এনু-রুপনের নাম থাকলেও চার্জশিটে নেই মোল্লা কাওসার ও সাঈদ
২৩ জুলাই ২০২০ ২২:৩৯ | আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০৯:৫৪
ঢাকা: ক্যাসিনো খেলে অবৈধ অর্থ উপার্জন করে তা পাচারের উদ্দেশ্যে গোপন রাখার অভিযোগে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত দুই ভাই এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এমনকি চার্জশিটে যে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো খেলা হতো সেই ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জয় গোপালের নামও এসেছে। তবে ক্লাবের সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা আবু কাওসার এবং সাবেক যুবলীগ নেতা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদের নাম চার্জশিটে আসেনি।
সিআইডির দাবি, তদন্তে সবার নাম এলেও মোল্লা আবু কাওসার ও মমিনুল হোক সাইদের সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়নি। যদিও চার্জশিটে ক্যাসিনো খেলার স্থান ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ভেতরকেই দেখানো হয়েছে।
বুধবার (২২ জুলাই) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তিনটি মামলার চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির দুই তদন্ত কর্মকর্তা। গত মঙ্গলবার (২১ জুলাই) একটি মামলার চার্জশিট জমা দেওয়া হয় আদালতে। র্যাবের দায়ের করা যে মামলাগুলোর চার্জশিট দেওয়া হয় সেগুলো হলো ওয়ারী থানার মামলা নম্বর ৩৪, সূত্রাপুর থানার মামলা নম্বর ২৯, গেন্ডারিয়া থানার মামলা নম্বর ২৮ এবং সূত্রাপুর থানার মামলা নম্বর ২৭।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিআইডির ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘র্যাবের দায়ের করা চারটি অর্থপাচার মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। চারটি মামলায় বেশিরভাগই কমন আসামি। চার মামলায় ৫১ আসামি হলেও তারা মানুষ ১৮ জন। এ ১৮ জনের নামই চার্জশিটে রয়েছে।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ডারার্স ক্লাবের তৎকালীন সভাপতি ও সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা আবু কাওসার এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর মমিনুল হোক সাঈদের নাম তদন্তে উঠে না আসায় চার্জশিটে তাদের নাম আসেনি।
যদিও ক্যাসিনোকাণ্ডের অভিযানের পর মোল্লা আবু কাওসার ও মমিনুল হক সাঈদকে জনসম্মুখে দেখা যায়নি । অভিযোগ রয়েছে, তারা দুজনই দেশের বাইরে রয়েছেন। বিতর্ক শুরু হওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদ থেকে মোল্লা আবু কাওসারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
যুবলীগের চেয়ারম্যানর পদ থেকে ওমর ফারুক চৌধুরীকে সরিয়ে দেওয়ার পর পদ হারান স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাউসার।
মোল্লা আবু কাউসার ঢাকার ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সভাপতি ছিলেন।
ওই ক্লাবটিতে অভিযান চালিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিপুল পরিমাণ ক্যাসিনো সামগ্রী উদ্ধার করেছিল। মূলত এরপর থেকেই আর সাংগঠনিক কার্যক্রমে দেখা যাচ্ছিল না তাকে।
ওই মোল্লা আবু কাউসার ও তার পরিবার সদস্যদের এবং তাদের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
২০১৫ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর ওয়ার্ন্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসা শুরু করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অপসারিত কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদ। ওই সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাউসার মমিনুল হক সাঈদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন বলে গণমাধ্যমে খবর আসে।
আরও পড়ুন
শেখ মারুফ ও মোল্লা আবু কাওসারসহ ২০ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
দেশ ছেড়ে ‘পালিয়েছেন’ ৩০০ নেতাকর্মী
খালেদের ক্যাসিনোতে প্রতি রাতে লেনদেন হতো কোটি টাকা!
ক্যাসিনো সাঈদের বিরুদ্ধে ত্রিমুখী অনুসন্ধান
ক্যাসিনোকাণ্ড: করোনায় স্থবির অনুসন্ধান ও তদন্ত
ক্যাসিনোকাণ্ড: এনু-রুপন গ্রেফতার, পালাতে চেয়েছিলেন দেশ ছেড়ে
ক্যাসিনো কাণ্ডে ৩ জনকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ
ক্যাসিনোয় জড়িত ২ এমপিসহ ২২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
কাউন্সিলর সাঈদ বরখাস্ত
ক্যাসিনোকাণ্ড: ৪৩ জনের বিপুল সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক