Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অতিরিক্ত হাত-পা কেটে ফেলা হলো শরীর থেকে!


২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৫:২৮ | আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৬:১২

ঢাকা: জোড়া লাগানো অনেক শিশুই সফল অস্ত্রপচারের মাধ্যমে সুস্থ হয়েছে। এদের মধ্যে আলোচিত তোফা-তহুরা ও রাবেয়া-রোকইয়া। এবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে প্যারাসাইটিক টুইনের (পরজীবী যমজ) সফল অস্ত্রপচার সম্পন্ন হয়েছে। অর্থাৎ অস্ত্রপচারের মাধ্যমে একটি শিশুর পেটে থাকা অতিরিক্ত হাত-পা কেটে ফেলা হয়েছে; মাথাবিহীন এই অঙ্গগুলো এতদিন ওই শিশুটির পুষ্টি নিয়ে বড় হচ্ছিল।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢামেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফ উল হক কাজল।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে ডা. আশরাফ উল হক কাজল বলেন, ‘ঢামেকে এই প্রথম আরও পরজীবী যমজ শিশুর আরেকটি সফল অস্ত্রপচার সম্পন্ন হয়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি (রোববার) এই অস্ত্রপচারটি হয়। এতে সময় লাগে চার ঘণ্টা। একটি শিশুর পেটে আরেকটি শিশুর মাথাবিহনী শরীর ছিল। পেটেরে বাইরে ছিল দুই পা, দুই হাত, নিতম্ব ও পায়খানা-প্রসাবের রাস্তা। কিন্তু মাথা ও বুকের অংশ বিশেষ অনুপস্থিত ছিল। সুস্থ শিশুটির নাভিতে বড় একটি ছিদ্র ছিল। যার মাধ্যমে পেটের নাড়ি যাওয়া আসা করতো। তবে আমরা সফলভাবে অস্ত্রপচার করে মাথাবিহীন শরীরটি কেটে ফেলেছি। এখন শিশুটি সুস্থ আছে।’

ডা. কাজল বলেন, ‘আগাছা যেরকম অন্য গাছ থেকে রস নেয় তেমনি এই অপূর্ণাঙ্গ শিশুটি বড় হচ্ছিল আবদুল্লাহর শরীর থেকে পুষ্টি নিয়ে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এ ধরনের শিশুকে কনজেনিটাল প্যারাসাইটিক টুইন বা অপূর্ণাঙ্গ যমজ বলা হয়। বিশ্ব এই রোগের হার প্রায় দশ লাখে একজন। এর আগে ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের একটি বাচ্চার সফল অপারেশন সম্পন্ন হয়।’

বিজ্ঞাপন

শিশু সার্জারি বিভাগে প্রধান বলেন, ‘শিশুটি এখন ভালো আছে। অস্ত্রপচারের ছয়দিন পর থেকে শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। শিশুটির দুই হাত দুই পা নাড়াতে পারছে। বর্তমানে তার অর্গানের কোনো সমস্যা নেই। আশা করছি সে সুস্থ সবলভাবে বেড়ে উঠবে।’

ঢাকা মেডিকেল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন জানান, অনেক জটিল অপারেশন আমাদের হাসপাতালে সফলভাবে হয়েছে। এটি আরেকটি প্রমাণ। শিশুটি প্রথম থেকেই জটিল অবস্থায় ছিল। আমাদের হাসপাতালে অসাধারণ সব চিকিৎসক রয়েছেন। যারা সংকটময় সময়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়।

গত ২৫ জানুয়ারি নোয়াখালী সদর উপজেলার এজবালিয়া গ্রামের পারভীন আক্তার ও সালাউদ্দিন দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় ছেলে শিশুটি। তবে শিশুটির শরীরের সঙ্গে আরেকটি শিশুর মাথাবিহীন শরীর জোড়া লাগানো ছিল।

নোয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘জন্মের পর পরই শিশুটিকে নোয়াখালীর বিভিন্ন হাসপাতালে দেখানো হয়েছে। সেখানকার চিকিৎসকরা আমার বাচ্চাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসার পরামর্শ দেয়। এরপর গত ২৮ জানুয়ারি এখানে এলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার বাচ্চাকে ভর্তি করে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ওর অপারেশন করা হয়। তার নাম রাখা হয়েছে আব্দুল্লাহ। ওই আমাদের প্রথম সন্তান।‘

সালাউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাসপাতালের ডাক্তাররা খুব ভালভাবে আমার বাচ্চাকে দেখেছে। অপারেশনও করেছে। তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আবদুল্লাকে যেন সুস্থভাবে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারি সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাই।

অস্ত্রপচার টপ নিউজ পরজীবী শরীর শিশু

বিজ্ঞাপন

কিশোর অপরাধ, আমাদের করণীয়
৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:০১

আরো

সম্পর্কিত খবর