গণভোট সামনে রেখে লকডাউন নিয়ে কৌশলী পুতিন
২২ মার্চ ২০২০ ১০:৪৭ | আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ১২:১৩
রাশিয়ার প্রসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতাকে দীর্ঘদিনের জন্য সুসংহত করার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন। তার ওই সমগ্র পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশটিতে নভেল করোনা ভাইরাসের দ্রুত বিস্তার, তেলের দাম ও মুদ্রার মান পড়ে যাওয়া। এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় গণভোটকে সামনে রেখে তাই লকডাউন নিয়ে কৌশলী অবস্থান নিয়েছেন পুতিন। রোববার (২২ মার্চ) এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
যদিও রাশিয়ার সীমান্ত, স্কুল-কলেজ ও অন্যান্য জনসমাগমের স্থানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
এদিকে, মে মাসের ৯ তারিখে রাশিয়ার ৭৫তম বিজয় দিবসে রাজধানী মস্কোতে বিশাল সামরিক মহড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সংবিধান সংশোধনে রাশিয়া জুড়ে গণভোটের তারিখ ঠিক করা হয়েছে এপ্রিলের ২২। এখন পর্যন্ত এই দুইটি আয়োজন স্থগিতের ব্যাপারে কোনো সরকারি নির্দেশনা না আসলেও, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অনিশ্চয়তা কাজ করছে।
বিবিসি জানাচ্ছে, এই নড়বড়ে পরিস্থিতির মধ্যে প্রেসিডেন্ট পুতিন কৌশলী অবস্থান নিয়ে নির্লিপ্তভাব ধরে রেখেছেন। এক বিবৃতিতে পুতিন জানিয়েছেন রাশিয়ার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রণে’ রয়েছে। এজন্য তিনি রাশিয়া সরকারের সকল স্তরের অংশীদারদের সময় মতো পদক্ষেপ নেওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এছাড়াও, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয় নেতাদের কঠোর সমালোচনা করেছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইউরোপীয় নেতাদের ঐক্যের সংকটের কথা উল্লেখ করেছে তারা।
অন্যদিকে ইউরোপে কোয়ারেনটাইনের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হলেও, রাশিয়ার ক্রিমিয়া বিজয়ের ছয় বছর পূর্তি উপলক্ষে ক্রিমিয়া সফর করেছেন পুতিন। সেখানে তিনি কয়েকটি জনসমাগমে অংশ নিয়েছেন এবং প্রকাশ্যেই অনেকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। এখন ওইসব আয়োজনে অংশ নেওয়া জনগণ, ক্রেমলিনের কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমকর্মীদেরও অগ্রীম করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হচ্ছে। যদিও, পুতিন নিজেই এখনও করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করাননি।
এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেছেন, প্রেসিডেন্টের ক্রিমিয়া সফর নিয়ম মেনেই সম্পন্ন হয়েছে। তার নিজের কোনো শারীরিক সমস্যা নেই। তাই তিনি পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী বিভিন্ন কাজে অংশ নিচ্ছেন।
কিন্তু গণভোট ছাড়া যেহেতু পুতিন তার ক্ষমতা সুসংহত করেত পারছেন না, তাই, রাশিয়ার নির্বাচন কমিশন ঠিক করেছে ভিড় কমাতে তারা বাড়িতে বাড়িতে ব্যালট পেপার দিয়ে আসবেন। পরে, নাগরিকরা তাদের মতামত জানিয়ে ব্যালট পেপার জমা দিবেন। শুক্রবার (২০ মার্চ) বিবিসিকে এই ব্যাপারে জানিয়েছেন রাশিয়ার নির্বাচন কমিশনের একজন মুখপাত্র। আর লকডাউন ঘোষণা করলে এই নির্বাচন আয়োজন শঙ্কার মুখে পড়তে পারে তাই কিছুটা কৌশলী পুতিন।