‘৫ কারণে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করতে পারে জাপান’
২৭ আগস্ট ২০২০ ১৬:২৬
ঢাকা: পাঁচ কারণে জাপানের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ নিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনা নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও ফুজিতসু রিসার্চ ইনস্টিটিউট যৌথভাবে একটি অনলাইন সেমিনারের আয়োজন করে। ওই সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।
টোকিও থেকে প্রথম সচিব (প্রেস) মুহা. শিপলু জামান, সেমিনারে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং এই বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব জাফর উদ্দিন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, টোকিও দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ারস ড. শাহিদা আকতারসহ সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন। এ ছাড়া সেমিনারে বাংলাদেশের ৫০টি আইটি প্রতিষ্ঠান এবং জাপানের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
ওয়েবিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিখাতের সম্ভাবনা ও অবারিত সুযোগ সুবিধাগুলো সবার কাছে তুলে ধরেন। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের পথ সুগম করতে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ যেমন হাইটেক পার্ক, কর সুবিধা, ওয়ান স্টপ সার্ভিস ইত্যাদি বর্ণনা করেন।
এসময় প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগের যৌক্তিকতাও তুলে ধরেন। তিনি জাপানি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আরও বেশি বিনিয়োগের এবং বাংলাদেশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনবল নিয়োগের আহ্বান জানান।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘পাঁচ কারণে জাপানের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগের সুযোগ নিতে পারে। এগুলো হচ্ছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকারি সহযোগিতা এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ। দ্রুত বর্ধনশীল অবকাঠামো উন্নয়ন, যেখানে ২৮টি আন্তর্জাতিকমানের হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ব্যবসায় পরিচলানায় খরচ কম। ৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ বাজার সৃষ্টির সম্ভাবনা। দক্ষ এবং উন্নতমানের জনশক্তি, যেখানে জনসংখ্যার ৫০ শতাংশই ২৫ বছর বয়সের নীচে।’
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম হাই-টেক পার্ক থেকে বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রদত্ত বিভিন্ন সুবিধা ও সেবাসমূহ বর্ণনা করেন। ওয়েবিনারে আরও আলোচনা করেন সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, সচিব জাফর উদ্দিন। তারা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রেক্ষাপট ও গতিধারা তুলে ধরেন এবং জাপানি বিনিয়োগকারীদের পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
অনলাইন এই আলোচনায় আরও অংশ নেন জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অরগানাজেশনের (জেট্রো) বাংলাদেশ প্রতিনিধি জনাব ইউজি আন্দো, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সির (জাইকা) উপপরিচালক মিজ সিইকো ইয়ামাবে, জাপান ইনফরমেশন টেকনোলজি সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের (জিসা) মাসাইউকি ওসুকা, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস)-এর আলমাস কবির এবং ফুজিতসু রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পক্ষে মাইদুল ইসলাম।
পৃথক এক উপস্থাপনায় জাপান-বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি সহযোগিতা এই খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা এবং জাপানে বাংলাদেশের দক্ষ আইটি প্রফেশনালদের চাকরির সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন তারেক রাফি ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং হাই-টেক পার্কের ওপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সেমিনারটি আয়োজনে সহযোগিতা করে আইসিটি বিভাগ ঢাকা, জাইকা; ইউনাইটেড নেশন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন এবং বেসিস। প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে সেমিনারের সমাপ্তি হয়। দূতাবাসের মিনিস্টার ও দূতালয় প্রধান ড. জিয়াউল আবেদীন ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। আয়োজনটি পরিচালনা করেন দূতাবাসের বাণিজ্যিক কাউন্সিলর ড. আরিফুল হক।