এবার করোনার জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয় করলো এনআইবি
১৯ মে ২০২০ ২০:০৫ | আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০০:৪৬
ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) জিনোম সিকুয়েন্স নির্ণয় করেছে দেশের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি (এনআইবি)। দেশের তৃতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের করা এই জিনোম সিকুয়েন্স ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সবচেয়ে বড় ডেটাবেজ জিআইএসএইড-এ জমা রাখার জন্য পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মে) সারাবাংলাকে জিনোম সিকুয়েন্সের গবেষণা জিআইএসএইড-এ জমা দেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির (এনআইবি) মহাপরিচালক ড. মো. সলিমুল্লাহ।
দেশে করোনার প্রথম জিনোম সিকুয়েন্স উদঘাটন করল সিএইচআরএফ
ড. মো. সলিমুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা স্যাঙ্গার (Sanger) পদ্ধতিতে জিনোম সিকুয়েন্স নির্ণয় করেছি। এই পদ্ধতিতে নির্ণয় করা জিনোম সিকুয়েন্স প্রায় শতভাগ নির্ভুল হয়ে থাকে। তাই এটি গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃত। এখন পর্যন্ত একটি নমুনার জিনোম সিকুয়েন্স সম্পন্ন করা হয়েছে এবং আরও সাতটি নমুনার জিনোম সিকুয়েন্স নির্ণয়ের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারীর কার্যকর মোকাবেলার অংশ হিসেবে আমাদের দেশে এ সংক্রান্ত গবেষণা, ভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স নির্ণয় করা খুবই জরুরি। এ প্রয়োজনীয়তাকে সামনে রেখেই এনআইবি করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয়ে কাজ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে এনআইবির সিকুয়েন্স করা জিনোম যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন এবং ইতালি এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এনআইবিতে প্রাপ্ত সিকুয়েন্সে কিছু পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে এবং অধিকতর গবেষণার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে।’
এছাড়া কম খরচে কোভিড-১৯ রোগ শনাক্তকরণে পিসিআর কিট উদ্ভাবনে এনআইবির গবেষকদল কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।
এনআইবির মহাপরিচালক ড. মো. সলিমুল্লাহ-এর নেতৃত্বে কেশব চন্দ্র দাস, মো. মনিরুজ্জামান, মো. হাদিসুর রহমান, মোহাম্মদ উজ্জ্বল হোসেন ও মো. নজরুল ইসলামের পাশাপাশি ডা. রুহুল আমিন এবং ডা. আসিফ রাশেদ-এর সহযোগিতায় এই জিনোম সিকোয়েন্স নির্ণয়ের কাজটি সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে ১২ মে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ) দেশে প্রথমবারের মতো জিনোম সিকুয়েন্স নির্ণয় করে। এরপরে ১৭ মে আর্ন্তজাতিক জিন ডাটা ব্যাংক- GISAID এ করোনার পাঁচটি জিনোম সিকোয়েন্স জমা দেয় বাংলাদেশের ডিএনএ সল্যুশন। এতে তাদের সহায়তা করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডিআরআইসিএম এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল। ডিএনএ সল্যুশন লিমিটেড তাদের অ্যাম্লিকন বেসড নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং সিস্টেমের মাধ্যমে কোভিড-১৯-এর পাঁচটি ভাইরাসের পুরো জিনোম সিকোয়েন্সিং উম্মোচন করে।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশ থেকে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসের সাতটি জিনগত সিকুয়েন্স GISAID এ জমা পড়েছে।
এর আগে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) জিনোম সিকুয়েন্স উদঘাটন করেছে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ)। বাংলাদেশে এই প্রথম করোনাভাইরাসের কোনো জিনোম সিকুয়েন্স উদঘাটন করে কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠান।