‘বঙ্গবন্ধু বিমায় চাকরি করতেন, অবসরে গেলে আমিও করতে চাই’
১ মার্চ ২০২০ ১৪:২৩ | আপডেট: ১ মার্চ ২০২০ ১৫:১৪
ঢাকা: অবসর নেওয়ার পর বিমা কোম্পানিতে চাকরি করার ইচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় বিমা দিবস উদ্বোধন করতে এসে জানালেন, ‘আমার জন্যও যেন একটা চাকরি থাকে, রিটায়ার্ড করার পর একটা চাকরি চাই।’
রোববার (১ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত জাতীয় বিমা দিবসের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে তিনি এই ইচ্ছার কথা জানান।
১৯৬০ সালের ১ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগ দিয়েছিলেন। দিনটিকে স্মরণ করে মন্ত্রিপরিষদ সভায় সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ১ মার্চ জাতীয় বিমা দিবস ঘোষণা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদায়ের আগে বলে যাচ্ছি। জাতির পিতা বিমা কোম্পানিতে চাকরি করতেন। আমার জন্যও যেন একটা চাকরি থাকে।’
এ সময় মঞ্চে বসে থাকা একজনের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী হাসতে হাসতে বলেন, ‘না রিটায়ার্ড করার পর একটা চাকরি চাই।’
তার আগে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে চাকরির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ১৯৬০ সালের ১ মার্চ আলফা ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে তিনি একটা পদে যোগ দেন। কন্ট্রোল অফ এজেন্সি হিসাবে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। এখনকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ছিল তখনকার জিন্নাহ এভিনিউ, ওখানে তিনি অফিস পান। ওই সময় তাজউদ্দিন ফতুল্লায় একটা চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। আমাদের একটা লাল জীপ গাড়ি ছিল। অফিস পাওয়ার পরই বঙ্গববন্ধু সেই জীপে করে ফতুল্লা চলে যান এবং তাজউদ্দিন সাহেবকে তুলে নিয়ে আসেন। বলেন, তোমার চাকরি করা লাগবে না, তুমি আমার সাথে ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করবে। সেই সঙ্গে ঢাকার প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফকেও চাকরি দিয়েছিলেন, নিজের পিএ হিসেবে।
ইন্সুরেন্স কোম্পানির অফিসার হিসাবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন শাখা অফিসে যাওয়ার উপলক্ষ্যে গোপনে গোপনে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সক্রিয়তা বজায় রেখেছিলেন। যেহেতু রাজনীতি নিষিদ্ধ কিন্তু ইন্সুরেন্স কোম্পানির একজন অফিসার হিসেবে তার দায়িত্ব ছিল ইন্সুরেন্স কোম্পানিকে ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রসার ঘটানো। সেই সূত্র ধরে তিনি সারাদেশ সফর করতেন। এতে একসঙ্গে দুটি কাজই হত। যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
দুর্নীতি তাড়াতে বিমার ডিজিটালাইজেশনের দাবি জানালেন প্রধানমন্ত্রী
১৯৬৫ সালে পাকিস্তান ভারত যুদ্ধ হওয়ার পর আমাদের এই ভূখন্ড ছিল অরক্ষিত। তিনি ছয় দফা দাবি তুলে ধরেছিলেন। সেই দাবি পাকিস্তান মেনে নেয়নি। এর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু যখন আন্দোলন শুরু করেন, তখন তাকে গ্রেফতার করা হয়। ৮ই মে ১৯৬৬ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ওই অবস্থায় তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দেওয়া হয়। রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা অর্থ্যাৎ রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব। যে মামলাটা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা হিসেবে পরিচিত ছিল। জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা ক্যান্টনমেনেটর ভেতরে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হলে সারাদেশে তার মুক্তির দাবিতে তীব্র আন্দোলন শুরু হয় তার বিভিন্ন দিক তুল ধরে বলেন, ওই আন্দোলনের মুখে আইয়ুব খান বাধ্য হয়েছিল মামলা প্রত্যাহার করতে। ২১ ফেব্রুয়ারি সে মামলা প্রত্যাহার করে ২২ ফেব্রুয়ারি তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির পরপরই আবার আরেকটি ইন্সুরেন্স কোম্পানি থেকেই তার কাছে একটি প্রস্তাব যায়। তখন তিনি সেখানে উপদেষ্টা হিসাবে যোগ দেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী আইডিআর নির্দেশনাবলী ও বীমা ম্যানুয়াল’ নামক দুইটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। এছাড়াও বীমা খাতে অবদানের জন্য মরহুম গোলাম মাওলা, মরহুম খোদা বক্স, মরহুম এস এ চৌধুরী, মরহুম এম এ সামাদ, এম শামসুল আলমকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়াও বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআর)’র পক্ষ থেকে প্রধান অতিথিকে ক্রেস্ট দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।