পিইসি ও ইবতেদায়ি সমাপনী বাতিলের প্রস্তাব
১৯ আগস্ট ২০২০ ১৮:২০ | আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০২০ ২১:৫১
ঢাকা: চলতি বছরে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাব দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে এ বছর বৃত্তি পরীক্ষাও আয়োজন না করার কথা বলা হয়েছে। তবে বিদ্যালয়গুলো যেন নিজ নিজ শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ব্যবস্থা করে, সে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন। বুধবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, কোনো ধরনের সমাপনী পরীক্ষা আয়োজন না করেই বিদ্যালয়গুলোকে বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী মূল্যায়নের একটি সারসংক্ষেপ আজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি অনুমোদন দিলে মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত্র আদেশ জারি করবে।
সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন জানান, মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা— এবার প্রাথমিকে পিইসি বা ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলোতেও সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হবে না। একইসঙ্গে বৃত্তি পরীক্ষাও নেওয়া হবে না।
সমাপনী পরীক্ষা না নেওয়ার কারণ তুলে ধরে সচিব বলেন, এখন পর্যন্ত সিলেবাসের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এই অবস্থায় যে সময় রয়েছে, বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হলেও সেই সময়ে সিলেবাস সম্পন্ন করে পিইসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। নিজ নিজ স্কুল পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে উঠানোর জন্য মূল্যায়ন করবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেসব প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে, তার সপক্ষে কারণ তুলে ধরে বলা হয়েছে, চলতি বছর ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ১৩১ কর্ম দিবস নির্ধারণ করা হলোও করোনা পরিস্থিতির কারণে এ পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ দিনে বিষয়ভিত্তিক পাঠদান দেওয়া হয়েছে। ১৮ মার্চ থেকে বিদ্যালয় বন্ধ আছে, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা বিদ্যালয় বন্ধ রাখার আদেশ রয়েছে। এই সময়ে মোট ৭১ কার্যদিবস বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকবে। ঘরে বসে শিখি শিরোনামে সংসদ টেলিভিশনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকলেও পঞ্চম শ্রেণির ৪০৬টি স্বাভাবিক পাঠদান সম্ভব হবে না। আবার অনেক শিক্ষার্থীর বাসায় টেলিভিশন না থাকায় তাদের এই বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থার আওতাতেও আনা যায়নি। ফলে এ বছর আর পাঠদান শেষ করা সম্ভব হবে না।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেণির প্রায় ৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী টেলিভিশন শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে। সে বিবেচনায় ১২ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ বেতারে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এতে ৯৭ শতাংশ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মোবাইল ও রেডিও’র মাধ্যমে সুবিধা নিতে পারছে। এর বাইরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষকেরা যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। আর জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি পাঠ ও বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা সমাপনী নিতে হলে কমপক্ষে আর ৫০টি ক্লাস নিতে হবে। সেপ্টেম্বরে স্কুলগুলো খুলে দেওয়া না হলে বাকি সময়ের মধ্যে দুই স্তরের বাকি ক্লাস কোনোভাবেই শেষ করা যাবে না। তাই ২০২০ সালে এই দুই স্তরের পরীক্ষা বাদ দিয়ে ক্লাস মূল্যায়নের মাধ্যমে পাস করিয়ে সার্টিফিকেট দেওয়ার প্রস্তাব করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ইবতেদায়ি সমাপনী টপ নিউজ পিইসি প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী বৃত্তি পরীক্ষা সমাপনী বন্ধ রাখার প্রস্তাব