একমাসেও কার্যকর হয়নি ‘মাইকোর্ট’, প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন
৮ জুলাই ২০২০ ০০:৪৩ | আপডেট: ৮ জুলাই ২০২০ ১১:৪১
ঢাকা: ‘মাইকোর্ট’ ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে ভার্চুয়াল কোর্টে মামলা দায়ের করতে প্রায় একমাস আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল হাইকোর্ট প্রশাসন। আইনজীবীরা বলছেন, এই পোর্টালের মাধ্যমে ভার্চুয়াল আদালতের কার্যক্রম স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে পরিচালিত হতে পারে। তবে বিজ্ঞপ্তি জারির পর একমাসেও এটি কার্যকর হয়নি। এ অবস্থায় ‘মাইকোর্ট’ পোর্টালটি অবিলম্বে কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন তারা। এর মধ্যে এক আইনজীবী প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদনও করেছেন।
একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘মাইকোর্ট’ ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে মামলার ফাইলিং করা হলে তাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব। এই পোর্টালকে তারা ‘সুন্দর সিস্টেম’ বলে অভিহিত করছেন। তারা বলছেন, এখানে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। অনলাইনে মামলা করার সঙ্গে সঙ্গে ট্র্যাকিং নম্বর পাওয়া যায়। ট্র্যাকিং নম্বর অনুযায়ী মামলাগুলো যথানিয়মে কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। অথচ এই সিস্টেমটি কার্যকর না করে ইমেইলের মাধ্যমে মামলা নেওয়া হচ্ছে। এতে করে মামলা কার্যতালিকায় তোলা নিয়ে দুর্নীতি করার সুযোগ রয়েছে বলেও মনে করেন আইনজীবীরা।
‘মাইকোর্ট’ কার্যকর নয় অভিযোগ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিকদার মাহমুদুর রাজী সারাবাংলাকে বলেন, অনেকবার চেষ্টা করেও ‘মাইকোর্ট’ ব্যবহার করে মামলার ফাইল করতে পারিনি। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্রকে জানানো হলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। তবে সে আশ্বাসে কোনো কাজ হয়নি। বরং তিনি ইমেইলের মাধ্যমে মামলা ফাইলিংয়ের পরামর্শ দেন।
‘মাইকোর্টের মাধ্যমে যদি মামলার ফাইল করা না যায়, তাহলে এত টাকা খরচ করে এই ওয়েব পোর্টাল তৈরি করার দরকার কী ছিল?’— প্রশ্ন রাখেন এই আইনজীবী।
এদিকে, ‘মাইকোর্ট’ কার্যকর চেয়ে মঙ্গলবার (৭ জুলাই) প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি আবেদনে বলেন, গত ৯ জুন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ‘মাইকোর্ট‘ (mycourt) ওয়েব পোর্টালের ব্যবহার করার কথা বলা হয়। বিজ্ঞপ্তির আলোকে এই ওয়েব পোর্টালে অ্যাকাউন্ট তৈরি করি। ‘মাইকোর্ট’ পোর্টালে মামলা ব্যবস্থাপনা ছিল ব্যবহার উপযোগী ও জবাবদিহিতামূলক। মামলা দায়েরের পর তাৎক্ষণিক ট্র্যাকিং নম্বর ও ভিসি নম্বর পাওয়া যেত। পরে এই ট্র্যাকিং নম্বর অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আদালতের কার্যতালিকায় মামলাটি প্রদর্শিত হওয়ার ব্যবস্থা ছিল। আমরা নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থেকে ট্র্যাকিং নম্বর ব্যবহার করে মামলার গতিবিধি নির্ণয় করতে পারতাম।
তবে ‘মাইকোর্ট’ পোর্টালের মাধ্যমে মামলা করে ট্র্যাকিং নম্বর পেলেও এক সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পরও পোর্টালে দায়ের করা কোনো মামলা আদালতের কার্যতালিকায় আসেনি বলে অভিযোগ করেন আইনজীবী শিশির। তিনি বলেন, এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমানের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে মামলাগুলোর বিস্তারিত তথ্য গত ২১ জুন তাকে পাঠাই। কিন্তু এখন পর্যন্ত ‘মাইকোর্ট’ পোর্টালে কোনো কার্যকারিতা দেখা যায়নি। এ পরিস্থিতিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ‘মাইকোর্ট’ জুডিশিয়াল পোর্টাল কার্যকর করার আবেদন করেন তিনি।
তবে ‘মাইকোর্ট’ কার্যকর না হওয়া নিয়ে আইনজীবীদের অভিযোগ অস্বীকার করেন সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান। জানতে চাইলে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগ সত্য নয়। যেদিন থেকে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে, সেদিন থেকেই এটি কার্যকর।’
টপ নিউজ প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন ভার্চুয়াল আদালত মাইকোর্ট মাইকোর্ট কার্যকর না থাকার অভিযোগ মাইকোর্ট কার্যকরের দাবি