খুলছে না নিয়মিত আদালত, আগামী সপ্তাহ থেকে ভার্চুয়াল দ্বৈত বেঞ্চ
৮ জুলাই ২০২০ ২০:২৯ | আপডেট: ৮ জুলাই ২০২০ ২৩:৩৬
ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের চলমান পরিস্থিতিতে নিয়মিত আদালত চালুর বিষয়ে একমত হতে পারেননি বিচারপতিরা। তবে আগামী সপ্তাহ থেকেই ভার্চুয়াল কোর্টে ডিভিশন হাইকোর্ট বেঞ্চ বা দ্বৈত বেঞ্চ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
বুধবার (৮ জুলাই) বিকেলে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ফুলকোর্ট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিকেলে ৪টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত চলে দীর্ঘ এই সভা।
সুপ্রিম কোর্ট সূত্র বলছে, আগামী সপ্তাহ থেকে সব বিচারপতির জন্য ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ চালুর বিষয়ে একমত হয়েছেন ফুলকোর্ট সভায় অংশ নেওয়া সবাই। সেক্ষেতে সব বিচারপতিকে পর্যায়ক্রমে বেঞ্চ দেওয়া হবে। তবে নিয়মিত আদালত চালুর বিষয়ে একমত হতে পারেননি বিচারপতিরা।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতিকে নিয়ে এই ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানায়, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এ ফুলকোর্ট সভায় অধিকাংশ বিচারপতি করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই পরিস্থিতিতে নিয়মিত আদালত চালু করার বিপক্ষে মত দিয়েছেন। বিচারপতিরা বলেন, আপাতত ভার্চুয়াল আদালত অব্যাহত রাখা যেতে পারে। প্রয়োজেন হাইকোর্ট বিভাগে দ্বৈত বেঞ্চ চালু করা যেতে পারে। পরে অধিকাংশ বিচারপতির মতামতের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি সিদ্ধান্ত নেন, পর্যায়ক্রমে সব বিচারপতিকে কোর্ট পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া লজিস্টিক সাপোর্ট সাপেক্ষে হাইকোর্টে আরও বেঞ্চ বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। দেশের সব আদালতও বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। পরে সরকার দফায় দফায় সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ালে আদালত বন্ধ থাকার মেয়াদও বাড়তে থাকে। এ পরিস্থিতিতে বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ বিবেচনা করে জরুরি বিষয় শুনানিতে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আদালতের কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করতে গত ৯ মে ‘আদালতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ জারি করেন রাষ্ট্রপতি। এরপর ১০ মে ভার্চুয়াল কোর্ট সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। ১১ মে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল কোর্টে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
১১ মে থেকে গত ২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে অধস্তন আদালতে ৯৫ হাজার ৫২৩টি জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে ৪৯ হাজার ৭৬২ জনকে জামিন দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে শিশু আদালত থেকে জামিন পেয়েছে ৬০৮ শিশু।
এদিকে, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে শুরু হয় হাইকোর্টের কার্যক্রমও। তবে হাইকোর্টে কেবল জামিন ও রিট শুনানি চলছে। সেক্ষেত্রে একক বিচারপতির বেঞ্চ আগাম জামিন দিতে পারছেন না এবং রিটের ক্ষেত্রে আদেশ দিলেও রুল জারি করতে পারছেন না। আগাম জামিন বা রুল শুনানির জন্য দ্বৈত বেঞ্চের প্রয়োজন হয়। বিচারপ্রার্থীদের সুবিধার্থে আগামী সপ্তাহ থেকে ভার্চুয়াল কোর্টেও বসতে যাচ্ছে দ্বৈত বেঞ্চ।