নির্যাতনের শিকার ইমরানের ডোপ টেস্ট রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ
২৮ জুন ২০২০ ১৫:৪১
ঢাকা: যশোর সদর উপজেলার সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির উপরিদর্শক মুন্সী আনিচুর রহমানসহ তিন পুলিশ ‘নির্যাতনের শিকার’ কলেজছাত্র ইমরানের ডোপ টেস্ট করে তার রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৫ জুলাই ডোপ টেস্টের রিপোর্ট দিতে যশোর সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৮ জুন) বিচারপতি বিচারপতি জেবিএম হাসানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে, গত ২৩ জুন ইমরানের শারীরিক অবস্থা জানাতে সিভিল সার্জনকে এবং এই ঘটনায় গঠিত পুলিশের তদন্ত শেষ হয়েছে কিনা, তা জানাতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
আদালতের নির্দেশ মোতাবেক আজ ওইসব রিপোর্ট দাখিল করা হয়। পরে আদালত ডোপ টেস্টের রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সোমেরন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সোমেরন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, আজ আদালতে দুটি রিপোর্ট দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়েছে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আর সিভিল সার্জনের দেওয়া শারীরিক রিপোর্ট দেখে আদালত ফের ডোপ টেস্ট করে রিপোর্ট দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশের নির্যাতনে কলেজছাত্র ইমরানের কিডনি নষ্টের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে গত ১৮ জুন রিট দায়ের করেন আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, যশোর পুলিশ সুপার, যশোরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের মহাপরিদর্শক, যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং যশোরের সিভিল সার্জনকে বিবাদী করা হয়।
রিট আবেদনে বলা হয় গত ৮ জুন যশোর জেলার সদর উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের নেছার আলীর ছেলে ইমরান হোসেনকে সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ অফিসার কর্তৃক নির্মম প্রহারের কারণে তার দুটি কিডনিই অকেজো হয়ে গেছে বলে পরদিন (৯ জুন) জুন বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। ইমরান বর্তমানে যশোরের কুইন্স হসপিটালে চিকিৎসাধীন আছে বলে জানা যায়। ইমরানকে নির্যাতনের ঘটনা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।
আবেদনে ইমরানের ওপর নির্মম প্রহারের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত, ইমরানের জন্য ক্ষতিপূরণ এবং তার যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয়ভার বিবাদীদের বহন করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল।
ইমরান ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, ঘটনার তিনি যশোরের চৌগাছা উপজেলার সলুয়া বাজার থেকে ইজিবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় তার সঙ্গে একই এলাকার অপর একটি ছেলে ছিল। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে সাজিয়ালী ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ইজিবাইকটি থামান। এরপর পুলিশ তার সঙ্গে থাকা ছেলেটির ব্যাগ তল্লাশি শুরু করেন। এ সময় ভয়ে তিনি মাঠের মধ্যে দৌড় দেন।
পুলিশ তাকে ধাওয়া করে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে গিয়ে ধরে বেদম মারপিট করে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।
জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখতে পান, তাকে পাশের আমবটতলা বাজারের একটি ফার্মেসিতে নেওয়া হয়েছে। পকেটে গাঁজা ঢুকিয়ে পুলিশ তাকে আটক করে বলে অভিযোগ ইমরানের।