এসএমই মেলায় দেশীয় উদ্যোক্তাদের বাহারী পণ্যের পসরা
১০ মার্চ ২০২০ ১৮:০২ | আপডেট: ১০ মার্চ ২০২০ ২১:২২
ঢাকা: বাহারী পণ্যের পসরা বসেছে অষ্টম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায়। শাড়ি, থ্রি-পিস, বেডশিট, গহনা, ফুলদানি, ম্যাট, কার্পেটসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের প্রায় সব পণ্যই মিলছে এ মেলায়। নতুনত্ব হিসেবে দেখা গেছে সুপারির খোলের তৈরি প্লেটসহ বাহারী পণ্য। মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের সমাগম রয়েছে যথেষ্ট। বেচাকেনাও মোটামুটি বলে জানান কয়েকজন বিক্রেতা।
মঙ্গলবার (১০ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চলমান এসএমই মেলায় ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে।
৪ মার্চ শুরু হয়ে নয় দিন ব্যাপী এ মেলা ১২ মার্চ শেষ হওয়ার কথা ছিল তবে ৭ মার্চ বন্ধ থাকায় মেয়ার সময় একদিন বাড়িয়ে ১৩ মার্চ শেষ হবে।
মেলায় অংশ নেওয়া বেঙ্গল ব্রেইডেড রাগস লিমিটেডের স্টলে পাটের তৈরি বিভিন্ন প্রকার ম্যাট বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন প্রকারের পাপোশ, ম্যাট ও কার্পেটের দাম রাখা হচ্ছে ৩০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
স্টলটির বিক্রয়কর্মী অমল কৃষ্ণ হাওলাদার বলেন, ‘বেচা-কেনা নেই বললেই চলে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে আমরা মেলায় অংশ নিয়েছি। বেচা-কেনার চেয়ে এখানে আমরা পণ্য প্রদর্শনকে প্রাধান্য দিচ্ছি। গোল্ডেন রোপ নামের একটি স্টলে হ্যান্ড মেইড শোপিস, ছিকা, ব্যাগ ও চাবির রিংসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হচ্ছে।’ স্টলের দায়িত্বে থাকা রহমত উল্লাহ জানান, বেচাকেনা ভালোই চলছে। আমরা সন্তুষ্ট।
রাফিহা ফ্যাশন হাউজের স্টলে শাড়ি, স্যালোয়ার, ওয়ান পিস, টু পিস, থ্রি পিসসহ নারীদের বিভিন্ন কাপড় বিক্রি হচ্ছে। এর সত্ত্বাধিকারী মেঘনা বলেন, ‘প্রতিদিনই ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। শাড়ি ২ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করছি।‘
যারিন’স ক্রিয়েশনের সত্ত্বাধিকারী আফরোজা সুলতানা শিউলি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার স্টলে বেডশিট, শাড়ি, পর্দা, বাটিকের থ্রি-পিস বিক্রি করছি। দেশি ও ভালো পণ্য নিয়ে বসে আছি। কিন্তু বেচা-কেনা নেই। দিনে ২ হাজার টাকা বিক্রি হয়, যা দিয়ে স্টলের খরচই উঠা সম্ভব নয়।’
সিঁড়ি হস্তশিল্পর উদ্যোক্তা আরিফা ইয়াসমিন ময়ূরী বলেন, ‘ওয়ান পিস, টু পিস ও থ্রি পিস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১৮ শ টাকায়। মোটামুটি বেচাকেনা হচ্ছে।’
সুপারির খোল দিয়ে তৈরি প্লেটসহ বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে ‘অর্গাসাস’ নামের একটি স্টলে। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা সওগাত নাজবিন খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘মাত্র দুই মাস হয়েছে আমাদের প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু। বাইরে লেখাপড়া শেষে গতবছর দেশে এই প্রতিষ্ঠানটি শুরু করি। ময়মনসিংহে তো সুপারির বাগান তেমন নেই। তাই সুপারির খোল সংগ্রহ করে থাকি লক্ষ্মীপুর ও ভোলাসহ কয়েকটি জেলা থেকে। প্রথমবারের মতো মেলায় অংশ নিয়ে ভালোই সাড়া পাচ্ছি। ক্রেতারা যেমন কিনছেন তেমনি নতুন নতুন অর্ডার পাচ্ছি।’
এদিকে, এটুআই ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে নির্মিত পণ্য বিক্রির প্ল্যাটফর্ম ‘একসপ’-এ বিক্রেতা নিবন্ধন চলছে। বিভিন্ন স্টলের উদ্যোক্তাদের সেখানে নিবন্ধন করতে দেখা গেছে।
আয়োজকরা জানিয়েছে, এবারের মেলায় সারাদেশের ২৯৬টি এসএমই উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। তারা ৩০৯টি স্টলে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করছে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে ১৯৫ জন নারী উদ্যোক্তা ও ১০১ জন পুরুষ উদ্যোক্তা। এবারের মেলায় উদ্যোক্তাদের ৬৬ শতাংশই নারী। মেলায় দেশে উৎপাদিত পাটজাত পণ্য, খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়াজাত সামগ্রী, ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, আইটি পণ্য, প্লাস্টিক ও সিনথেটিক পণ্য, হস্তশিল্প, ডিজাইন ও ফ্যাশনওয়্যারসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে।
এবার মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মেলা থাকবে সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত।