উত্তর প্রদেশে ‘জয় শ্রীরাম না বলায়’ ট্যাক্সিচালক খুন
৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:০০ | আপডেট: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৩৮
ভারতের উত্তর প্রদেশে আরোহীদের হাতে খুন হয়েছেন ৪৫ বছর বয়সী ট্যাক্সিচালক আফতাব আলম। তার পরিবারের দাবি, জয় শ্রীরাম – না বলায় আফতাবকে খুন করা হয়েছে। এ দাবির স্ব-পক্ষে অডিও রেকর্ডও হাজির করেছেন তারা। খবর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ট্যাক্সিতে একজন যাত্রী নিয়ে বুলন্দশহর যান আফতাব। তাকে নামিয়ে রাতে ফেরার পথে দুই জন যাত্রীকে ট্যাক্সিতে তোলেন। পরে, তাদের হাতেই খুন হন তিনি।
এ ব্যাপারে আফতাবের ছেলে সারিব জানিয়েছেন, রাত আটটা নাগাদ আফতাব তাকে ফোন করেন। তিনি তখন একটি টোল প্লাজার কাছে ছিলেন। তার ধারণা হয়েছিল, তিনি ভুল লোককে ট্যাক্সিতে তুলেছেন। তারপর ফোন চালু অবস্থাতেই পাশে রেখে দেন। সারিব কল রেকর্ড করতে শুরু করেন।
“We are Muslims, but we have a right to live.”
Mohammad Sabir received a call from his father Aftab Alam, who strangely did not say a word.
He heard people say "Jai Shri Ram bol, bol Jai Shri Ram”.
The next day, the police found his father dead. https://t.co/eImF7wIPSl
— The Wire (@thewire_in) September 7, 2020
ওই রেকর্ডিং থেকে শোনা যায়, একজন বলছেন, ‘জয় শ্রীরাম বল’। আরেকজন বলছে, ‘ভাই তু জয় শ্রীরাম বোল’। এর মিনিট পনেরো পরে আফতাবের ফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে যায়। সারিব প্রথমে দিল্লি পুলিশে ফোন করেন। তারা জানায়, নয়ডায় গৌতম বুদ্ধ নগর থানায় অভিযোগ জানাতে হবে। সেই নির্দেশ মতো তিনি নয়ডা পুলিশকে ফোন করেন।
পরে, গ্রেটার নয়ডা পুলিশ আফতাবের গাড়িটি উদ্ধার করে। তখন আফতাব চালকের সিটে। তার মাথায় ভারি জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। তখন গাড়িতে কোনো আরোহী ছিল না।
এদিকে আফতাবের ছেলে সারিব দাবি করছেন, জয় শ্রীরাম না বলার কারণেই তার বাবাকে খুন করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত অডিও ক্লিপ তার কাছে আছে। সেই অডিও ক্লিপ ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে।
অন্যদিকে, পুলিশ অবশ্য সারিবের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। তারা বলছে, ওই দুই আরোহী মাতাল ছিল। তারা ট্যাক্সি চুরি করার মতলবে উঠেছিল। তাদের পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশের ধারণা, দুই জনই ঝানু অপরাধী। অপরাধ ছাড়া এর পিছনে অন্য কোনো মোটিভ নেই।
পুলিশের বলছে, অডিও রেকর্ড তারা শুনেছে, ওই দুই অপরাধী অন্য কাউকে জয় শ্রীরাম বলতে বলছিল। আফতাবকে নয়। গাড়ি যখন থেমেছিল তখন দুই অভিযুক্ত অন্য কাউকে ওই কথা বলছিল। এর মধ্যে কোনো সাম্প্রদায়িক বিষয় নেই।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের উত্তর প্রদেশে খুনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। এ কারণে বিজেপি’র মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথের দূর্বল নেতৃত্বকে দায়ী করেছেন বিরোধী নেতারা।