২ মাস পর মেঘনায় ইলিশ ধরতে নামছেন জেলেরা
১ মে ২০২০ ১৪:১৯ | আপডেট: ১ মে ২০২০ ১৪:২৭
লক্ষ্মীপুর: দুই মাস পর আবারও মেঘনা নদীতে নামার সুযোগ পাচ্ছেন জেলেরা। নিষেধাজ্ঞা কেটে যাওয়ায় পুরোদমে ইলিশ আহরণ করতে শুরু করবেন তারা। লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, জাল ও নৌকার মেরামতসহ সব ধরনের কাজ সেরে রেখেছেন তারা। আজ শুক্রবার (১ মে) থেকেই ইলিশ শিকারে নামছেন তারা।
ইলিশের বংশবৃদ্ধি, তথা উৎপাদনের কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ নিশ্চিত করতে প্রতিবছর মার্চ ও এপ্রিল— এই দুই মাস মেঘনায় ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়ে থাকে। লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনাল পর্যন্ত মেঘনা নদীর একশ কিলোমিটার এলাকা ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে বিবেচিত হয় এই সময়ে। সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল)। সেই হিসাবে আজ থেকেই মেঘনায় নামতে শুরু করবেন জেলেরা।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানায়, জেলায় জেলের সংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার। এর মধ্যে ৪৩ হাজার ৪৭২ জন জেলে নিবন্ধিত। মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস তাদের নদীতে নামায় নিষেধাজ্ঞা ছিল।
তবে আইন অমান্য করে এই সময়ে অনেক জেলেই নেমেছেন নদীতে। ধরা পড়ে শাস্তিও পেয়েছেন। জাটকা ধরার অপরাধে জেলায় ৪৩০টি অভিযান ও ৫৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে একবছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয় ছয় জনকে। এছাড়া ১০ থেকে ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয় ৩৭ জনকে। এর বাইরেও অনেককে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞার আগে খাদ্য বরাদ্দ এলেও তা তাদের মধ্যে সঠিক সময়ে বিতরণ করা হয়নি। ওই সময় সিন্ডিকেট করে নদীর পাড়ে আড়ত বসিয়ে তাদের নিষেধাজ্ঞার সময়ে নদীতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। ঠিক সময়ে চাল বা নগদ অর্থ সহায়তা পেলে তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে নামতেন না।
জেলেদের সহায়তা প্রসঙ্গে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলাল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, নিবন্ধিত জেলেদের জন্য দুই কিস্তিতে মোট ৩১ হাজার ৬৮৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাওয়া যায়। এর মধ্যে প্রথম কিস্তির চাল দেওয়া হয়েছে আগেই। পরে কিস্তির চালগুলো ৭ তারিখের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে জেলেদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
এদিকে, এখন নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় কাজে ফেরার সুযোগ পেয়ে স্বস্তি পেয়েছেন জেলেরা। যদিও করোনাভাইরাসের কারণে মাছ বিক্রি নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে তাদের মধ্যে।
চর কালকিনি এলাকার জেলে আওলাদ হোসেন সারাবাংলাকে জানান, দাদনদার মৎস্য আড়তদারে কাছে ঋণ আছে। সেই টাকা শোধ করতে হবে। তাই মাছ ধরতে নামতেই হবে। আমার মতো অনেক জেলের অবস্থাই একই। কিন্তু সরকার নদীর পাড়ের আড়তগুলো বন্ধ রাখলে আমরা মাছ বিক্রি করব কোথায়?
নদীতে মাছ পেলেও বাজারে দাম না পাওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন মাছ ব্যবসায়ীরাও। তারা বলছেন, বিভিন্ন এলাকায় লকডাউনের কারণে বাজারে ক্রেতা কম। রমজানের বাজারে মানুষের হাতে টাকাও নেই। ফলে ইলিশের চাহিদা কম। তাছাড়া গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন এলাকায় পাঠাতেও খরচ বেশি হবে। ফলে দুই মাস পর জেলেরা নদীতে নামলে বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়বে। তবে দাম হয়তো মিলবে না।
ইলিশ ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জেলে টপ নিউজ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ মেঘনা নদী লক্ষ্মীপুর