ভাতিজাকে খুনের পর পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চাচার মৃত্যু
৮ জুলাই ২০২০ ১০:২৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ভাইয়ের ছেলেকে খুনের আট ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আহত হয়ে চাচার মৃত্যু হয়েছে। এর আগে পারিবারিক কলহের জেরে ভাইয়ের শিশু সন্তানকে জবাই করে নৃশংসভাবে তার চাচা খুন করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নগরীর ডবলমুরিং থানার হাজীপাড়া এলাকায় জনৈক মো. রাশেদের ছেলে মেহেরাবকে (৩) খুন করে তার চাচা জসিম উদ্দিন রাজু। এরপর দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে একই থানার ঝর্ণাপাড়া এলাকায় হত্যাকারী জসিম ও তার সহযোগীদের সঙ্গে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে বলে দাবি করেন ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ। ওই বন্দুকযুদ্ধে জসিম আহত হলে পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত মো. জসিম উদ্দিন রাজু (৩২) নগরীর হাজীপাড়া এলাকার মৃত মনির আহমেদের ছেলে।
ওসি সদীপ সারাবাংলাকে জানান, মেহেরাবের মা নিলু আক্তারের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে তার ছেলে মেহেরাবকে গলা কেটে খুন করে ভাসুর জসিম উদ্দিন রাজু। এই ঘটনায় নিলু আক্তার বাদি হয়ে ডবলমুরিং থানায় মামলা দায়ের করেন। রাতে জসিমকে গ্রেফতারে অভিযানে নামে পুলিশ।
ওসির দাবি, গভীর রাত সাড়ে তিনটার দিকে নগরীর পশ্চিম ঝর্ণাপাড়া জোড় ঢেবারপাড় এলাকায় জসিম ও তার সহযোগীদের উপস্থিতির কথা জানতে পেরে অভিযানে যায় পুলিশ। এ সময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় জসিমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয় পুলিশ। সেখানে বুধবার ভোর ৫টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ওসি আরও দাবি করেছেন, উভয়পক্ষে গোলাগুলিতে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) এএএম হুমায়ুন কবির, ওসি সদীপ কুমার দাশ নিজে, পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জহির হোসেন এবং দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) অর্ণব বড়ুয়া ও মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন আহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে দেশে তৈরি একটি এলজি, পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ, খুনে ব্যবহৃত একটি বিদেশি ছোরা এবং ৮৭৫ পিস ইয়াবা উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জহির হোসেন সারাবাংলাকে জানান, নিহত জসিম একজন পেশাদার ছিনতাইকারী ও মাদক বিক্রেতা। তার বিরুদ্ধে পুলিশ সদস্য খুন-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৩টি মামলা আছে। ২০১৪ সালের ১৩ জানুয়ারি জসিম ও তার সহযোগীরা মিলে নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় সিএমপির পুলিশ সদস্য নায়েক ফরিদউদ্দিনকে ছুরিকাঘাতে খুন করে। ২০১৮ সালের ১৪ মে নগরীর হাজীপাড়া এলাকার খোরশেদ হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। জামিনে বেরিয়ে জসিম আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।