Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সিভাসু’তে করোনার ৭ নমুনার জিনোম সিকুয়েন্স নির্ণয়


২১ মে ২০২০ ২১:৫০ | আপডেট: ২১ মে ২০২০ ২৩:৪০

ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সাতটি নমুনার জিনোম সিকুয়েন্স নির্ণয় করেছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)। গবেষণায় সিভাসু’কে সহায়তা করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজিআরআই) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি)।

চট্টগ্রাম বিভাগে এই প্রথম করোনাভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স উদঘাটন হলো। এই গবেষণায় সাতটি জিনোম সিকুয়েন্স নির্ণয় করা হয়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সবচেয়ে বড় ডেটাবেজ জিআইএসএইড-এ জমা রাখার জন্য পাঠানো হয়েছে সিকুয়েন্সগুলো।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- দেশে করোনার প্রথম জিনোম সিকুয়েন্স উদঘাটন করল সিএইচআরএফ

সিভাসু উপাচার্য ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বৃহস্পতিবার (২১ মে) সারাবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, সাতটি সিকুয়েন্সের মধ্যে দু’টি সম্পূর্ণরূপে সিঙ্গাপুরে আক্রান্তদের সঙ্গে মিলে গেছে। বাকি পাঁচটি সিকুয়েন্স শতভাগ অন্য কোনো দেশের আক্রান্তদের সঙ্গে মেলেনি। শূন্য দশমিক ১ শতাংশ হলেও হয়তো মিউটেশন ঘটেছে।

ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ সারাবাংলাকে বলেন, চট্টগ্রামে আমরাই প্রথমবারের মতো জিনোম সিকুয়েন্স করেছি। একইসঙ্গে দেশে প্রথমবারের মতো সাতটি জিনোম সিকুয়েন্স নির্ণয় করে আমরা জিআরএসএইড-এ জমা দিয়েছি। এক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে ছিল বিজিআরআই ও বিটিআইডি। আমরা তিনটি প্রতিষ্ঠান মিলে এই কাজটি করেছি বলতে পারেন। আমাদের ল্যাবে সিকুয়েন্সিং মেশিন ছিল না। বিজিআরআই তাদের সিকুয়েন্সিং মেশিন দিয়ে আমাদের সহায়তা করেছে। আর নমুনা দিয়ে সহায়থা করেছে বিআইটিআইডি।

বিজ্ঞাপন

ড. গৌতম বুদ্ধ বলেন, ভবিষ্যতেও আমরা এই সিকুয়েন্সিংয়ের কাজ করে যাব। কারণ জিনের ভেতরে প্রোটিনের অবস্থান এবং কোনো ধরনের মিউটেশন হয়েছে কি না, এগুলো সম্পকে আরও বিস্তারিত তথ্য জানা দরকার। আমরা যা দেখলাম, স্পাইক প্রোটিন সব জায়গাতেই আছে। এই স্পাইক প্রোটিন যদি মিউটেটেড হতোম তবে সেটি আমাদের জন্য আশার বাণী হয়ে আসত। ভবিষ্যতে আরও সিকুয়েন্স নিয়ে কাজ করতে পারলে ম্যাপিংয়ে মিউটেশন হয়েছে কি না, সে বিষয়ে তথ্য জানা যেতে পারে বলে জানান তিনি।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উন্মোচিত জিনোম সিকুয়েন্সের একটি জিনোমের ক্ষেত্রে সাতটি স্থানে, দুইটিতে পাঁচটি স্থানে এবং চারটিতে চারটি স্থানে মিউটেশন বা পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া ৫১১ ও ৫১৭ নম্বর নমুনার সিকোয়েন্সে একই স্থানে ৩৪৫ বেজপেয়ারের ডিলিশন দেখা গেছে, যা সিঙ্গাপুরের কিছু জিনোমে দেখা গেছে। ওই দুইটি জিনোমে এনএস৮ জিনের অনুপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।

আরও পড়ুন- এবার করোনার জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয় করলো এনআইবি

এদিকে, সিভাসু’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিজেআরআই’র সঙ্গে তাদের যৌথ গবেষণায় সার্বিক সহায়তা দিচ্ছে বিআইটিআইডি। গবেষণায় সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন সিভাসু উপাচার্য গৌতম বুদ্ধ দাশ।

গবেষণায় যুক্ত অন্যরা হলেন— বিআইটিআইডি’র পরিচালক অধ্যাপক এম এ হাসান চৌধুরী, মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক শাকিল আহমেদ, বিজেআরআই গবেষক মো. শহিদুল ইসলাম, সিভাসু’র প্যাথলজি অ্যান্ড প্যারাসাইটলজি বিভাগের অধ্যাপক জুনায়েদ সিদ্দিকী।

অধ্যাপক জুনায়েদ সিদ্দিকী বলেন, সাত রোগীর ভাইরাসের জিনোম বিন্যাস উন্মোচনের পর তাদের জিজ্ঞাসা করতে হবে, তাদের বাইরের দেশগুলোর কোনো হিস্ট্রি আছে কি না, অথবা বিদেশ ফেরত কারও সংস্পর্শে এসেছিলেন কি না।

তিনি জানান, সাতটি নমুনার জিনোম স্বাস্থ্য অধিদফতরে দেওয়া হয়েছে। আরও ২০টির জিনোম পরীক্ষা চলছে।

বিআইটিআইডি’র সহযোগী অধ্যাপক শাকিল আহমেদ জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গভাবে জিনোম উন্মোচন করা গেলে টিকা তৈরি, ভাইরাসের ক্ষমতা, ভাইরাসের বিবর্তনসহ নানা বিষয় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

এর আগে, গত ১২ মে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ) দেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স নির্ণয় করে। এরপরে ১৭ মে করোনার পাঁচটি জিনোম সিকুয়েন্স জমা দেয় বাংলাদেশের ডিএনএ সল্যুশন। এতে তাদের সহায়তা করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডিআরআইসিএম ও কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল।

করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় জিনোম সিকুয়েন্স সাতটি জিনোম সিকুয়েন্স সিভাসু

বিজ্ঞাপন

দেশপ্রেম ও মেধা পাচার
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৪৪

আরো

সম্পর্কিত খবর