শাহজালালে বসলো নতুন থার্মাল স্ক্যানার
৯ মার্চ ২০২০ ১৬:৩২ | আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ১৭:৪৬
ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ভিআইপি টার্মিনালে বসানো হয়েছে একটি থার্মাল স্ক্যানার। শাহজালালে তিনটি থার্মাল স্ক্যানারের মধ্যে দুটি নষ্ট ছিল। নতুন আরেকটি থার্মাল স্ক্যানার বসানোর ফলে সচল স্ক্যানার হলো দুটি। অপরটিও খুব দ্রুতই সংযুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ সারাবাংলাকে সোমবার (৯ মার্চ) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শাহরিয়ার সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছয়টি দেশের ওপর বাড়তি নজরদারি রাখা হয়েছে। চীন, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ইরান ও থাইল্যান্ড থেকে কেউ বাংলাদেশে এলে তাদের ওপর বাড়তি নজরদারি রাখা হচ্ছে। বাকিদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক চেকিং করা হচ্ছে।’
জানা গেছে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনটি থার্মাল স্ক্যানার রয়েছে। যার মধ্যে ভিআইপি টার্মিনালে একটি আর বাকি দুটি নরম্যাল অ্যারাইভ্যালে। কিন্তু ভিআইপি টার্মিনালের থার্মাল স্ক্যানারটি নষ্ট ছিল। আর নরম্যাল অ্যারাইভ্যালে দুটি থার্মাল স্ক্যানারের মধ্যে ১টি নষ্ট ছিলো (বর্তমানে সেটি নষ্ট আছে)। আর একটি দিয়ে কোনোভাবে কাজ করা হচ্ছে।
আরও জানা গেছে, থার্মাল স্ক্যানারগুলোর বয়স বেশি দিন হওয়ায় সেগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। শাহজালাল, সিলেট এবং চট্টগ্রামে একইসঙ্গে থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়। সিলেট ও চট্টগ্রামেরগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে শাহজালালে যেটি নষ্ট আছে সেটি নতুন করেই বসাতে হবে।
শাহজালাল স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শাহজালালে স্বাস্থ্য বিভাগে চারজন গাড়ি চালক, এমএলএস চারজন, ডাক্তার ১৮ জন, স্যানিটারি ইনসপেকটর ১৯ জন আর ১০ জন নার্স কাজ করছেন। প্রতি শিফটে চারজন ডাক্তার, চারজন স্যানিটারি ইনসপেকটর, নার্স দুইজন, একজন এমএলএস ও একজন ড্রাইভার কাজ করছেন।
চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট কোভিড-১৯ রোগে সোমবার (৯ মার্চ) পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ দশ হাজার ৪১ জন। ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাস আক্রান্ত ৬১ হাজার ৯৭৯ জন সেরে উঠে নিয়মিত জীবনে ফিরে গেছেন। সেই হিসেবে কোভিড-১৯ আক্রান্ত অর্ধেকের বেশি রোগী সেরে ওঠার খবর জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন আপডেটের বরাতে জানিয়েছে নিউইয়র্ক পোস্ট।
এদিকে, করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশ ও মেইনল্যান্ডে ইতোমধ্যেই সেরে উঠেছেন ৪৬ হাজার ৪৩৩ জন। ইরানে আক্রান্তদের মধ্যে সেরে উঠেছেন ২ হাজার ১৩৪ জন। ইতালিতে সেরে উঠেছেন ৬২২ জন। জাপানে ৭৬ জন, হংকংয়ে ৫৯ জন, থাইল্যান্ডে ৩১ জন, মালয়েশিয়ায় ২৪ জন, জার্মানিতে ১৮ জন, যুক্তরাজ্যে ১৮ জন, ভিয়েতনামে ১৬ জন, তাইওয়ানে ১৫ জন, মিশরে ১২ জন, ম্যাকাওয়ে ১০ জন, অস্ট্রেলিয়ায় ১৯ জন, ফ্রান্সে ১২ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৭ জন, বাহরাইনে ৪ জন, ভারতে ৩ জন, রোমানিয়ায় ৩ জন, কানাডায় ৭জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত সেরে উঠেছেন।
এদিকে এরইমধ্যে গতকাল বাংলাদেশ ১০৪তম দেশ হিসেবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের তালিকায় স্থান করে নিলো।
তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলেও এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করছেন আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি সবাইকে সচেতন হওয়ার জন্য এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করার আহ্বান জানান।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘নতুন করে একটি স্ক্যানার বসানো হয়েছে। শাহজালালে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্তরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা সবার সহযোগিতা চাই।’
আরও পড়ুন
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পরিবর্তন আনুন জীবনযাপনে
করোনাভাইরাসের প্রভাব, পুঁজিবাজারে বড় দরপতন চলছে
করোনাভাইরাস: মাস্কের চাহিদা আকাশচুম্বী, প্রয়োজন কতটুকু?
করোনাভাইরাস সম্পর্কে যা কিছু জানা প্রয়োজন
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে যা কিছু করণীয়