‘আশার বাতিঘর ও সংকটের সাহসী নেত্রীর ওপর আস্থা রাখুন’
১৫ জুন ২০২০ ১৯:০৬ | আপডেট: ১৫ জুন ২০২০ ১৯:১২
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সকলের প্রতি বলেছেন, আসুন, প্রবল মনের শক্তি, দায়িত্ববোধ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে নিজ নিজ ঘরকে সচেনতার দুর্গ কর গড়ে তুলি। আর আস্থা রাখি আমাদের আশার বাতিঘর ও সংকটের সাহসী নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ওপর।
সোমবার (১৫ জুন) ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনারা জানেন, করোনা সংক্রমণ ও বিস্তার দিন দিন বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সখ্যা। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বিশ্বের ২২১টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে নতুন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি দিক থেকে আমরা এখন দশম স্থানে রয়েছি। আর আক্রান্তের মোট সংখ্যা হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮তম। মৃত্যুর সংখ্যায় ৩১তম। প্রতিদিনই আমরা হারাচ্ছি আমাদের গর্বিত সন্তানদের। মহামারি কেড়ে নিচ্ছে এই সবুজ বাংলার আনন্দ কোলাহল।’
তিনি বলেন, ‘মানুষের স্বাভাবিক জীবনে ঘটেছে ছন্দপতন। আমরা আর কত মৃত্যু ধারণ করব! নিত্যদিনের শোকবার্তায় জাতি উদ্বেগে আকুল। এরই মাঝে কিছু মানুষ সংক্রমণ লুকিয়ে ঘোরাফেরা করছেন। করোনার লক্ষণ অস্পষ্ট বলে তারা দিব্যি ঘুরে বেড়ান। পরীক্ষা করান না এবং লুকিয়ে রাখেন সত্যকে। এতে যা ক্ষতি করার করেই ফেলেছেন, ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ। একজন থেকে শতজন আক্রান্ত হচ্ছে।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এত মৃত্যু, এত সংক্রমণ, তারপরও কি আমাদের বোধোদয় হবে না? তারপরও কি আমরা সাবধানী হবো না? উচ্চ আদালতকেও ভিড় এড়াতে নির্দেশনা দিতে হচ্ছে। তবুও আমাদের বোধ কাজ করছে না। সরকার নানান সীমাবদ্ধতা নিয়েও দিনরাত কাজ করছে। এটা একটা মহামারি। পৃথিবীর সব দেশ বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা নিয়ে মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে। আমেরিকার মত দেশে নৌবাহিনীর জাহাজকে হাসপাতাল বানাতে হয়েছে। ভারতে ট্রেনের বগিকে করা হয়েছে হাসপাতাল।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রতিকারের চেয়ে জোরালো প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এছাড়া আমাদের সামনে আর বিকল্প কিছুই নেই। হাসপাতালের শয্যা সংখ্যারও সীমাবদ্ধতা আছে। তবুও সরকার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা যদি বিপদের গভীরতা ও মাত্রা বুঝে সচেতন না হই তাহলে তা হবে জেনেশুনে আগুনে ঝাঁপ দেওয়ার মতো।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আর কোনো সন্তানকে হারাতে চাই না। ক্ষণিকের উদাসীনতা, স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অবহেলা, জীবনের চিরচেনা পথ থেকে আমাদের বিচ্যুত করে দিতে পারে।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বকবির সোনার বাংলা, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা; মানুষের হাসি আর আনন্দ স্বপ্নে বোনা কোলাহলে পাখ-পাখালি আবারও গান গেয়ে উঠুক নিজ নিজ নীড়ে। শিশুরা ইস্কুল যাবে। তরুণ-যুবাদের প্রাণোচ্ছল তারুণ্য দ্যুতি ছড়াবে চারিদিকে। আমাদের এই চিরচেনা শ্যামল বাংলায় সবাইকে নিয়ে আমরা ভালো থাকতে চাই। কারো সামান্যতম অবহেলা অন্যজনের জীবন নাশের যেন কারণ না হয়। আমরা সংক্রমণ লুকিয়ে না রেখে সাথে সাথে টেস্ট করে নিজ উদ্যোগে আইসোলেশনে থাকি। নিজে বাঁচি, পরিবার ও সমাজকে বাঁচাই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটি এমন এক মৃত্যু, এমন এক সংক্রমণ, যাতে আপনজনও সঙ্গে সঙ্গে অচেনা হয়ে যায়। জীবন এতই তুচ্ছ করোনার কাছে। তবুও আমরা সাবধান হচ্ছি না। আমাদের ভালো থাকার মূলে সচেনতা, রোগ প্রতিরোধ, সার্বজনীন ঐক্য। আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর মূলে সম্মিলিত-সমন্বিত প্রয়াস জরুরি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে যেমন সীমাবদ্ধতা থাকবে তেমনি রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রেও নানান সীমাবদ্ধতা আছে। আসুন, শেখ হাসিনা সরকারের নিরলস প্রয়াসে সহযোগিতা করি। প্রকান্তরে যা নিজেকে নিজেকে সহযোগিতা করা। এই মহামারিতে নিজের জন্য নিজে সচেতন না হলে কেউ পথ দেখাতে পারবে না। আমরা সাহসী বীরের জাতি। প্রতিকূলতা অতিক্রম করে আসুন, আমরা উদ্বেগের মরুভূমিতে আশার ফুল ফোটাই, অনাবাদি জমিকে করে তুলি সবুজ।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সকলের ইস্পাতকঠিন ঐক্য, সচেতনতার প্রাচীর গড়ে তোলার মধ্য দিয়েই ইনশাল্লাহ আমরা ফিরে পাব চিরচেনা জগত, ফুল-ফসল, হাসি-আনন্দের বাংলাদেশ। উদ্বেগহীন গোধূলি আর আশা-জাগানিয়া সুবর্ণ প্রভাত।’
আশার বাতিঘর আস্থা রাখুন ওবায়দুল কাদের টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংকটের সাহসী নেত্রী