Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এনু-রুপনের সম্পদ আপাতত থাকবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে


২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২৩:৩৭ | আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৪৯

ঢাকা: গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের নেতা দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়ার বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা ও সোনা আদালতের আদেশে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হবে। তার আগে মামলা চলা পর্যন্ত জব্দ করা এসব সম্পদ সংরক্ষিত থাকবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে। পুলিশ, র‌্যাব ও আইনজীবীর কাছ থেকে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এনু-রুপনের ওয়ারীর নারিন্দা লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাসা থেকে র‌্যাব উদ্ধার করেছে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা, এক কেজি সোনা ও বিভিন্ন দেশের মুদ্রা। উদ্ধার হওয়া টাকা, সোনা সবই ওয়ারী থানা পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- গোপনে মমতাজ ভিলায় টাকা জমাতেন এনু-রুপন

র‌্যাব বলছে, অবৈধ পথে আয়ের এসব টাকার একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করে তারা। এমনকি বাড়ি গাড়িও কেনে অন্য দেশে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) দেওয়া আয়কর রিটার্নে আয়ের যে উৎস দেখানো হয়েছে, তার চেয়ে তাদের সম্পত্তি রয়েছে কয়েক লাখ কোটি টাকার বেশি।

এর আগে, গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর এই দুই ভাইয়ের সূত্রাপুর, গেন্ডারিয়া ও ওয়ারীর তিন বাসা থেকে ৫ কোটি টাকা, ৮ কেজি সোনা উদ্ধার করে র‌্যাব। পরে পালিয়ে থাকা এনু-রুপনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। গ্রেফতারের সময় সিআইডি নগদ ৪০ লাখ টাকা, ২২টি জমির দলিল ও ব্যাংকে কোটি টাকার এফডিআর এর কাগজপত্র জব্দ করে।

আরও পড়ুন- ক্যাসিনো ছাড়া আর কোনো পেশায় ছিলেন না এনু-রুপন

র‌্যাব-৩ এর সিও (কমান্ডিং অফিসার) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রকিবুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, এনু-রুপন দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে নতুন করে মানি লন্ডারিং মামলা হয়েছে। সেই মামলায় উদ্ধার হওয়া সম্পদ থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) মানি লন্ডারিংয়ের সেই মামলার তদন্ত করবে। তাই উদ্ধার হওয়া ওইসব টাকা ও সোনা তাদেরই বুঝিয়ে দেওয়া হবে। মামলা চলাকালিন এই সম্পত্তি বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখা হবে। এরপর মামলা নিস্পত্তি হলে আদালতের নির্দেশে এসব বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম সারাবাংলাকে বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হয়েছে। মামলা চলাকালে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যদি আদালতে প্রমাণ করতে পারেন যে তাদের এসব অর্থ-সম্পদ বৈধভাবে আয় করেছেন তাহলে জব্দ করা অর্থ তারা ফেরত পাবেন। আর আয়ের বৈধ উৎস প্রমাণিত হওয়ার পর যদি দেখা যায় যে তারা এসব আয়ের বিপরীতে আয়কর দেননি, তখন জরিমানাসহ নির্ধারিত হারে আয়কর পরিশোধ করার পর বাকি অর্থ ফেরত পাবেন।

আরও পড়ুন- যেভাবে গ্রেফতার ক্যাসিনো হোতা দুই ভাই এনু-রুপন

তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তরা যদি আদালতে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন যে জব্দ করা অর্থ অবৈধভাবে উপার্জিত, তাহলে তা ফেরত পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সে ক্ষেত্রে আদালত এসব অর্থ-সম্পদ রাষ্ট্রীয়ভাবে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেবে। তখন এসব সম্পদ রাষ্ট্রের কোষাগারে চলে যাবে।

সিআইডির গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন বলেন, এর আগে উদ্ধার হওয়া সব টাকা ও সোনা আদালতের আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি উদ্ধার হওয়া অর্থ সম্পদের বিপরীতে ওয়ারী থানায় মানি লন্ডারিং মামলা করেছে র‌্যাব। মামলাটি যেহেতু সিআইডি তদন্ত করবে, তাই টাকা ও সোনা আলামত হিসেবে তাদেরই বুঝিয়ে দেবে র‌্যাব। এবং আদালতের আদেশে সেসব বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখবে।

ফারুক হোসেন আরো বলেন, মামলা নিস্পত্তি শেষে এসব সম্পত্তির ব্যবস্থা নেবে আদালত। এনু-রুপনের যেহেতু ক্যাসিনো কান্ডে অবৈধ উপায়ে উপার্জন করা টাকা। তাই এসব টাকা রাষ্ট্র বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করতে পারে।

এনু-রুপন এনু-রুপনের সম্পদ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট