ক্রেতা কম, বিক্রিও নেই— দাবি বিক্রেতাদের
১১ মে ২০২০ ১৮:১৬ | আপডেট: ১১ মে ২০২০ ২৩:৩১
ঢাকা: ঈদুল ফিতর সামনে রেখে মার্কেট ও শপিং মল খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে সরকার। সে অনুযায়ী দুই দিন হলো খুলতে শুরু করেছে বিপণী বিতানগুলো। তবে বিক্রেতারা দাবি করছেন, ক্রেতাদের তেমন কোনো চাপ নেই। বেচাকেনাও আগের মতো হচ্ছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঈদের বাজার হিসেবে বিবেচনা করার মতো অবস্থা নেই।
এদিকে, সোমবার (১১ মে) ক্রেতা, বিক্রেতা ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। বিক্রেতাদের কেউ কেউ আরও বলছেন, তারা স্বাস্থ্যবিধির সবকিছুই মেনে চলছেন দোকানে। তবে সব মার্কেট বা দোকানে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না। ক্রেতা ও দোকানি— স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে উদাসীনতা রয়েছে দুই পক্ষেই।
গতকাল রোববার (১০ মে) থেকেই খোলা রয়েছে রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেট। জানতে চাইলে নিউ সুপার মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ্ শহীদ সারাবাংলাকে বলেন, গতকালের (রোববার) চেয়ে ক্রেতা বেড়েছে। স্বাস্থ্যবিধি আগের চেয়ে আরও কঠোরভাবে মানা হচ্ছে। তবে বেচাকেনার সময় কম হয়ে গেছে। ইফতার পর্যন্ত সময় বাড়ালে একটু বেচাকেনা বাড়বে। রোজার দিন মানুষ সকালে ঘুম থেকে ওঠে না। তাছাড়া রাত ৮টা পর্যন্ত বাইরে থাকার নিয়ম হয়েছ। তাই অন্তত মাগরিব পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিলে ভালো হতো।
একই মার্কেটের মমতা বেডিংয়ের প্রোপাইটার এমদাদুল হক সারাবাংলাকে বলেন, আমরা সীমিত আকারে দোকান চালু রেখেছি। তেমন একটা ক্রেতা নেই। বেচাকেনাও খুব একটা বেশি ভালো বলা যাবে না। আমাদের এই মার্কেটে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রেতাদের প্রবেশ করানো হচ্ছে। মূল ফটকেই তাপমাত্রা পরিমাপ করা হচ্ছে। রয়েছে স্যানিটাইজের ব্যবস্থা। আলাদা করে আমাদের দোকানেও স্যানিটাইজের ব্যবস্থা রয়েছে। আর প্রত্যেক বিক্রেতাই মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পরিধান করছেন।
গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটের কাপড়ের দোকানি হাবিব বলেন, অন্য সময়ের চেয়ে ক্রেতা বিক্রি দুই কম। আর আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করছি। ক্রেতারাও এখন অনেক সচেতন। ফার্মেগেটের অ্যাপেক্স শোরুমের এক কর্মচারী বলেন, দোকান খোলার পর গতকালের চেয় আজ ক্রেতা বেশি। তবে অন্য সময়ের মতো ক্রেতা বিক্রি কোনোটাই নেই।
শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড আড়ংয়ের আউটলেটও খুলেছে গতকাল রোববার থেকেই। আড়ংয়ের চিফ অপারেটিং অফিসার আশরাফুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে আমাদের আউটলেটে অল্পসংখ্যক ক্রেতা আসছে। আমরা প্রথমেই আড়ংকে সীমাবদ্ধ করেছি। অনলাইনে নির্দিষ্ট স্লট বরাদ্দ নিয়ে আসতে হচ্ছে। ফলে যারা কেনাকাটা করতে আসছেন, একান্তই যাদের দরকার, কেবলমাত্র তারাই আসছেন। ফলে অন্য সময়ের চেয়ে ক্রেতাও কম।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, নতুন করে আর কোনো মার্কেট খোলেনি। ঢাকার ফুলবাড়িয়া মার্কেট খোলা নিয়ে আলোচনা চলছে। যেসব মার্কেট খোলা আছে, সেগুলোতে দোকান খোলার সংখ্যা বেড়েছে। তবে মার্কেটগুলোতে তেমন কোনো ক্রেতা নেই।
এর আগে সোমবার (১১ মে) দুপুরে এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির এই সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, সরকারের নির্দেশনা মেনেই আমরা কিন্তু সীমিত আকারে দোকানপাট খোলার ব্যবস্থা করেছি। আপনারা লক্ষ করেছেন, আমাদের মার্কেটে ক্রেতারাও মাস্ক পরে আসছেন। আমাদের মার্কেট ও দোকানগুলো আমরা স্যানিটাইজ করছি। আমরা সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার চেষ্টা করছি। যদি কেউ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে না পারেন, যদি কেউ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে না পারেন, সেক্ষেত্রে আমি বিভিন্ন সমিতিকে অনুরোধ করব তাৎক্ষণিকভাবে ওই দোকানটি বন্ধ করে দিতে। যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে পুলিশের সহায়তা নেবেন। কারণ আমাদের মনে রাখতে হবে, এই মুহূর্তে আমরা সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছি। কোনোভাবেই আমরা যেন বেখেয়ালি না হই।
ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি তৌফিক এহসান সারাবাংলাকে বলেন, আজ মার্কেটে ক্রেতা সমাগম ভালো রয়েছে। গাউছিয়া সংলগ্ন সুবাস্তু, নিউ সুপার মার্কেট, জাহান ম্যানশন, গ্লোব মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, কম্পিউটার সিটি, ইস্টার্ন প্লাস, মালিবাগ ও মৌচায় এলাকার অনেক শপিং মল খোলা রয়েছে। মিরপুর এলাকার কয়েকটি শপিং মল ছাড়া বেশিরভাগ দোকানপাট খোলা আছে। সবমিলিয়ে আমরা নিয়ম মেনে দোকানপাট খোলা রাখার চেষ্টা করছি।
ক্রেতা ক্রেতার উপস্থিতি কম টপ নিউজ দোকান নিউ সুপার মার্কেট বিক্রি কম মাকেট শপিং মল