করোনা প্রতিরোধ-নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহনের জন্য যেসব স্বাস্থ্যবিধি
৩০ মে ২০২০ ২২:১১ | আপডেট: ৩১ মে ২০২০ ০১:০২
ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাসের বা কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ এড়াতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে ৩০ মে। এরপর ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে অফিস ও কল-কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এসময় থেকে গণপরিবহনও চালু থাকবে। তবে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনা রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
সাধারণ ছুটি শেষ হয়ে গেলে অফিস-আদালত বা গণপরিবহনসহ বাসাবাড়িতেও যেসব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, সে বিষয়ে কারিগরি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গণপরিবহনে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে অধিদফতর যেসব নির্দেশনা দিয়েছে, সেগুলো হচ্ছে-
বাস
১। জরুরি পরিকল্পনা প্রণয়ন, প্রত্যেকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত, কোভিড -১৯ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে কর্মীদের প্রশিক্ষণ জোরদার এবং যানবাহনগুলিতে মাস্ক, গ্লাভস ও জীবাণুনাশক সরবরাহ করা।
২। কর্মচারীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, প্রতিদিন কর্মীদের স্বাস্থ্যবিষয়ক অবস্থা নথিভুক্ত করা এবং যারা অসুস্থতা অনুভব করবে তাদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিতে হবে।
৩। পরিবেশের তাপমাত্রা এবং যানবাহনের গতির ওপর ভিত্তি করে যথাযথ বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যানের ক্ষেত্রে নিয়মিত পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করা।
৪। প্রতিবার চলাচলের আগে যানবাহন পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করা, সিট কভারগুলি নিয়মিত ধুয়ে পরিচ্ছন্ন রাখা।
৫। যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, নিয়মিত আসন পরিষ্কার করা এবং জীবাণুমুক্ত করা।
৬। যাত্রী এবং কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করা যেমন মাস্ক পরিধান এবং হাত ধোয়া।
৭। যাত্রীদের টিকেট ব্যবহার না করে স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা, যানবাহনে ওঠা-নামার সময় পরস্পরের মাঝে ১ মিটারের বেশি দূরত্ব বজায় রাখা এবং ভিড় এড়িয়ে চলা।
৮। যানবাহনে রেডিও, ভিডিও, পোস্টার ইত্যাদির মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতনতা সম্পর্কিত তথ্য প্রচার করা।
৯। গাড়িতে ভিড় কমানোর জন্য যাত্রীর সংখ্যা অনুযায়ী ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন যানবাহন ব্যবস্থা করা।
১০। যদি নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী থাকে তবে স্থানীয় সিডিসি (CDC) নির্দেশনা অনুসারে সর্বত্র জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
রেল যোগাযোগ
১। রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে জরুরি পরিকল্পনা তৈরি, নিরাপত্তা এবং জীবাণুমুক্ত পদ্ধতি মানসম্মত করতে হবে, সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোভিড-১৯ এর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে তথ্য জানা থাকতে হবে।
২। রেল ট্রানজিট স্টেশনগুলোতে অবশ্যই মহামারি প্রতিরোধী নিরাপত্তা সামগ্রী যেমন- মাস্ক, গ্লাভস, জীবাণুনাশক সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
৩। কর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা [Health Monitoring system] করা, প্রতিদিন কর্মীদের স্বাস্থ্যবিষয়ক অবস্থা নথিভুক্ত করা এবং যারা অসুস্থতা অনুভব করবে তাদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিতে হবে।
৪। প্রতিটি স্টেশনে তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র রাখার ব্যবস্থা করতে হবে, যেন স্টেশনে প্রবেশ করা প্রত্যেকটা যাত্রীর তাপমাত্রা রেকর্ড করা যায়। যেসব যাত্রীদের তাপমাত্রা ৩৭.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর উপরে থাকবে তাদের সাময়িকভাবে জরুরি এলাকায় কোয়ারেনটাইনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
