ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন
২৭ এপ্রিল ২০২০ ১৭:৩৫ | আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২০ ১৯:৩১
ঢাকা: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিন বছর মেয়াদি এই ফান্ডের গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ সুদের হার হবে ৪ শতাংশ। তহবিল থেকে কেবল চলতি মূলধন (ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল) হিসেবে ঋণ দেবে তফসিলি ব্যাংকগুলো।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে প্রজ্ঞাপনটি।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ বা শিল্পের (সিএমএসএমই) জন্য প্রধানমন্ত্রী আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। সে অনুযায়ী এর আগে সার্কুলারের মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণদানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নির্দেশনা জারি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় এবারে তহবিল গঠনের নির্দেশনা দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সিএমএসএমই প্রতিষ্ঠানকে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে চলতি মূলধন বাবদ ঋণ দেবে। আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তারল্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব উৎস থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি আবর্তনশীল পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়েছে। এ স্কিম থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিতরণের জন্য ৫০ শতাংশ অর্থ পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দেওয়া হবে। এ স্কিমের মেয়াদ তিন বছর এবং সুদের হার হবে ৪ শতাংশ।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, এই স্কিম তহবিল থেকে প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিতরণ করা ঋণের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন হবে। পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে অর্থ পেতে হলে ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি করতে হবে। তহবিলের অর্থ একবছর পর থেকে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে (মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর) সুদসহ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার বাইরে সিএমএসএমই ছাড়া অন্য কোনো খাতে এই অর্থ ব্যবহার করা যাবে না উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই স্কিম থেকে ঋণ নিয়ে কোনোভাবে অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করলে অতিরিক্ত ২ শতাংশ হারে সুদসহ অর্থ ফেরত দিতে হবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ বা আদায়ের সব দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওপর ন্যস্ত থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে, গত ৫ এপ্রিল বিভিন্ন খাতের জন্য আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণার অংশ হিসেবে ক্ষুদ্র, কুটির শিল্পসহ মাঝারি শিল্প খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘোষণার সময় তিনি বলেন, ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ তহবিল থেকে ৯ শতাংশ সুদে শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৪ শতাংশ সুদ শোধ করবে শিল্প প্রতিষ্ঠান, বাকি ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে পরিশোধ করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে। এরপর গত ২৩ এপ্রিল সিএমএসএমই খাতে ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণ সহায়তা ও পরিচালনার নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল এসএমই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প টপ নিউজ তফসিলি ব্যাংক পুনঃঅর্থায়ন তহবিল প্রণোদনা বাংলাদেশ ব্যাংক সিএমএসএমই