জীবনযুদ্ধে হারলেন সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ বাবাসহ ২ ছেলে
২১ এপ্রিল ২০২০ ১৬:৪৩ | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ১৮:১৫
ঢাকা: অবশেষে জীবনযুদ্ধে হার মানলেন পাবনার বেড়া উপজেলার শেখ পাড়া গ্রামের আবু শেখ (৭২) এবং তার দুই ছেলে কালাম শেখ (৪৭) ও আব্দুস সালাম শেখ ওরফে কালু (৪০)। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন তারা। পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে প্রাণ হারিয়েছেন বাবা ও বড় ছেলে। একদিন পর ছোট ছেলেও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় সালাম শেখ কালুর। শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইমরুল সাহেদ তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন।
এসআই ইমরুল সাহেদ জানান, তিন জনের মধ্যে প্রথম মৃত্যু হয় আবু শেখের বড় ছেলে কালাম শেখের। রোববার (১৯ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। কয়েক ঘণ্টা পর সোমবার (২০ এপ্রিল) ভোরের দিকে মারা যান আবু শেখ।
শাহবাগ থানার এসআই ইমরুল সাহেদ জানান, মঙ্গলবার মারা যাওয়া সালাম শেখ কালুর শরীরের ৫৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। তার শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বেশি। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পাবনার বেড়া পৌর এলাকার শেখপাড়া গ্রামে আবু শেখের বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে একই পরিবারের পাঁচ জনসহ মোট ছয় জন দগ্ধ হন।
আহত বাকি তিন জন হলেন— মৃত সালাম শেখ কালুর ছেলে লিখন শেখ (১৬), প্রতিবেশী আলহাজ শেখ (৩০) ও গ্যাস ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম (৩৫)। তারা সবাই চিকিৎসা নিয়ে এখন সুস্থ আছেন।
আবু শেখের ছোট ছেলে আসলাম শেখ সারাবাংলাকে জানান, তাদের বাড়িতে রান্নার কাজে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার হতো। ঘটনার দিন গ্যাস শেষ হয়ে গেলে গ্যাস ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে খবর দেওয়া হয়। সাড়ে ১১টার দিকে জাহাঙ্গীর গ্যাসভর্তি সিলিন্ডার নিয়ে তাদের বাড়িতে আসেন। জাহাঙ্গীর নিজেই গ্যাস ফুরিয়ে যাওয়া সিলিন্ডারটি পাল্টে ভরা সিলিন্ডার লাগাতে গেলে আগুন ধরে যায়। এ সময় বাড়ির লোকজন আগুন নেভাতে গেলে সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়। ঘটনাস্থলে থাকা ছয় জন এসময় দগ্ধ হন।
বিস্ফোরণের খবর পেয়ে বেড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। আগুনে দগ্ধদের দ্রুত বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।
আসলাম আরও জানান, বগুড়ায় তার বাবা আবু শেখ এবং ভাই কালাম ও সালামের অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তারা। এছাড়া দগ্ধ অন্যান্যদের অবস্থা ভালো। তারা চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে।