Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নারী ব্যাংকারের প্রতারণার অভিযোগ


২৫ আগস্ট ২০২০ ০০:৫৯ | আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২০ ০১:৫১

ঢাকা: চার মাসের প্রেমের পর বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই যোগাযোগ বন্ধ করার জন্য নানাভাবে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন এক নারী ব্যাংকার। মেয়েটির অভিযোগ, ফেসবুকে পরিচয়ের মাত্র চার মাসের মাথায় ইন্টার্ন চিকিৎসককে বিয়ে করেন তিনি। এরপর ছেলেটির আরেকটি বিয়ে দেয় তার পরিবার। তারপর থেকেই ছেলেটি যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন মেয়েটির সঙ্গে। শুধু তাই নয়, যোগাযোগের চেষ্টা করলে ‘আপত্তিকর ছবি’ ফেসবুকে প্রকাশের হুমকিও দিয়েছেন। এসব অভিযোগে পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ওই নারী।

বিজ্ঞাপন

পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক মামলার তথ্য নিশ্চিত করে সারাবাংলাকে বলেন, ১৭ আগস্ট একজন নারী ব্যাংকার একজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে জিডি করেছেন। জিডির বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তনিমা ইসলাম (ছদ্মনামের) ওই ব্যাংকার সারাবাংলাকে জানান, তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। রাকিবুল ইসলাম নামে শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে গত রোজায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয় তার। ছেলেটির পছন্দের খাবার বানিয়ে তিনি উত্তরা গিয়ে দিয়ে আসতেন বা ছেলেটিও ধানমন্ডি এসে দেখা করতেন। জুন মাসে তারা সারাদিন একসঙ্গে ঘোরাঘুরি করেন। সেদিন তারা হোটেলে থাকারও পরিকল্পনা করেন। তবে লকডাউনের কারণে সে সুযোগ পাননি। পরে সেদিন কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে চড়ে জামালপুর চলে যান। সেখানে একজন কাজীর কাছে বিয়ে পড়েন এবং জামালপুরে তিন দিন থাকেন।

তনিমা বলেন, এরপর ঢাকায় এসে বেশ কিছুদিন ভালো চলে। কিন্তু গত ১৮ জুলাই পারিবারিকভাবে আরেকটি বিয়ে করে ছেলেটি। তারপর থেকেই আমার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখছে না রাকিব। ফোন করলে ফোন করছে না। শুধু তাই নয়, ওর সংসারে অশান্তি তৈরি করছি বলে আমার অফিসে অভিযোগ করেছে। পুলিশ দিয়ে শায়েস্তা করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

তনিমার অভিযোগ, বেশি বাড়াবাড়ি করলে মোবাইলে ধারণ করা ‘গোপন’ কিছু ফাইল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন রাকিব। এসব অভিযোগ এনেই তিনি পল্টন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

তনিমা আরও বলেন, রাকিবুল উত্তরা মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি গাজীপুর। এখন আর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে না। তবে প্রতিদিনই কোনো না কোনো সময়ে আমার রুমমেটকে ফোন করে বলে, আমি যোগাযোগের চেষ্টা করলে পুলিশ দিয়ে শায়েস্তা করাবে।

বিজ্ঞাপন

এমন পরিস্থিতিতে আত্মহত্যা করতে গিয়ে অন্যের জন্য নিজের জীবন চলে যাবে ভেবে ফিরে এসেছেন তনিমা। তিনি বলেন, ‘রাকিব যেভাবে মানসিক যন্ত্রণা দিয়ে যাচ্ছে, তাতে সমাজে ভালোভাবে বাস করা কষ্টকর হয়েছে। অফিসে আমার নামে নানা ধরনের কথা বলেছে। ভাইকে দিয়ে ফোন করে আজেবাজে গালিগালাজ করেছে। ওর মাকে দিয়েও ফোন করিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগে গত শনিবার (১৫ আগস্ট) পল্টন থানায় জিডি করেছি। সাইবার আইনেও মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

মেসেঞ্জারে দুজনের কথোপকথনের কিছু ক্লিপ দেখিয়ে তনিমা হাসান আরও বলেন, সবসময় রাকিবই যোগাযোগ করত। ঘনিষ্ঠতার প্রস্তাব দিত। কিন্তু রাজি হইনি। পরে হুট করে বিয়ে করে ফেলেছিলাম। কে জানত, তার জন্য এইভাবে শাস্তি পেতে হবে!

এ বিষয়ে জানতে ডা. রাকিবুল ইসলামকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। যোগাযোগ হয় রাকিবের ভাবি মৌসুমী রেজা তিথির সঙ্গে। তিনি তনিমার সঙ্গে রাকিবুলের বিয়ের তথ্য অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘সম্পর্ক হয়েছে সত্য। তবে বিয়েটা সত্য নয়। ভুল করেছে। এজন্য রাকিব ও আমরা মেয়েটির কাছে ক্ষমা চেয়েছি। রাকিবের চেয়ে বয়সে বড় সে। আমরা পরিবার থেকে বিয়ে দিয়েছি। সে রাকিবের বিরুদ্ধে জামালপুর আদালতে যৌতুকের মামলা করেছে।’ অফিসে ফোন করে হুমকি দেওয়া প্রসঙ্গে কিছু জানেন না বলেও দাবি করেন রাকিবুলের ভাবি।

রাকিবুলের বিভিন্ন ‍হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিথি বলেন, ‘ও (তনিমা) একটা খারাপ মেয়ে। সম্পর্ক চলাকালীন যা হয়েছে, দু’জনের সম্মতিতেই হয়েছে। মনে হয় না কোনো কিছু ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে রাকিব।’

থানায় অভিযোগের বিষয়ে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, মেয়েটি একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। তার ব্যাংকে আপত্তিকর ভাষায় কমপ্লেইন করেছে ছেলেটি— এমন অভিযোগ নিয়ে একদিন এসেছিলেন মেয়েটি। আমি বুঝিয়ে পাঠিয়েছি। এরপর আবার তাকে নাকি ফোনে হুমকি দিয়েছে এবং আজেবাজে কথা বলছেন। সে জন্য ১৭ আগস্ট তিনি জিডি করে গেছেন। জিডির বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইন্টার্ন চিকিৎসক থানায় জিডি দ্বিতীয় বিয়ে নারী ব্যাংকার প্রতারণা প্রেম করে বিয়ে হুমকি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর