Sunday 12 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শেখ হাসিনাকে শিনজো অ্যাবের ফোন, ২৮০০ কোটি টাকা সহায়তা দেবে জাপান


৫ আগস্ট ২০২০ ১৮:৩৬ | আপডেট: ৬ আগস্ট ২০২০ ০১:১১

ফাইল ছবি

ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাসের অভিঘাত মোকাবিলায় বাংলাদেশকে প্রায় ২৮০০ কোটি টাকা (৩৫ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন) আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে।

দুই নেতা বুধবার (৫ আগস্ট) ফোনে কথা বলেন। ২৫ মিনিটের আলাপচারিতায় নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড ১৯) পরিস্থিতিসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে দুইজন ফোনে কথা বলেন।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে জানান, নভেল করোনাভাইরাসের অভিঘাত মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ৩৫ বিলিয়ন ইয়েন সহযোগিতা করতে চাই জাপান। দেশটির সংসদে এ সংক্রান্ত সহযোগিতা প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী জাপানের জনগণ ও শিনজো অ্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

সূত্র জানায়, দুই নেতা টেলিফোনে একে অপরের কুশলাদি বিনিময় করেন এবং দুই দেশের কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সম্পর্কে একে অপরকে অবহিত করেন। বাংলাদেশের সরকার করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে সব উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

একপর্যায়ে জাপান সরকার কর্তৃক বাংলাদেশকে কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধক ইকুইপমেন্টস- পিপিই, মাস্ক, গাউন, গগলস ইত্যাদি প্রদানের জন্য শিনজো অ্যাবে-কে শেখ হাসিনা ধন্যবাদ জানান।

মূল আলোচনায় দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়গুলো উঠে আসে। জাপান সরকারের অর্থায়নে চলমান প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি সম্পর্কে দুনেতা আলোচনা করেন। বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে আরও জাপানি বিনিয়োগের জন্য শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি চলমান রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে শিনজো অ্যাবে-কে অবহিত করেন এবং এ সংকট উত্তরণে জাপান সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

পরিশেষে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্থগিত হওয়া ‘২০২০ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক‘ ২০২১ সালে জাপানে যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

দুই দেশের মধ্যে চুক্তি ও বিনিময় নোটে স্বাক্ষর: জাপানের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে বুধবার (৬ আগস্ট) শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং ঢাকায় নিযুক্ত জাইকার চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ ইহো হাওয়াকাওয়া। এ সময় একটি বিনিময় নোটও স্বাক্ষরিত হয়।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো কোভিড-১৯ মহামারির নেতিবাচক সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব হ্রাস করা। যা অর্থনৈতিক উদ্দীপনা নীতিমালা বাস্তবায়ন করে সমাজক ল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণ ঘটানো। এর মাধ্যমে দুর্বল জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে। ফলে দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে অবদান রাখবে।

চুক্তি শেষে ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, ‘এ বাজেট সহায়তা কেভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। কোভিড-১৯ ক্রাইসিস রেসপন্স এমার্জেন্সী সাপোর্ট লোন হিসেবে এটি পাচ্ছে বাংলাদেশ। এই ঋণের সুদেও হার হচ্ছে শূন্য দশমিক ০১ শতাংশ। চার বছরের রেয়াতকালসহ ১৫ বছরে এই ঋণ পরিশোদ করতে হবে সরকারকে। কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন করবে অর্থ মন্ত্রণালয়।’

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত জাপান সরকার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন সেক্টরে উল্লেখযোগ্য সহায়তা প্রদান করেছে। দ্বি-পাক্ষিক পর্যায়ে জাপান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী দেশ। অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে জাপান সরকার অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা,স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, পল্লী উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন এবং মানব উন্নয়ন খাতের প্রকল্পে ঋণ ও বিভিন্ন প্রকার অনুদান সহায়তা দিয়ে আসছে।

বিজ্ঞাপন

দ্বি-পাক্ষিক সহায়তা প্রতিষ্ঠার শুরু শুরু থেকে গত জুন মাস পর্যন্ত জাপান ১৪ দশমিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে।

করোনা কোভিড-১৯ টপ নিউজ নভেল করোনাভাইরাস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর