খাবার সংকটে সিংড়া ফরেস্টের ১২টি শকুন
৯ এপ্রিল ২০২০ ১৯:১৩
ঠাকুরগাঁও: প্রায় ছয় মাস পর মুক্ত হয়ে খাবার সংকটে পড়েছে বিরল প্রজাতির ১২টি শকুন। ঠাকুরগাঁও বনবিভাগের আওতায় ছাড়া পেয়ে পাখিগুলো অনিশ্চয়তায় ভুগছে। একটুকরো খাবার জোগাড়েও ব্যর্থ হচ্ছে এই পাখিগুলো।
ঠাকুরগাঁও বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (রেঞ্জার) হরিপদ দেবনাথ বলেন, ‘গেল শীত মৌসুমে নেপালসহ অন্যদেশ থেকে আসা ক্লান্ত ১১টি শকুনকে বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আগের বছরেরও একটি শকুন রয়েছে। তাদের পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে সুস্থ করে অবমুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, গত রোববার (৫ এপ্রিল) শকুনগুলো প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা বিরল প্রজাতির এই শকুনগুলোকে। মুক্ত হলেও তারা এলাকা ছেড়ে দূরে কোথাও যাচ্ছে না। পেটের ক্ষুধায় সেখানেই ঘোরাফেরা করছে পাখিগুলো।
পরিচর্যা কেন্দ্রের কর্মী বেলাল হোসেন বলেন, ‘মুক্ত হলেও পাখিগুলো পরিচর্যা কেন্দ্র ছেড়ে যাচ্ছে না অভুক্ত পাখিগুলো।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. হেলাল বলেন, ‘পাখিগুলো কয়েকদিন ধরে খাবারের জন্য ছটফট করছে, কিন্তু তাদের খাবার কে দেবে?’
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আলতাফ হোসেন বলেনম ‘প্রাণীর মরদেহ খেয়ে শকুন জীবনধারণ করে। কিন্তু বৈশ্বিক রীতির পরিবর্তনে এই প্রাণীগুলো খাদ্য সংকটে পড়েছে।’
দিনাজপুরে বীরগঞ্জ উপজেলার জাতীয় উদ্যান সিংড়া ফরেস্টের শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্র থেকে এ পর্যন্ত ৫০টির বেশি শকুন অবমুক্ত করা হয়েছে। গত বছর ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে শকুনগুলো উদ্ধার করা হয়। প্রকৃতির ঝাড়ুদার হিসেবে পরিচিত বিলুপ্ত প্রায় এই পাখিগুলোকে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার জাতীয় উদ্যান ‘সিংড়া ফরেস্টের’ শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়।
উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করা শকুনকে সুস্থ করার জন্য দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় জাতীয় উদ্যান সিংড়া ফরেস্টে গড়ে তোলা হয়েছে একমাত্র দেশের এই পরিচর্যা কেন্দ্রটি। চার বছর আগে বাংলাদেশ বন বিভাগ ও আইইউসিএনের উদ্যোগে চালু করা হয় শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্র। এখানে দীর্ঘ পরিচর্যায় সুস্থ করার পর সময় মতো তাদের প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়।