করোনাভাইরাস: ‘সুরক্ষামূলক ব্যবস্থায় সবার শেষে বাংলাদেশ’
২৬ জুন ২০২০ ২৩:৪৫ | আপডেট: ২৬ জুন ২০২০ ২৩:৫৮
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণকালীন নাগরিকদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুরক্ষাদানের ক্ষেত্রে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৮ দেশের মধ্যে তলানীতে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত টাইমলাইনে আটটি সূচকে দেশগুলোর নেওয়া সুরক্ষামূলক ব্যবস্থার তুলনা করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি তৈরি হয়েছে এশিয়া–প্যাসিফিক ইকোনমিস্ট নেটওয়ার্ক এর তত্ত্বাবধায়নে।
প্রতিবেদনের আট সূচকগুলো হলো – সুলভ স্বাস্থ্যসেবার পরিসর, অসুস্থতাকালীন ছুটিতে পর্যাপ্ত ভাতা ও সুবিধার ব্যবস্থা, চাকরিচ্যুতির হার, বয়স্ক-বেঁচে ফেরা-প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনমান, নাগরিকদের আয়-সহায়তার ব্যবস্থা, পারিবারিক প্রয়োজনে ছুটি ও অন্যান্য সুবিধার নীতি, কর এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতের প্রদেয় মেটানোর ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা প্রদান।
প্রতিবেদনের অনুযায়ী, এই আট সূচকে সবচেয়ে বেশি পদক্ষেপ নিয়েছে ফিলিপাইন, ইরান ও থাইল্যান্ড। এরপর রয়েছে চীন, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া। তারপর অবস্থান করছে জাপান, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ভারত।
এছাড়াও শ্রীলংকা, নেপাল এবং পাকিস্তান সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে।
অন্যদিকে, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আট সূচকের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার শুধুমাত্র বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিয়েছে।
পাশাপাশি, প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিশ্বের তিন-চতুর্থাংশ শ্রমশক্তির জোগান দিচ্ছে। চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় রাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সামর্থ্য অপেক্ষাকৃত বেশি।
তবে বাংলাদেশ, নেপাল ও দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর মাথাপিছু আয় তুলনামূলকভাবে কম। কোভিড-১৯–এর স্বাস্থ্যগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলা করার সামর্থ্যও তাদের কম।
ইউএনডিপি জানিয়েছে, নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর ইতোমধ্যেই ভিয়েতনামে বিরাট সংখ্যক শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। একই কারণে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে তৈরি পোশাকের বেশির ভাগ কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে বলে তারা হুঁশিয়ার করেছে। তাতে বহু নারী শ্রমিক কাজ হারাবেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বেন অনানুষ্ঠানিক খাতের ভাসমান শ্রমিক ও উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠী। এছাড়াও, রাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিকেরা ন্যূনতম যে স্বাস্থ্যসুবিধা ও সামাজিক নিরাপত্তা পায়, তারা তা থেকে বঞ্চিত। প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের কথা উল্লেখ করেছে।