Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোনো মেজরের বাঁশির ফুঁ’তে দেশ স্বাধীন হয়নি: প্রধানমন্ত্রী


৭ মার্চ ২০২০ ২১:৩৩ | আপডেট: ৭ মার্চ ২০২০ ২১:৩৫

ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলে দেওয়া হয়েছিল মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এমনভাবে বিকৃত ইতিহাস তৈরি করা হলো যে, কোনো এক মেজর এক বাঁশির ফুঁ দিল আর অমনি যুদ্ধ হয়ে গেল আর দেশ স্বাধীন হয়ে গেল। অথচ সে নিজেই চাকরি করত সরকারের অধীনে এবং চারশ টাকা বেতন পেত। তাকেই বানানোর চেষ্টা হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে।’

শনিবার (৭ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে যখন নির্মমভাবে হত্যা করার পর একটু প্রজন্ম এই ভাষণ শোনা থেকে বঞ্চিত হয়েছিল বলে দাবি করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যে বয়সে ভাষণটা শুনলে তাদের ভেতর দেশপ্রেম জাগ্রত হত, যে ভাষণটা তাদের অনুপ্রেরণা দিত, অনেকগুলি বছর কিন্তু চলে গেছে এই ভাষণের সেই তাৎপর্যটা অনেকে জানতেই পারেনি, বুঝতেই পারেনি। ২১ বছর পর যখন আওয়ামী লীগ সরকারে আসে সরকারিভাবে আবার আমরা এই ভাষণ প্রচার প্রচলন শুরু করি।’

এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সভাপতি তার দলের নেতাকর্মীদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘শুধু আওয়ামী লীগ না, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আমাদের সকল সহযোগী-অঙ্গ সংগঠন এই প্রতিক’ল অবস্থার মধ্যে শত প্রতিকূলতার অবস্থার মধ্যেও এই ভাষণ সব সময় তারা বাজিয়েছেন। ৭ই মার্চ বেজেছে, ২৬ মার্চ, ১৫ আগস্ট; শত বাধা বিগ্রহ শত কিছু মোকাবিলা করে একদিকে তখনকার সরকার, জিয়া সরকার বলেন, এরশাদ সরকার বলেন, খালেদা জিয়া সরকার বলেন, সবাই বাধা দিয়েছে। কিন্তু আমাদের জাতির পিতার যারা আদর্শের সৈনিক, কোন বাধা তাদের কাছে কোনো বাধাই বাধা ছিল না। সব বাধা অতিক্রম করে এই ভাষণ তারা বাজিয়েছেন সমস্ত জায়গায়। এই ভাষণ মানুষ শুনেছে এবং যারা শুনেছে তারাই বুঝেছে কী অমূল্য সম্পদ তারা হারিয়েছিল।’

বিজ্ঞাপন

জাতির পিতার নেতৃত্বে রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এই বাংলাদেশে এমন একটা সময় ছিল। বাংলা ভাষার দাবিতে তার যে আন্দোলন, সেখানে তার যে একটা অবদান ছিল সেটা মুছে ফেলা হয়েছিল। একেবারে অস্বীকার করেছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তি সংগ্রামে তার যে অবদান সেটাও মুছে ফেলা হয়েছিল।’

‘এমনভাবে বিকৃত ইতিহাস তৈরি করা হল, যে কোন এক মেজর এক বাঁশির ফুঁ দিল আর অমনি যুদ্ধ হয়ে গেল আর দেশ স্বাধীন হয়ে গেল। এরকম বিকৃত ইতিহাস। অথচ সে নিজেই চাকরি করত বাংলাদেশ সরকারের অধীনে চারশ টাকা বেতন পেত। তাকেই বানানোর চেষ্টা হয়েছিল ঘোষক হিসাবে।’

‘অর্থ্যাৎ ইতিহাস বিকৃতি কোন পর্যায়ে। বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। আসলে সত্যকে কখনো কেউ মুছে ফেলতে পারে না। আর জাতির পিতা তো তার ৭ই মার্চের ভাষণেই বলে গেছেন, সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। তো কোন কিছু দাবায়ে রাখা যায় না আসলে। সত্য উদ্ভাসিত হবেই। সত্য ঠিকই আসবে।’

আরও পড়ুন: ‘৭ মার্চের ভাষণের প্রতিটি লাইনই একেকটি কোটেশন’

আজকে সেই সত্যটা মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়েছে। সেই ৭ই মার্চের ভাষণ যে ভাষণ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিল? এখন তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ব ঐতিহ্য প্রামাণ্য দলিলে স্থান করে নিয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, যারা এই ভাষণ তখন মুছে ফেলতে চেষ্টা করেছিল বা বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করেছিল, তারা লজ্জা পায় কি না জানি না? অবশ্য তাদের লাজ লজ্জা আছে বলেও মনে হয় না। থাকলে তাও একটা কথা ছিল। ওসব নেই। আর যদি নির্লজ্জই না হবে, ওই ভাষণ বা তার নাম কি মুছে ফেলার চেষ্টা করে কেউ, করে না। আজকে সেই ভাষণ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করেছে? আজকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়ে গেছে? বাঙালি আজকে একটা সম্মান পাচ্ছে। এটা যে শুধু আমাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য তা শুধু নয়। জাতির পিতার যে ভ’মিকা ছিল, মুক্তি সংগ্রামে স্বাধীনতা সংগ্রামে; আজকে সেটাও যখন আরও প্রকাশ হচ্ছে, প্রচার হচ্ছে মানুষের কাছে যাচ্ছে, এটা শুধু বাংলাদেশ না, যে কোনো একটা মুক্তি সংগ্রাম অন্য দেশের মানুষকে প্রেরণা জোগায়। শক্তি জোগায়, সাহস জোগায়।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আব্দুল মান্নান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, , ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, কবিতা আবৃত্তি করেন শিমুল মোস্তফা।

সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

জিয়াউর রহমান টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শেখ হাসিনা স্বাধীনতার ঘোষক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর