Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, মিলছে না ত্রাণ


২৮ জুলাই ২০২০ ০৮:৪১ | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২০ ১৩:৫৯

জামালপুর: ভারি বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে যমুনা এবং পুরাতন ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য শাখা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এতে জামালপুরের ৭ উপজেলার প্রায় ৭০০ গ্রামের ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন।

এদিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত পানি থাকায় দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপরে বইছে। এছাড়া পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ঝিনাইসহ অন্যান্য শাখা নদীর পানিও বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে মানুষের ভোগান্তি বেড়েই চলছে।

এরইমধ্যে ১৩ হাজার হেক্টর বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ, গো চারণ ভূমি, বসতবাড়ি, স্কুল কলেজসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ১৭০০ কিলোমিটার সড়ক পানিতে তলিয়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে উঁচু সড়ক, ব্রিজে এবং আশ্রয় কেন্দ্রে। তবে বন্যাকবলিতদের অভিযোগ ত্রাণ না পাওয়ার।


ইসলামপুর পার্থশী ইউনিয়নের দর্জিপাড়া এলাকার বেলে বেগম জানান, বন্যায় পরিবারের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য ঘোরাঘুরি করেও ত্রাণ সহায়তা পাননি। আমতলী বাজারের মুদি দোকানী শামিম আকন্দও একই অভিযোগ করেছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সাইদ জানান, তৃতীয় বারের মতো আবারও পানি বেড়েছে। জুলাই মাসে পানি কমার কোন সম্ভাবনা আপাতত নেই। পানি বৃদ্ধির কারণে নিম্নাঞ্চলসহ বেশ কিছু নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, বন্যা মোকাবিলায় প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। পাশাপাশি ত্রাণের কোনো কমতি নেই। এখন ২০০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও গো-খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা মজুদ রয়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন বন্যার্তদের মাঝে ৪ হাজার পিস রুটি তৈরি করে বিতরণ করা হচ্ছে। যেহেতু চারিদিকে পানি আর দুর্গম এলাকা থাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগছে।


জেলার ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী জানান, জেলায় ৬০টি ইউনিয়নে ৬৭৭টি গ্রামের ২ লাখ ৭০ হাজার পরিবারের প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানির তোড়ে ১৪ হাজার ৫০০ বসতবাড়ি অংশিক ও পুরোপুরি ভেঙে গেছে। দুর্গতদের জন্য এখন পর্যন্ত ত্রাণ বরাদ্দ হয়েছে ৮৮৪ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২৯ লাখ টাকা, শিশুখাদ্য ২ লাখ ও গো-খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা। এছাড়াও প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রে উপস্থিত সবার মাঝে শুকনো খাবার ও খিচুড়ি বিতরণ করা হচ্ছে।

জামালপুরে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী অধিদফতরের (এলজিইডি) সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. সায়েদুজ্জামান সাদেক জানান, ভয়াবহ বন্যার কারণে বিভাগের প্রায় ১৭০০ কিলোমিটার সড়ক পানিতে তলিয়ে আছে। কয়েকটি ছোট বড় ব্রিজ আংশিক ও পুরোপুরি ক্ষতি হয়েছে। পানির প্রচণ্ড তোড়ের কারণে জেলার অধিকাংশ সড়কে তলিয়ে গেছে। তবে পানি কমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

অবনতি জামালপুর টপ নিউজ পানিবন্দি ভারি বর্ষণ যমুনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর