করোনা প্রতিরোধে দ্রুত টেস্ট ও আইসোলেশনের বিকল্প কিছু নেই: চীন
২১ জুন ২০২০ ২০:২২ | আপডেট: ২২ জুন ২০২০ ০০:৩৯
ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে দ্রুত পরীক্ষা ও শনাক্ত, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসাসেবা, বিশ্রাম এবং পুষ্টিকর খাদ্য নেওয়া ছাড়া বিকল্প কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে সফররত চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল। তারা বলেন, করোনা মোকাবিলায় সবগুলো এলাকাকে লাল, হলুদ ও সবুজ জোনে বিভক্ত করে কঠোরভাবে লকডাউন অনুসরণ প্রয়োজন। এছাড়া আইসোলেশন বা আক্রান্ত এলাকার মানুষদের আলাদাভাবে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধে বাংলাদেশ সফররত চীনের ১০ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পক্ষে জিয়াসুমিং এবং জিওহাতাঙ রোববার (২১ জুন) ঢাকায় কর্মরত কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সঙ্গে ভিডিও করফারেন্সে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। ভিডিও করফারেন্সে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সময় তারা করোনা মোকাবিলায় তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ উপরের মন্তব্য তুলে ধরেন। এই সময় ঢাকার চায়নিজ মিশনের ডেপুটি চিফ অব মিশন হুয়ালঙ ইয়ান উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশকে কারোনা চিকিৎসায় সহযোগিতা করার জন্য চীনের এই বিশেষজ্ঞ দলটি গত ৮ জুন ঢাকায় আসেন। এরই মধ্যে তারা ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের অবস্থা ঘুরে দেখেছেন এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছেন। সোমবার (২২ জুন) এই দলটির ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
ডেপুটি চিফ অব মিশন হুয়ালঙ ইয়ান বলেন, ‘চীন ও বাংলাদেশসহ অনেক দেশেই এই ভাইরাস হানা দিয়েছে। তবে করোনায় চীন ও বাংলাদেশ আক্রান্ত হওয়ার চিত্র পুরোটাই ভিন্ন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে কি না তা বলা খুবই কঠিন। এটা বিজ্ঞানীরা ভালো বলতে পারবে। তবে সংক্রমণ ঠেকাতে না পারলে প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। তাই সংক্রমণ ঠেকাতে সর্বোচ্চ মনোযোগী হতে হবে। এক্ষেত্রে চীন বাংলাদেশকে সবসময়েই প্রয়োজনীয় সহায়তা করে যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘চীন যখন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তখন কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর করা হয়, যা এই ভাইরাস মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত মোক্ষম অস্ত্র। এছাড়া আইসোলেশন কার্যকর করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সংক্রমিত এলাকার লোকজনদের আলাদাভাবে রাখতে না পারলে বা আইশোলেশন নিশ্চিত করতে না পারলে, এই ভাইরাস ঠেকানো কঠিন।’
চীনের চিকিৎসক জিয়াসুমিং বলেন, ‘এই ভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যকর্মীরা কঠোর পরিশ্রম করছে। কিন্তু এদের সঙ্গে সবাইকে মানে নাগরিকদেরও প্রয়োজনীয় নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলা উচিত। তা না হলে এই ভাইরাস ঠেকানো যাবে না। বাংলাদেশের বিভিন্ন সড়কে মানুষজন যেভাবে চলাচল ও মেলামেশা করে তাতে পরিবর্তন আনা জরুরি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা প্রয়োজন। মাস্ক-গ্লাভস-পিপিই এগুলোর সঠিক ব্যবহার চিশ্চিত করতে হবে। অনেককেই দেখা যায় দুইটি করে মাস্ক পড়তে। কিন্তু এতে তিনি নিরাপদ থাকার বদলে অন্য ঝুঁকিতে পড়ছেন। আবার গ্লাভস এবং পিপিই সবক্ষেত্রে পড়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু অনেকেই এগুলোর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করছে না। এগুলোর বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে।’
চিকিৎসক জিওহাতাঙ বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে প্রতিটি স্থানকে আগেই চিহ্নিত করে নিতে হবে যে। এবাবে ভাগ করে নিয়ে লাল, হলুদ ও সুবজ জোনে ভাগ করে সংক্রমণ প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। প্রতিটি জোনের জন্য আলাদা আলাদা নিয়ম রয়েছে। তাই জোন চিহ্নিত গুরুত্বপূর্ণ। আর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আক্রান্ত এলাকায় লডডাউন নিশ্চিত করা।’