ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি হলে মোবাইল কোর্টে সাজা: প্রধানমন্ত্রী
১২ এপ্রিল ২০২০ ১৭:২৫
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা সংকটে জনগণকে যে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে সেখান থেকে যারা মানে দুর্নীতি করার চেষ্টা করেছেন তারা সবাই ধরা পড়বেন। তাদের কোনো ক্ষমা নেই। যদি প্রয়োজন হয় মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হবে, বিচার পরে দেখা যাবে।
রোববার (১২ এপ্রিল) সকালে গণভবন থেকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সমাপণী বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী সবশেষে খুলনা জেলার সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে মতবিনিময় শেষে তিনি এ সব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সরাসরি সম্প্রচার করে। এর আগে দুই দফায় ২১টি জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সকলকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। আমরা চাই যেহেতু ব্যবসা বাণিজ্য কাজ-কর্ম সবই বন্ধ। যারা দিন আনে দিন খায় অথবা ছোটখাট ব্যবসা করে খেতেন, তারা খুব কষ্টে আছে। অনেকে হাত পাততে পারে, অনেকে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি সকলের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার। সবাইকে সাহায্য দেওয়ার। একটা দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা চলছে। এ সময় মানুষকে সাহায্য দেওয়ার জন্য, আমরা যে খাদ্য দ্রব্য দিচ্ছি, চাল বা যা আমরা দিচ্ছি সেখান থেকে কেউ যদি দুর্নীতি করার চেষ্টা করে তাহলে এরা কোনোদিন ক্ষমার যোগ্য না এবং এটা আমরা ক্ষমা করব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অত্যন্ত দুঃখিত যে, এ ধরনের কয়েকটার খবর বেরিয়েছে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বা এই দুর্গত মানুষকে দেয়ার জন্য যে খাদ্যশস্য চাল দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে যারা দুর্নীতি করার চেষ্টা করেছেন এবং কিছু ধরা পড়েছেন। আমি আশা করি, কেউ যদি এমন করেন, সবাই ধরা পড়বেন কিন্তু তাদের কোনো ক্ষমা নেই। যদি প্রয়োজন হয় সেখানে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হবে, বিচার পরে দেখা যাবে।’
‘প্রত্যেকের একটা নিজের আন্তরিকতা থাকতে হবে। আর বিশেষ করে আমরা যারা রাজনীতি করি, আমাদের তো আরও বেশি দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। যারা সরকারি চাকরি বা সরকারি বেতন পাচ্ছেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকায়; কাজেই প্রত্যেককে আজকে কাজ করতে হবে’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যাদেরকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছি, তারা আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু তার মধ্যে সামান্য এই যে দুয়েকটা ঘটনা আমাদেরকে অত্যন্ত কষ্ট দেয়, এবং এটা খুবই একটা ঘৃণ্য কাজ। কাজেই এ রকম কেউ যেন করবেন না, সেটিই আমি বলব, এ ধরনের দুর্নীতি কোনোদিন আমরা বরদাশত করব না।’
প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যারা আমাদের তালিকাভুক্ত আছে তাদের আমরা সাহায্য করি, সবসময় দেই বা আমাদের সামাজিক সুরক্ষায় তালিকাভুক্ত তারা তো আছেনই কিন্তু এই তালিকার বাইরে যারা আছে, তাদেরকে দেওয়ার জন্যই কিন্তু আমরা আরও অতিরিক্ত সহযোগিতা দিচ্ছি। কাজেই সেই তালিকাটা করে ফেলা দরকার। আর অনেকে তো হাত পাততে পারবেন না। তাদের ঘরে ঘরে খাবারটা পৌঁছে দেওয়া এটি সবাইকে দিতে হবে। সেই দিকটা সবাই নজরে দেবেন। সেটি আমি বলব।’
করোনাভাইরাসের দুর্যোগ থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পাবেন এমন আশাবাদ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। এছাড়াও মন্ত্রীপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েরর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
টপ নিউজ ত্রাণ বিতরণ দুর্নীতি প্রধানমন্ত্রী মোবাইল কোর্ট শেখ হাসিনা সাজা