ডা. সাবরিনার মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন
৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:২৭ | আপডেট: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২২:২১
ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে বরখাস্ত ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দায়ের হওয়া মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে। ডা. সাবরিনা সরকারি চাকরি করেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান পরিচয়ে কাজ করতেন। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই করোন পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সাবরিনার আইনজীবী সাইফুজ্জামান তুহিন সারাবাংলাকে আবেদনের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে সাইফুজ্জামান তুহিন বলেন, এই মামলার মূল ভিত্তি ডক্যুমেন্টের ওপর। একবার বলা হয়েছে হাজার হাজার করোনার রিপোর্ট জালিয়াতি করা হয়েছে। অথচ ডক্যুমেন্টে দেখানো হয়েছে ১৯টি। বিষয়টি জেনে আমরা বিচারিক আদালতে সেসব ডক্যুমেন্ট দাখিল করা হয়েছিল, সেগুলো চেয়ে আবেদন করেছিলাম। প্রসিকিউশনও এসব ডক্যুমেন্টের ওপর নির্ভর করেই মামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আমরা ডা. সাবরিনার পক্ষে সেসব ডক্যুমেন্টের তথ্য চেয়ে আবেদন জানাই।
জেকেজি নিয়ে সারাবাংলার অনুসন্ধান-
- সরকারি চাকরি করেওবেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান!
- চিকিৎসকদের পিপিই নেই, জেকেজির জন্য ‘আনলিমিটেড’
- সরকারি খরচে বেসরকারি ‘প্রতারণা’ জেকেজি হেলথকেয়ারের
- করোনা নমুনা পরীক্ষা নিয়ে জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রতারণার জাল
- অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ধমক দিয়ে কাজ করাত জেকেজি হেলথকেয়ার
এই আইনজীবী বলেন, বিচারিক আদালত আমাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। ওই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে আবেদন করেছি। আবেদনে মামলার ডক্যুমেন্ট চাওয়া হয়েছে। পাশাপশি মামলাটিতে স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছে।
আগামী সপ্তাহে আবেদনটি নিয়ে হাইকোর্টের কোনো একটি বেঞ্চে শুনানির জন্য যাবেন বলেও জানান ডা. সাবরিনার পক্ষের এই আইনজীবী।
এর আগে, জেকেজি হেলথ কেয়ারের করোনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতির বিভিন্ন তথ্য উঠে আসে সারাবাংলার অনুসন্ধানে। জানা যায়, সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করলেও তার জন্য টাকা নিত জেকেজি। অনুমতি না থাকলেও বাসায় নিয়ে টাকার বিনিময়ে নমুনা সংগ্রহ করত। এমনকি তারা নমুনা পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দিত। স্বাস্থ্য অধিদফতরেও এসব বিষয় নিয়ে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। পরে জেকেজি হেলথকেয়ারের করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের অনুমতি বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ডা. সাবরিনাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট থেকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এর মধ্যে এসব প্রতারণা-জালিয়াতির অভিযোগে গত ২৩ জুন জেকেজি হেলথকেয়ারের সিইও আরিফসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলার তদন্তে জেকেজি হেলকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনার নাম উঠে আসে। গত ১২ জুলাই তাকে জিজ্ঞসাবাদের জন্য ডাকা হয় তেজগাঁও থানায়। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরে তা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ এরই মধ্যে একাধিকবার রিমান্ডে নিয়ে আরিফ ও ডা. সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তারা দু’জনেই বর্তমানে এই মামলায় কারাগারে আছেন।
আরও পড়ুন-
রিমান্ড শেষে ডা. সাবরিনা কারাগারে
ডা. সাবরিনা-আরিফসহ ৮ জনের বিচার শুরু
নির্বাচন কমিশনের মামলায় ডা. সাবরিনা ২ দিনের রিমান্ডে
করোনার ভুয়া টেস্টের কথা স্বীকার করেছেন আরিফ ও সাবরিনা
জেকেজি হেলথকেয়ার টপ নিউজ ডা. সাবরিনা মামলা স্থগিতের আবেদন হাইকোর্টে আবেদন