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র বিবৃতিতে ওই ভ্যাকসিন ভলান্টিয়ারের ব্যাপারে কোনো কিছু জানানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের শেষে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে নভেল করোনাভাইরাস। ওই ভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এ এরই মধ্যে বিশ্বে পৌনে তিন কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে নয় লাখের বেশ মানুষের। এ মহামারি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় টিকা উদ্ভাবনে বিশ্বে দুইশতাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ছয়টি উদ্যোগ ট্রায়ালের শেষ দিকে রয়েছে।
ওই তালিকার শীর্ষে রয়েছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ফার্মা’র করোনা টিকা। পাশাপাশি, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী-গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউট’র টিকা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে (যদিও ওই টিকার তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে)।
এছাড়াও মডার্না, ফাইজার, ক্যানসিনো বায়োলজিক্যাল, সিনোভ্যাক বায়োটেক ও সিনোফার্ম বিশ্বের কয়েকটি দেশে নিজেদের উদ্ভাবিত করোনা টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চালাচ্ছে। চূড়ান্ত ট্রায়ালে সফল টিকাগুলোই কেবলমাত্র ইমারজেনসি অথরাইজেশন প্রাপ্ত হবে। সবশেষে আসবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) চূড়ান্ত অনুমোদনের প্রসঙ্গ।
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন অ্যাস্ট্রাজেনেকা টপ নিউজ তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল ম্যাট হ্যানকক যুক্তরাজ্য