ডা. সাবরিনা-আরিফসহ ৮ জনের বিচার শুরু
২০ আগস্ট ২০২০ ১৬:৩৯ | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২০ ২১:৫৪
ঢাকা: করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার নামে প্রতারণা ও জাল সনদ দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের ‘চেয়ারম্যান’ ডা. সবিরিনা এবং ওভাল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও জেকেজি’র সিইও আরিফুল চৌধুরীসহ আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচারকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে মামলার শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাফুজ্জামান আনছারী এই আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
অভিযোগ গঠনের সময় বিচারক আট আসামির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার অভিযোগ পড়ে শোনান। এরপর বিচারক তাদের জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনারা দোষী না নির্দোষ?’ জবাবে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন।
এদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবীরা ডিসচার্জ (অব্যহতি) চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ ডিসচার্জের বিরোধিতা করে।
জেকেজি নিয়ে সারাবাংলার অনুসন্ধান-
- সরকারি চাকরি করেওবেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান!
- চিকিৎসকদের পিপিই নেই, জেকেজির জন্য ‘আনলিমিটেড’
- সরকারি খরচে বেসরকারি ‘প্রতারণা’ জেকেজি হেলথকেয়ারের
- করোনা নমুনা পরীক্ষা নিয়ে জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রতারণার জাল
- অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ধমক দিয়ে কাজ করাত জেকেজি হেলথকেয়ার
তদন্ত শেষ করে গত ৫ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সংশ্লিষ্ট জিআর শাখায় গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী এই মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় ডা. সাবরিনা ও আরিফুল ছাড়া বাকি ছয় আসামি হলেন— সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী তানজীনা পাটোয়ারী, নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসেন্সের স্বত্বাধিকারী জেবুন্নেছা রিমা, বিপ্লব দাস ও মামুনুর রশীদ।
চার্জশিটে জেকেজি হেলথ কেয়ারের কম্পিউটার থেকে এক হাজার ৯৮৫টি ভুয়া রিপোর্ট ও ৩৪টি ভুয়া সার্টিফিকেট জব্দের কথা বলা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের ভুয়া রিপোর্ট প্রদান ও জালিয়াতির অভিযোগে গত ২৩ জুন জেকেজির সিইও আরিফসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। ওই ঘটনায় তেজগাঁও থানায় প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করে।
মামলার তদন্ত চলাকালে জেকেজির ‘চেয়ারম্যান’ ডা. সাবরিনাকে গত ১২ জুলাই তেজগাঁও থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ওই প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত কয়েক দফা রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। রিমান্ড শেষে ডা. সাবরিনা ও আরিফুলসহ আসামি সবাইকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন আদালত।
কার্ডিয়াক সার্জন ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেও নীতিমালা ভেঙে বেসরকারি জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করতেন তিনি। পরে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
জেকেজি হেলথকেয়ার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমতি নিয়ে নমুনা সংগ্রহ শুরু করে রাজধানীতে। বেশকিছু নমুনা সংগ্রহ বুথও স্থাপন করে তারা। তবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হলেও নমুনাদাতাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি না থাকলেও তারা সেটিও করে। নমুনা পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগও ছিল জেকেজি’র বিরুদ্ধে। সারাবাংলা ডটনেটের অনুসন্ধানে জেকেজি হেলথকেয়ারের এসব অনিয়ম-প্রতারণা উঠে আসে। ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়।
আরিফুল ইসলাম করোনা পরীক্ষা করোনা প্রতারণা করোনাভাইরাস জালিয়াতি জেকেজি হেলথকেয়ার টপ নিউজ ডা. সাবরিনা ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ভুয়া রিপোর্ট