করোনাকালের বাজারে রোজার ‘তাপ’
২৪ এপ্রিল ২০২০ ১৩:৪০ | আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২০ ১৩:৫৫
ঢাকা: করোনাভাইরাসের সাধারণ ছুটিতে পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তাতে বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ছিল কম। তবে ক্রেতাও কম থাকায় খুব বেশি প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি গত মাসখানেকের বাজারে। তবে রোজার কাছাকাছি আসতেই বাজার স্থিরতা হারিয়েছে। সবজি থেকে শুরু করে মাছ-মাংস, মশলা— দাম বেড়েছে সবকিছুরই। তাতে রোজা শুরুর ঠিক আগের সময়কার বাজারে যারাই গিয়েছেন, গুনতে হয়েছে বাড়তি টাকা।
শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর মধ্য বাড্ডা কাঁচাবাজার ও মেরুল বাড্ডা কাঁচাবাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি ১০ টাকা করে বেড়েছে আলু, শিম, মূলা, করলা, ঝিঙ্গা, বরবটি, গাজরের মতো সবজিগুলোতে। আলুর দাম প্রতি কেজি ৩৫ টাকা; শিম ৪০ টাকা; করলা, মূলা ও ঝিঙা ৫০ টাকা; বরবটি ৬০ টাকা; গাজর ৪০ টাকা। গত সপ্তাহের ২০ টাকার শসাও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। ৫ টাকা বেড়ে টমেটো ও পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজিতে। বেগুন ৪০ টাকা থেকে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে, পটল ৩০ টাকা থেকে ৪৫ টাকায়। করোনা আক্রমণের শুরু থেকেই বাড়তি দামে বিক্রি হওয়া লেবুর হালি ছিল ৮০ টাকা।
মেরুল বাড্ডার বাজারে এসেছিলেন ডিআইটি প্রজেক্টের বাসিন্দা হুমায়ুন। তিনি বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় আজ সব সবজির দাম বেশি। একদিকে রোজা, অন্যদিকে করোনার আঘাত। আমাদের দম বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা। এভাবে চলতে থাকলে কিভাবে বাঁচব?
সবজির বাজারের মতো মাংসের বাজারেও লেগেছে রমজানের ‘উত্তাপ’। গত সপ্তাহে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম আজ ছিল ১৪০ টাকা। গত সপ্তাহে দেশি মুরগি বিক্রি হয়েছিল ৩২০ ও ৩৫০ টাকায়। আজ দাম ছিল ৪শ। কেবল খাসির মাংসের দামই অপরিবর্তিত, কেজি ৮শ টাকা।
মুরগির দাম বেশি কেন— জানতে চাইলে মধ্য বাড্ডার মাংস ব্যবসায়ী ওমর ফারুক বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে জেলা থেকে কোনো গাড়ি আসেনি। আমরা তো আর মুরগি পুষি না। তাই মার্কেটে মুরগি নেই। আর মুরগি না থাকলে বেশি দামেই তো বিক্রি করতে হবে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব মাছের দামই কিছু না কিছু বেড়েছে। কাঁচকি ৩৫০ টাকা, বড় পুঁটি ৬০০ টাকা, শিং (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, পাবদা ৫৫০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ টাকা, রুই ৩৫০ টাকা, পাঙাস ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, টেংরা আকারভেদে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা ও ছোট কৈ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের ইলিশের কেজিও ১ হাজার টাকা।
মধ্য বাড্ডার মাছ ব্যবসায়ী রাসেল জানালেন, মুরগি ও সবজির মতো কয়েকদিন ধরে রাজধানীতে মাছও আসছে কম। ফলে আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে।
প্রতিবছরই রোজার সপ্তাহখানেক আগে থেকেই বাজারে নিত্যপণ্যের দাম একটু চড়াই দেখা যায়। পণ্য সরবরাহের ঘাটতির পাশাপাশি রোজা আসাতেই পণ্যের দাম বাড়তি কি না— এমন প্রশ্নের সোজা উত্তর দেননি কোনো বিক্রেতাই। তবে ক্রেতারা বলছেন, করোনার কারণে পণ্য সরবরাহের অজুহাত দিলেও বাজারের উত্তাপের পেছনে কারণটা আসলে রমজানই।