Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামের ১২ বেসরকারি হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা চায় হাইকোর্ট


১৫ জুন ২০২০ ১৯:৪০ | আপডেট: ১৫ জুন ২০২০ ২০:৫০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর সুবিধাসম্বলিত ১২টি বেসরকারি হাসপাতালে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা সেবা চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। তারা চিকিৎসা দিচ্ছে কি না সেটা ২২ জুন প্রতিবেদন আকারে আদালতকে জানানোর জন্য জেলা সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারির পরও বেসরকারি হাসপাতালগুলো চিকিৎসা চালু না করায় প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে দায়ের করা একটি রিটের শুনানিতে এই নির্দেশনা এসেছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৫ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান এই আদেশ দিয়েছেন।

গত ১১ জুন আইনজীবী মো. সাইফুল ইসলাম ও মো. আজিজুল হক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিবাদি করে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ।

রিটকারীদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেওয়া আইনজীবী মোহাম্মদ বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত এবং উপসর্গ আছে অথবা আক্রান্ত নন এমন রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে বেহাল অবস্থার খবর প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। এমন অমানবিক অবস্থার প্রতিকার চেয়ে আমরা রিট দায়ের করি। রিটে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পরও ১২টি বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড- নন কোভিড রোগীদের চিকিৎসা না দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরি। ১১ জুন এবং আজ (সোমবার) দুইদফা রিটের ওপর শুনানি হয়েছে। আদালত আজ শুনানি শেষে ১২টি হাসপাতালকে দ্রুততার সাথে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশ তারা প্রতিপালন করছেন কি না সেটা ২২ জুন লিখিতভাবে জানানোর জন্য সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন।’

বিজ্ঞাপন

১২টি হাসপাতাল হচ্ছে- পার্কভিউ হাসপাতাল, মেডিকেল সেন্টার, ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল, সার্জিস্কোপ হাসপাতাল (ইউনিট-২), ডেল্টা হাসপাতাল, সিএসটিসি হাসপাতাল, সিএসসিআর, ন্যাশনাল হাসপাতাল, এশিয়ান হাসপাতাল, রয়েল হাসপাতাল, মেট্রোপলিটন হাসপাতাল এবং ম্যাক্স হসপিটাল।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেপুটি অ্যাটর্নি সমরেন্দ্র নাথ জানান, চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত আইসিইউ এবং অক্সিজেন সরবরাহের বিষয়ে একটি রিট আবেদন করা হয়েছিল। আমরা এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানিয়েছি। এছাড়া এপ্রিল মাসে করা ১২টি হাসপাতালের একটি তালিকা দাখিল করেছি, যারা প্রয়োজনে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেবে। পরে আদালত ওই হাসপাতাল গুলোতে করোনা রোগী ভর্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

গত ৪ এপ্রিল চট্টগ্রামে এক সভায় কোভিড-১৯ চিকিৎসায় চট্টগ্রামের ১২টি বেসরকারি হাসপাতালকে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটরসহ ব্যবহারের সুবিধাসহ ব্যবহারের জন্য নির্ধারণ করেছিল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গঠিত বিভাগীয় কমিটি। চার পর্যায়ে তিনটি করে হাসপাতাল ক্রমানুসারে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছিল ওই সভায়। কিন্তু দুইমাস পার হয়ে গেলেও চট্টগ্রামের এই বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা শুরু হয়নি। শুধুমাত্র ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে করোনা শনাক্তে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

গত ৩০ মে চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে চিকিৎসা সেবা মনিটরিংয়ের জন্য সার্ভেইল্যান্স টিম গঠন করা হয়, যার প্রধান করা হয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে। ৩ মে সার্ভেইল্যান্স টিম নগরীর ২০টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিককে চিঠি দিয়ে সেসব প্রতিষ্ঠানে দৈনিক কত রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তার তথ্য চায়। এতে হাসপাতালে শয্যা এবং আইসিইউ খালি থাকার পরও চিকিৎসা না দেওয়ার বিষয়টি উঠে আসে।

এ অবস্থায় অনিষ্পন্ন রিটটির আদেশে ১২টি বেসরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি চট্টগ্রামের সকল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও মেডিকেল কলেজগুলোতে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে কি না, এ পর্যন্ত কত সংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছে তা প্রতিবেদন আকারে জানানোর জন্য সিভিল সার্জনকে বলেছেন হাইকোর্ট।

কোভিড-১৯ চট্টগ্রাম চিকিৎসা সেবা টপ নিউজ বেসরকারি হাসপাতাল হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর