ভারতের সঙ্গে দূষিত রক্তের সম্পর্ক থেকে মুক্তি দরকার: জাফরুল্লাহ
৯ আগস্ট ২০২০ ২১:৩০ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২০ ০০:১৫
ঢাকা: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘রক্তের সম্পর্ক’ বলে অভিহিত করলেও এর প্রতিক্রিয়ায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এই সম্পর্কে ‘দূষিত রক্তে’র সম্পর্ক বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো কোনো মন্ত্রী বলছেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক। কিন্তু এ রক্ত তো দূষিত রক্ত। দূষিত রক্ত দিয়ে কী হবে? পরিচ্ছন্ন রক্ত দরকার। দূষিত রক্ত থেকে আমাদের মুক্তি দরকার।’
আরও পড়ুন- আমাদের উন্নয়ন ভারতের উন্নয়ন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোববার (৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘খরাকালে পোড়াও, বর্ষাকালে ভাসাও— বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারতের এই নীতি’ প্রয়োগের প্রতিবাদে এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
সীমান্তে হত্যার নিন্দা জানিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘ভারত প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশিদের মারলেও এ নিয়ে আমাদের আওয়াজ নেই। অথচ নেপাল সরকার সংসদে ভারতের বিরুদ্ধে আইন করছে।’ ভারতের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে বাংলাদেশের মুক্তি নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের নিহত হওয়ার ঘটনা বিষয়ে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘এটা কি ওসি প্রদীপের ঘটনা, নাকি এর সঙ্গে ভারতীরা যুক্ত আছে— সেটা পরীক্ষা করা দরকার। এজন্য পুলিশি তদন্ত দিয়ে হবে না। একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করতে হবে। ১০ শতাংশ পুলিশ আছে, যারা প্রদীপের মতো, বাকিরা সজ্জন। এ ঘটনায় যদি কমিশন গঠন না হয়, সেটা হবে দুর্ভাগ্যজনক।’
ভারতের সমালোচনা করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘কাল্পনিক কাহিনিকে ভিত্তি করে ভারত রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছে। তাদের গল্পকাহিনির ওপর ভিত্তি করেই ৫০০ বছরের পুরোনা বাবরি মসজিদ ভেঙে সেখানে রাম মন্দির নির্মাণ করেছে ভারত। এটা ভারত জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমরা বাংলাদেশের মানুষ এর বিরুদ্ধে একটা কথাও বলিনি। আবার হাইকোর্টের রায় ছিলে, মন্দির যেমন হবে তার চেয়েও বড় করে অযোধ্যায় মসজিদ করতে হবে। মন্দির তৈরি হলেও মসজিদ তৈরির কোনো আলামত নেই— এটাই হচ্ছে ভারত।’
প্রবীণ এ চিকিৎসক বলেন, ‘১৯৭১ সালে রমনার কালি মন্দির পাকিস্তানিরা ভেঙে দিয়েছিল। শেখ সাহেব (জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) এটাকে ঢাকার বাইরে নিয়ে বড় আকারে তৈরি করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সংখ্যালঘুদের আপত্তিতে তা সরানো হয়নি। এটা ঢাকার নওয়াবদের দান করা জায়গা। মুসলমানদের এ সহনশীলতা থেকে ভারতের কিছুটা হলেও শেখা উচিত। কিন্তু তারা শিখবে না, তাদের শেখাতে হবে। শেখাতে হলে আজকে আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য— আজকে আমাদের সব রাজনৈতিক দল শুধু সমবেত হওয়ার কথা বলে, কিন্তু প্রতিবাদ করে না। আমাদের উচিত ছিল যেদিন রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা হলো, সেদিন ভারতীয় হাইকমিশন ঘোরাও করা। ফেলানি নামে রাস্তা করার কথা ছিল, সেটাও আমরা করিনি। এই হচ্ছে আমাদের ব্যর্থতা।
পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর, সাপ্তাহিক জয়যাত্রার নির্বাহী সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, বাসদ নেতা বজলুর রশিদ, মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম রিপনসহ অন্যরা। সমাবেশ পরিচালনা করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য আক্তার হোসেন।
টপ নিউজ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দূষিত রক্তের সম্পর্ক ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রক্তের সম্পর্ক