৫। জনগণের জন্য ব্যবহার্য এবং জনসাধারণের চলাচলের স্থানগুলোকে পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করার হার বাড়াতে হবে। টয়লেট ও সিংকয়ের জন্য জীবাণুনাশক সরবরাহ করতে হবে। সর্বসাধারণের ব্যবহার্য সম্পত্তি যেমন- স্টেশনে টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সেই সাথে দ্রুতহাত শুষ্ককরণ জীবানুনাশক সামগ্রী সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
৬। সরবরাহকৃত সামগ্রীর পরিদর্শন এবং প্ল্যাটফরম ও রেল কম্পার্টমেন্ট এর বায়ু চলাচল ও স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।
৭। নিয়মিত যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা, আবর্জনা দূর, আসন ও হাতল পরিষ্কার করতে হবে।
৮। যাত্রী ও স্টাফদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে এবং মাস্ক পরিধান ও হাতের স্বাস্থ্যবিধি সম্বন্ধে সতর্ক হতে হবে।
৯। যাত্রীদের স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে টিকেট কেনা ও পরিশোধের জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
১০। কম্পার্টমেন্ট এবং রেল স্টেশন এর রেডিও, ভিডিও এবং পোস্টার এর মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর তথ্য প্রচার করতে হবে।
১১। যানবাহনের অতিরিক্ত ভিড় এড়ানোর জন্য ধারণক্ষমতা অনুযায়ী যানবাহন ব্যবস্থা করা।
১২। যদি নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী থাকে তবে স্থানীয় সিডিসি (CDC) নির্দেশনা অনুসারে সর্বত্র জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
ট্যাক্সি
১। যাত্রী পরিবহনের পূর্বে ট্যাক্সিতে বিভিন্ন জিনিসপত্র যেমন- মাস্ক, গ্লাভস, জীবাণুনাশক রাখতে হবে।
২। প্রতিদিন যাত্রা শুরুর পূর্বে ট্যাক্সির ভেতর জীবাণুনাশক দিয়ে ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে। যাত্রার সময় ট্যাক্সি পরিষ্কার, পরিপাটি এবং ধুলাবালি মুক্ত রাখতে হবে ।
৩। মাঝে মাঝে জানালা খুলতে হবে যখন বাতাসের তাপমাত্রা এবং গাড়ির গতি সহনীয় পর্যায়ে থাকে।।
৪। যাত্রী পরিবহনের সময় চালক এবং যাত্রী দুইজনকেই মাস্ক পরিধান করতে হবে।
৫। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। বিশেষ করে একটু পর পর অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া, হাঁচি দেওয়ার সময় টিস্যু দিয়ে বা কনুই দিয়ে মুখ নাক ঢেকে ফেলতে হবে।
৬। জীবাণুনাশক দিয়ে ঘন ঘন স্টিয়ারিং হুইল, গাড়ির দরজার হ্যান্ডেল এবং গাড়ির অন্যান্য অংশ পরিষ্কার করতে হবে। গাড়ির ভিতরের কাপড় যেমন গাড়ির সিটের কাপড় প্রতিদিন ধুয়ে পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
৭। কোনো জনসমাগমে প্রবেশের সময় এবং ট্যাক্সিতে ফেরত আসার পর চালক এবং যাত্রী দুইজনকেই হাত জীবাণুনাশক দিয়ে ভালভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
৮। যখন ট্যাক্সিতে কোন সন্দেহজনক উপসর্গ যেমন- জ্বর, কাশিতে আক্রান্ত যাত্রী থাকবে তখন একই সাথে যাত্রা করছেন এমন সবাই অবশ্যই মাস্ক পরিধান করবেন। উপসর্গযুক্ত ব্যক্তি নেমে যাবার পর জানালা খুলে বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে এবং যেসব জায়গায় স্পর্শ করেছে যেমন- দরজার হাতল, সিট, স্টিয়ারিং হুইল জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
৯। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকলে সেটিও পরিষ্কারের ব্যবস্থা করতে হবে।
১০। যদি কেউ বমি করে তৎক্ষণাৎ তা ফেলে দেওয়া যায় এমন শোষণ ক্ষমতাসম্পন্ন কাপড় (Disposable Absorbant material) যাতে জীবাণুনাশক (ক্লোরাইড যুক্ত জীবাণুনাশক) দেওয়া বা জীবাণুনাশক টিস্যু দিয়ে ঢেকে ফেলে দিতে হবে। তারপর ওই জায়গা পর্যাপ্ত জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
১১। স্বাস্থ্য সুরক্ষা সম্পর্কিত তথ্য রেডিও, পোস্টারের মাধ্যমে বা প্রতীকী পোস্টার ট্যাক্সির পিছনে লাগিয়ে প্রচার করতে হবে।
ব্যক্তিগত গাড়ি
১। কোথাও যাওয়ার পূর্বে ব্যক্তিগত গাড়িতে সুরক্ষা সরঞ্জাম যেমন, মাস্ক, গ্লাভস ও জীবানুনাশক রাখতে হবে।
২। গাড়ির ভেতর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং চলাচলের সময় গাড়ির জানালা খোলা রাখতে হবেযেন বায়ু চলাচল করতে পারে।
৩। ব্যক্তিগত সুরক্ষা এবং স্বাস্হ্য বিধির (যেমন হাঁচি, কাঁশি দেওয়ার সময় মুখ টিস্যু দিয়ে ঢাকা কিংবা কনুইয়ের ভাঁজে হাঁচি দেওয়া) ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
৪। জনসাধারণের মাঝ থেকে গাড়িতে আসার পূর্বে চালক এবং যাত্রীকে জীবাণুনাশক দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
৫। যদি কোনো যাত্রীর সন্দেহজনক উপসর্গ যেমন- সর্দি বা জ্বর থাকে সেক্ষেত্রে গাড়ির সকলের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। যাত্রী গাড়িতে ওঠার পর ভেন্টিলেশন রক্ষার্থে গাড়ির সকল জানালা খুলে দিতে হবে। সন্দেহজনক উপসর্গ থাকা ব্যক্তিটি যেসব বস্তুর সংস্পর্শে এসেছিলেন যেমন দরজার হাতল, গাড়ির সিট ইত্যাদি জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
৬। যদি কোনো যাত্রীর সন্দেহজনক উপসর্গ, যেমন সর্দি বা জ্বর থাকে, সেক্ষেত্রে গাড়ির সকলের জন্য মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক। যাত্রি গাড়িতে ওঠার পর ভেন্টিলেশন রক্ষার্থে গাড়ির সকল জানালা খুলে দিতে হবে। সন্দেহজনক উপসর্গ থাকা ব্যক্তিটি যে সকল বস্তুর সংস্পর্শে এসেছিলেন (যেমন দরজার হাতল, গাড়ির সিট ইত্যাদি) জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। তার সাথে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও পরিষ্কার করতে হবে।
৭। যাত্রী যদি বমি করে সেই ক্ষেত্রে জীবাণুনাশক (ক্লোরাইড যুক্ত জীবাণুনাশক) দেওয়া টিস্যু দিয়ে ঢেকে ফেলে দিতে হবে। তারপর ওই জায়গা পর্যাপ্ত জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
বিদেশ ফেরত লোকজন স্থানান্তরের জন্য যানবাহন
১। স্থানান্তর কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং গাড়ির ভেতরের বিভিন্ন জায়গা যেমন- গাড়ির অভ্যন্তরীণ প্রাচীর, স্টিয়ারিং হুইল, ভেতরের ওয়াল, আসন, আসনের হাতলসহ সকল জায়গায় জীবাণুনাশক ব্যবহার করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
২। যাত্রীদের অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে এবং গাড়িতে উঠার সময় ও আসনে বসার ক্ষেত্রে অন্যদের থেকে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সকল ক্ষেত্রেই ভিড় এড়ানো বাঞ্ছনীয়।
৩। যাত্রাপথে কোনো ব্যক্তি বমি করলে জীবাণুনাশক (সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড) বা শোষণকারী ডিসপোজেবল উপকরণ/টিস্যু দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। অতপর ওই স্থান পর্যাপ্ত জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৪। স্থানান্তর কাজে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করা উচিত। স্থানান্তরকালে ডিসপোজেবল ক্যাপ, মেডিকেল মাস্ক, গ্লাভস ও কাজের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক ইত্যাদি পরিবহন করা অত্যাবশ্যক।
৫। বিদেশ ফেরত ব্যক্তি নিশ্চিত/সন্দেহজনক কোভিড রোগী হলে বা জ্বরাক্রান্ত থাকলে বা নিশ্চিত/সন্দেহজনক রোগীর সাথে সাহচর্যে আসার ইতিহাস থাকলে- স্থানান্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের অবশ্যই ডিসপোজেবল ক্যাপ, মেডিকেল মাস্ক, গ্লাভস, কাজের নির্দিষ্ট পোশাক, প্রতিরক্ষামূলক পোশাক, প্রতিরক্ষামূলক ফেস শিল্ড বা গগলস, পানিনিরোধী/ রাবার বুট ইত্যাদি ব্যবহার করা উচিত।
৬। যদি স্থানান্তরিত ব্যক্তি একটি নিশ্চিত/সন্দেহভাজন রোগী,জ্বর আক্রান্ত ব্যক্তি, সন্দেহযুক্ত/নিশ্চিত রোগীর সাথে ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে ছিল এমন কোন ব্যক্তি হয়, তবে স্থানান্তর সমাপ্তির পরে স্থানান্তর করা গাড়িকে জীবাণুমুক্ত করা উচিত।
৭। প্রতিবার স্থানান্তর সম্পন্ন করার পর স্থানান্তরকৃত যানটি জীবাণুমুক্ত করা উচিত।
৮। স্থানান্তরে ব্যবহৃত বাহন কাজ শেষ করার পর বায়ু চলাচল আরও জোরদার করা উচিত।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, অসুস্থ কর্মচারী এবং সন্তানসম্ভবা নারীর কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকার বিষয়ে জানানো হয়েছে।