Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘রফিক হারিরি হত্যায় হিজবুল্লাহ বা সিরিয়া জড়িত নয়’


১৯ আগস্ট ২০২০ ০১:৫৮ | আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০২০ ১০:৩৩

লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক আল হারিরি হত্যাকাণ্ডে দেশটির শিয়া মতাবলম্বী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নেতৃবৃন্দ বা প্রতিবেশী সিরিয়ার সরকার যুক্ত থাকার কোনো প্রমাণ মেলেনি। খবর রয়টার্স।

মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) নেদারল্যান্ডের দ্য হেগ এ জাতিসংঘ সমর্থিত স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ফর লেবানন’র (এসটিএল) বিচারক ডেভিড রে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।

এদিকে, ২৬০০ পৃষ্ঠার রায় পড়ে শোনানোর সময় বিচারক ডেভিড রে বলেন, সিরিয়া ও হিজবুল্লাহর হয়তো হারিরি ও তার রাজনৈতিক মিত্রদের নির্মূল করার উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু, হারিরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে হিজবুল্লাহ নেতৃবৃন্দ বা সিরিয়ার জড়িত বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

রয়টার্স জানাচ্ছে, রায় ঘোষণার সময় রফিক হারিরির ছেলে এবং পরবর্তীতে তিন দফা লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। কিছুদিন আগে তিনি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তিনি প্রতিশোধ চান না, তবে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।

এর ১৫ বছর আগে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতের সমুদ্রতীরবর্তী সড়কে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর লক্ষ্য করে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ওই বিস্ফোরণে রফিক হারিরিসহ আরও ২১ জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন ২২০ জনেরও বেশি মানুষ।

সে সময় রফিক হারিরি হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে লেবাননে রাজনৈতিক মেরুকরণ ঘটে। গণবিক্ষোভের মুখে লেবাননে মোতায়েনকৃত সেনা প্রত্যাহার করে নেয় সিরিয়া।

এরপরই, হারিরিসহ আরও ২১ জনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হিজবুল্লার চার সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়। অভিযুক্ত চার হিজবুল্লাহ সদস্যের অনুপস্থিতিতেই গাড়ি বোমা হামলার তদন্ত ও বিচার হয়েছে। এই বিচার প্রক্রিয়ায় প্রায় ১০০ কোটি ডলার খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, শুরু থেকেই হিজবুল্লাহ হারিরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। বরং ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র ষড়যন্ত্রে হারিরি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে দাবি করছে সংগঠনটি।

এ ব্যাপারে হিজবুল্লাহ’র প্রধান সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ শুক্রবার (১৭ আগস্ট) রয়টার্সকে বলেছিলেন, ট্রাইব্যুনালে যদি হিজবুল্লাহর কোনো সদস্য দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে সংগঠন তাদের পাশে দাঁড়াবে।

প্রসঙ্গত, সুন্নি মুসলিম ধনকুবের রফিক হারিরির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা দেশগুলো এবং উপসাগরীয় সুন্নি আরব দেশগুলোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাকে লেবাননে ইরান ও সিরিয়ার প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে হুমকি বলে বিবেচনা করা হতো। ১৯৭৫-১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলা গৃহযুদ্ধের পর তার নেতৃত্বেই বৈরুতের পুনর্গঠন শুরু হয়। ২০০৫ সালের রফিক হারিরি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা লেবাননকে গৃহযুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে বড় সংকটে ঠেলে দিয়েছিল। তার মৃত্যুর পর থেকে লেবাননের ক্ষমতা কাঠামোতে শিয়া প্রভাব বাড়তে শুরু করে।

এমন এক সময়ে রফিক হারিরির হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো যখন চলতি মাসে বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১৭৮ জনের মৃত্যুর শোক লেবানিজরা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

দ্য হেগ বৈরুত রফিক হারিরি হত্যাকাণ্ড লেবানন সাদ হারিরি সিরিয়া হিজবুল্লাহ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর