‘খেয়ে বাঁচতে হলে বের হতেই হবে’
২৯ এপ্রিল ২০২০ ১০:৫২
ঢাকা: ‘ভাই পেটের দায়ে বের হয়েছি। আর কত দিন ঘরে বসে থাকব। সংসার তো চালাতে হবে। করোনার জন্য আরও কতদিন এ অবস্থা থাকবে সেটাও কেউ বলতে পারছে না। এখন আমাদের খেয়ে বাঁচতে হলে বের হতেই হবে।’- এভাবেই বলছিলেন শেয়ারে মোটরবাইক চালক আল আমিন।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকায় যাত্রীর অপেক্ষায় থাকা আল আমিনের সঙ্গে কথা হয়।
এ সময় আল আমিন বলেন ‘টানা এক মাস শুয়ে-বসে কাটিয়েছি। জমানো যা ছিল সব শেষ। ঘরে বাজার সদাই লাগবে। পকেটে টাকা নেই। বাধ্য হয়েই বের হয়েছি। দিন শেষে বাজার খরচটাও যদি হয়, তাতেই হবে।’
করোনাকালে কি যাত্রী পাওয়া যায়?- প্রশ্ন করতেই বললেন, ‘সকাল ১০টা থেকে বসে আছি। এখন বেলা সাড়ে ১১টা বাজে। একজন যাত্রীও পাইনি। এমনিতেই যাত্রী নাই। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া এখন কেউ বাইকে ওঠে না।’
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে লকডাউনের পর স্বল্প পরিসরে খুলতে শুরু করেছে পোশাক কারখানা। ইফতার বিক্রির জন্য খোলার অনুমতি পেয়েছে হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলো। এই সুযোগে রাস্তায় বের হয়েছে গণপরিবহন ছাড়া সবধরনের যানবাহন।
রাজধানীর বেশকিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কে অন্য দিনের চেয়ে ব্যক্তিগত পরিবহনের সংখ্যা তুলনামূলক অনেক বেশি। জীবিকার তাগিদে মানুষ রিকশা, সিএনজি, বাইক ও প্রাইভেটকার নিয়ে বের হয়েছেন।
রিকশা চালক আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, ‘করোনার ভয়ে অনেক দিন রাস্তায় বের হয়নি। এখন আর পারতেছি না। কারও কাছ থেকে কোনো সাহায্যও পাইনি। সেজন্য বের হয়েছি। রাস্তায় তেমন খ্যাপ নাই।’
করোনার ভাইরাস মানুষকে বাঁচাতে সরকার বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে। লকডাউন করা হচ্ছে একটার পর একটা জেলা। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কয়েক দফা তা বাড়ানো হয়েছে। তবে একমাস পর সামগ্রিক অর্থনৈতিক ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পর্যায়ক্রমে খুলতে শুরু করেছে পোশাক কারখানা। তবে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন।
দীর্ঘ দিন লকডাউনের মধ্যে থেকে অসহায়, দিনমজুর, রিকশা চালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছে মহাবিপদে। দিন দিন বাড়ছে মানুষের খাবারের চাহিদা। সেজন্যই লকডাউন উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হয়েছে খেটে খাওয়া সাধারণ শ্রমজীবীরা।