Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৩ বছরে ঢাকায় প্রথম ভিক্ষুক পেলেন জাতিসংঘ দূত


২৬ এপ্রিল ২০২০ ২২:০৮ | আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২০ ০৮:৫৫

ঢাকা: ‘বিগত ৩ বছর ধরে আমি রাজধানী ঢাকায় অফিস করছি এবং সেখানেই থাকছি। শহরটি খুবই ব্যস্ত। ১৮ মিলিয়ন মানুষের একটি ঘনবসতিপূর্ণ শহর এটি। যেখানে অভিজাত হোটেল, বিলাসবহুল গাড়ির পাশাপাশি রিক্সা, সংস্কৃতি, ফ্যাশন, ধর্ম এবং বস্তিবাসীর উপস্থিতি রয়েছে। আমি যখন এই লেখাটি লিখছি তখন ঢাকাবাসী সবাই যে যার ঘরে, রাস্তাগুলো জনশূন্য- যেন ব্যস্ত শহরে রাজ্যের নীরবতা ভর করেছে। আমি যেখানে থাকি, সেখানকার রাস্তা থেকে একজন ভিক্ষুকের টাকা চাওয়ার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি; যা গত তিন বছরে আমার কাছে প্রথম। সময়টা এখন এমন, যখন নভেল করোনাভাইরাসের থাবায় গোটা পৃথিবীতে এখন মহামারি চলছে। এই শহরও করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

চলমান নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ঢাকা এবং জাতিসংঘের কথা বলতে গিয়ে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো উপরের কথাগুলো বলেন। ‘ফ্রম বাস্টলিং স্ট্রিটস টু লকডাউন: বাংলাদেশ অ্যান্ড দ্য ইউএন মোবিলাইজ টু ফাইট কোভিড ১৯: এ ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ব্লগ’ শীর্ষক মিয়া সেপ্প‘র লেখাটি রোববার (২৬ এপ্রিল) জাতিসংঘ তাদের স্বাস্থ্য বিভাগে ছেপেছে।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো মতে, ‘নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠীরও বেশি মানুষ এখন লকডাউন পালন করছে। উন্নত দেশ থেকে করোনাভাইরাস এখন ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর দিকে ধেয়ে আসছে, যেখানে স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। সবদিক বিবেচনায় বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রকে এই দুর্যোগ মোকাবিলায় যুক্তিযুক্ত পথে কাজ করতে হবে, আতঙ্কিত হওয়া যাবে না।’

‘নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ কমিউনিটি সংক্রমণের প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। এই স্তরের ঝুঁকি হচ্ছে যে, এখন মানুষে মানুষে এই ভাইরাস বড় আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। চলমান সময়ে বাংলাদেম সরকার লকডাউন বা সাময়িক ছুটি এবং মানুষে মানুষে দূরত্ব বজায় রাখার যে নির্দেশ দিয়েছে তা খুবই কার্যকর। কেননা এই সময়ে এতে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত খাতগুলো শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পাবে।’- লেখায় উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি ওই লেখায় আরও বলেন, ‘এই দুর্যোগ মোকাবিলায় জাতিসংঘ বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ, পরীক্ষা, কন্টাক্ট ট্রেসিং, আইশোলেশন, পিপিইসহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় যোগান দিচ্ছে জাতিসংঘ। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহ করে খাদ্য নিরাপত্তা ঠিক রাখতেও জাতিসংঘ কাজ করছে।’

বিজ্ঞাপন

তার লেখনিতে উঠে এসেছে, ‘বাংলাদেশের রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক শিল্পখাত থেকে। এই খাতের সঙ্গে লাখো নারী কর্মী কাজ করে অর্থনীতিকে সচল রাখছে। করোনা আক্রমণে এই খাতটি আজ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। শুধু অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নারীকর্মীরা লকডাউনে বাসায় থেকে পারিবারিক সহিংসতারও শিকার হচ্ছেন।’

জাতিসংঘের দূত লেখায় উল্লেখ করেন, ‘আগামী দিনগুলোতে কী হবে, সবাই বাসায় থাকবে নাকি আগের মতো কাজে ফিরে যাবে- কেউই আসলে কিছু জানে না। তাই এই দুর্যোগ মোকাবিলায় দেশে-বিদেশে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। একে অন্যকে সহযোগিতা করতে হবে। ভয় না পেয়ে এই দুর্যোগ মোকাবিলা করতে পারলে অবশ্যই আমরা সবাই মিলে আলোকিত বিশ্ব গড়তে পারব। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়—“বিপদে মোরে রক্ষা করো/এ নহে মোর প্রার্থনা/বিপদে আমি না যেন করি ভয়”।’

জাতিসংঘ দূত টপ নিউজ ঢাকায় ভিক্ষুক প্রথমবার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর