‘জীবনটা তো বাংলার মানুষের জন্য বিলিয়ে দিতেই এসেছি’
১০ জুন ২০২০ ২১:২১ | আপডেট: ১১ জুন ২০২০ ০০:৩২
ঢাকা: করোনাভাইরাস মহারারি কিংবা প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান— যাই আসুক না কেন, মানুষের জন্য করণীয়টা সবসময় করে যাবেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজের জীবনটা বাংলাদেশের মানুষের জন্য বিলিয়ে দিতেই চান বলে প্রত্যয় জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১০ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আনীত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই আলোচনায় আরো অংশ নেন সাবেক কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা ও সাবেক প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ।
আরও পড়ুন- একটি মানুষও যেন কষ্ট না পায়, সে চেষ্টা করে যাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী
চলমান করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যেও সাধ্যমতো কাজ করছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আল্লাহ মানুষকে কিছু কাজ দেয়, সেই কাজটুকু করতে হবে। সেই কাজ যতক্ষণ শেষ না হবে, ততক্ষণ আমি কাজ করে যাব। যখন সময় শেষ হয়ে যাবে, আমিও চলে যাব। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
সংসদ নেতা বলেন, অনেক দেশই এই দুর্যোগে বাজেট দিতে পারছে না। আমি বলেছি— না, একদিকে করোনা মোকাবিলা করব, অন্যদিকে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন যেন চলে, তারা যেন কষ্ট না পায়, সেজন্য করণীয়গুলোও আমি করে যাব। আমি তো এখানে অনন্তকাল বেঁচে থাকার জন্য আসিনি। আমি তো জীবনটা বাংলার মানুষের জন্য বিলিয়ে দিতেই এসেছি। কাজেই এটা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। চলুন সবাই মিলে আলাহর কাছে দোয়া করি, এই করোনাভাইরাসের হাত থেকে মানবজাতি যেন রক্ষা পায়।
আরও পড়ুন- স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজেট অধিবেশন শুরু
করোনা সংকটে যারা সামনে থেকে লড়াই করছেন, তাদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা যারা মারা গেছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধাও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চরম এই দুঃসময়ে প্রশাসন থেকে শুরু করে সবাই একতাবদ্ধ হয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ভিডিপি, সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, গণমাধ্যমকর্মীরা প্রতিনিয়ত এ দুঃসময়ে সাহসের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই। তাদের মধ্যে অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
করোনাভাইরাসের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় প্রায় ২৪ লাখ মানুষকে আমরা নিরাপদ জায়গা সরিয়ে নিয়েছিলাম। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিপুলসংখ্যক মানুষকে নিরাপদ শেল্টারে সরিয়ে ফেলায় ঘূর্ণিঝড় আম্পান অনেক কিছুর ক্ষতি করতে পারলেও আমরা অনেক মানুষের জীবন রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছি।
করোনা সংকটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাড়াও অনেক বিত্তশালী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে নিজেদের আত্মীয়ের লাশ ভয়ে ফেলে চলে গেছেন, পুলিশ ছাড়াও আমার ছাত্রলীগের ছেলেরা সেই লাশ দাফন করছে। ভীত হয়ে স্বজনের লাশ ফেলে যাওয়া— এটা একটা অমানবিক কাজ। আমার নির্দেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছাড়াও কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগের ছেলেরা কৃষকের পাশে দাঁড়িয়ে ধান কেটে দিয়েছে, ধান মাথায় নিয়ে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রয়াত সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা, সাবেক কয়েকজন সংসদ সদস্য ছাড়াও বিশিষ্টজনদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
আরও পড়ুন-
বাজেট অধিবেশনে প্যানেল সভাপতি হলেন যে ৫ জন
বর্তমান-সাবেক এমপি ও বিশিষ্টজনদের মৃত্যুতে সংসদে শোক প্রস্তাব
আম্পান মোকাবিলা করোনা মোকাবিলা করোনাভাইরাস টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা