সামাজিক দূরত্ব: মৃদু বাতাসে ৬ ফুটও যথেষ্ট নয়
২২ মে ২০২০ ০৯:১০ | আপডেট: ২২ মে ২০২০ ১৩:৩৪
করোনাভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবের সময় ৩ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার রীতি তৈরি হয়েছে সারাবিশ্বেই। তবে নতুন এক গবেষণা বলছে, মৃদু বাতাস যদি বয়ে যেতে থাকে, ৬ ফুট দূরত্বও সামাজিক দূরত্ব হিসেবে যথেষ্ট নয়। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, এরকম বাতাস থাকলে হালকা কাশি দিলেও থুথুর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ড্রপলেট ১৮ ফুট পর্যন্ত দূরত্বে পৌঁছাতে পারে।
পিটিআইয়ের বরাতে এ খবর দিয়েছে ইকোনমিক টাইমস। খবরে বলা হয়েছে, নতুন এই গবেষণার সঙ্গে অন্যদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সাইপ্রাসের ইউনিভার্সিটি অব নিকোশিয়ার গবেষকরাও। তারা জানতে চেষ্টা করেছেন, বাতাসের মাধ্যমে বিশেষ করে মহামারির জন্য দায়ী এই করোনাভাইরাসের মতো ভাইরাস কতটা দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
‘ফিজিক্স অব ফ্লুইড’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ঘণ্টায় ৪ কিলোমিটারের মতো সামান্য মৃদু বাতাসের মধ্যেই কাশির পর ড্রপলেট ৫ সেকেন্ডে ১৮ মিটার পর্যন্ত দূরে গিয়ে পড়তে পারে। গবেষণার সহ-লেখক ইউনিভার্সিটি অব নিকোশিয়ার দিমিত্রিস দ্রিকাকিস বলেন, ‘এই ড্রপলেট শিশু বা বয়স্ক বিভিন্ন উচ্চতার মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে।’ এ ক্ষেত্রে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে যারা খাটো, তারা এ ধরনের কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ড্রপলেটের মাধ্যমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে বেশি থাকবেন।
গবেষকরা বলছেন, কাশির মাধ্যমে থুথুর যে ড্রপলেটগুলো মুখ থেকে বেরিয়ে আসে, সেগুলো বাতাসে কতটা প্রবাহিত হবে, তা অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। এসব বিষয়ে মধ্যে রয়ছে ড্রপলেটের আকার ও সংখ্যা, বাতাসে ড্রপলেট প্রবাহিত হওয়ার সময় তাদের পরস্পরের মধ্যেকার সম্পর্ক, তাপ ও কণা স্থানান্তরের ধরণ এবং আশপাশের বাতাসের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা।
গবেষণায় বিজ্ঞানীরা একজন ব্যক্তি কাশি দেওয়ার পর থেকে তার মুখনিঃসৃত ড্রপলেটগুলোর প্রতিটির কী অবস্থা দাঁড়ায়, কম্পিউটারের মাধ্যমে তার সিমুলেশণ করেছেন। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা থেকে শুরু করে ড্রপলেটগুলোর তরল থেকে বাস্পে পরিণত হওয়ার প্রতিটি বিষয়কে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এক হাজারেরও বেশি ড্রপলেট বিবেচনায় নিয়ে প্রায় ৩৭ লাখ সমীকরণ সমাধান করা হয়েছে গবেষণায়। আর তা থেকেই এই গবেষকরা বলছেন, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ড্রপলেট থেকে সুরক্ষা দিতে ৬ ফুটের সামাজিক দূরত্ব কোনোভাবেই নিরাপদ নয়।
গবেষণার আরেক সহ-লেখক তালিক ডিবুক বলছেন, কাশির মাধ্যমে ডে ড্রপলেট ছড়াচ্ছে, এর পরিণতি কী হতে পারে, সেটি দেখার জন্যই আমরা গাণিতিক সমীকরণ ও কম্পিউটার সিমুলেশনের আশ্রয় নিয়েছি।
গবেষকরা বলছেন, এসব ড্রপলেট পরিবহনের ক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রার কী প্রভাব থাকতে পারে, তা নিয়ে আরও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।