Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লকডাউন শিথিল করে ভয়ংকর অবস্থা তৈরি করা হয়েছে: বিএনপি


১৯ মে ২০২০ ১৩:৫২ | আপডেট: ১৯ মে ২০২০ ১৫:৩১

ঢাকা: করোনাভাইরাসের মহাবিপর্যয়ের মধ্যে লকডাউন শিথিল করে দেশে ভয়ংকর অবস্থা তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ অভিযোগ করেন।

বিএনপির করোনা পর্যবেক্ষণ সেল থেকে পাওয়া সব শেষ তথ্য তুলে ধরার জন্য এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বমুখী। সরকার করোনা মোকাবিলায় সব দিক থেকে ব্যর্থ। সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা অপ্রতুল। ৯০ ভাগ হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা নেই। হাসাপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি। নিম্নমানের মাস্ক সরবরাহ করে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিপদে ফেলে দিয়েছে সরকার। এখন তারা রোগীদের চিকিৎসা দিতে ভয় পাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের ব্যর্থতায় বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। লকডাউন শিথিল করে দেশকে ভয়ংকর বিপজ্জনক অবস্থায় ফেলে দিয়েছে সরকার। দাম্ভিকতা ছাড়া তাদের আর কিছুই নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের অদূরদর্শিতা, সমন্বয়হীনতা, উদাসীনতা ও একগুয়েমি মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। সুতরাং করোনায় মৃত্যুর দায় সরকারকেই নিতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের সমন্বয়হীনতা ও উদাসীনতায় এখন প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। মানুষের জীবন বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। চীনে যখন করোনা মহামারি শুরু হয়, তখন সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। তখন থেকে তারা যথাযথ পদক্ষেপ নিলে আজ লাশের সারি দীর্ঘ হতো না। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা না থাকায় সরকার এমন আচরণ করেছে। মানুষকে বাঁচাতে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তারা। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে তাদের বাঁচানোর ব্যবস্থা নিত সরকার।’

বিজ্ঞাপন

কোভিড-১৯ মৃত্যুবরণ করা চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্য, ব্যাংকার, পেশাজীবী, শ্রমজীবী মানুষের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘সরকারি হিসেবে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩৪৯ জনের, আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ হাজার ৮৭০ জন। কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সংখ্যা আরও ৪০ গুণ বেশি হবে। গণমাধ্যমের তথ্যমতে করোনা উপসর্গে এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছে প্রায় ১১০০ জন।’

বিএনপির পর্যবেক্ষণ সেল থেকে পাওয়া তথ্য তুলে ধরে মির্জা ফখরুল জানান, এখন পর্যন্ত ৭৮০ জন চিকিৎসক, ৬০০ জন নার্স ও ৫৫০জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন পাঁচজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২ শ’র অধিক। অন্যান্য বাহিনীর আরও ৬ শতাধিক সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ১৫ জন। গণমাধ্যমকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৩৫ জন। এদের মধ্যে তিনজন মৃত্যুবরণ করেছেন। প্রশাসনেরও বেশ কিছু সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন।

দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না করোনা আক্রান্তরা। এমনকি অন্যান্য রোগে আক্রান্তরাও যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। পথে, ঘাটে, বাসে, ফুটপাতে লাশ পড়ে থাকার খবর বের হচ্ছে। শাহবাগে লম্বা লাইন ধরে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও করোনা টেস্ট করাতে না পেরে সড়কেই ছেলে-মেয়ের চোখের সামনে প্রাণ হারিয়েছেন বৃদ্ধ।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার ঘোষিত ৪২টি সেন্টারের বেশ কয়েকটি সেন্টার কার্যকর নয়। যেসব সেন্টারে টেস্ট হচ্ছে তাও অপর্যাপ্ত। বিএসএমএমইউ হাসপাতালের সামনের সড়কে আগের রাতে লাইন ধরে রোগীরা শুয়ে আছে। তারপরও টেস্টের সিরিয়াল পাচ্ছে না। অন্যান্য হাসপাতালগুলোতেও একই অবস্থা। যে পরিমাণ টেস্ট হচ্ছে এর মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ শতাংশ উঠেছে। যদি বেশি টেস্ট হতো তাহলে আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বেড়ে যেত।’

বিজ্ঞাপন

করোনা আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি হতে পাচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে বিনা চিকিৎসায়। তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী হতে পারে? শুধু কিটের অভাবে করোনার টেস্ট করাতে পারছেন না আক্রান্ত রোগীরা। অথচ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিট অনুমোদন নিয়ে কত টালবাহানা চলছে।’

টপ নিউজ বিএনপি ভয়ংকর অবস্থা মির্জা ফখরুল লকডাউন শিথিল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর