Friday 10 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নোট-গাইডের বদলে ‘অনুশীলনমূলক বই’ প্রকাশের পক্ষে প্রকাশকরা


২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৪:০৭ | আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৫:৩০

ঢাকা: পরিমার্জিত শিক্ষা আইন-২০১৯ এর খসড়ায় সব ধরনের নোট-গাইড বই নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি সাজা-জরিমানার কথা উল্লেখ থাকলেও এ সংক্রান্ত ধারাগুলো সংশোধন ও নতুন ধারা-উপধারা যোগ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি। নোট-গাইড বইয়ের বিকল্প হিসেবে ‘অনুশীলনমূলক বই’ বাজারজাত করার সুযোগও চেয়েছেন তারা।

রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের দাবি তুলে ধরেন।

বিজ্ঞাপন

দাবি মানা না হলে আগামী সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সারাদেশে পুস্তক ব্যবসায়ীরা বইয়ের দোকানগুলো পূর্ণদিবস বন্ধ রেখে মানববন্ধন করবেন। পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেবেন। এরপরও দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

পরিমার্জিত শিক্ষা আইনের খসড়ার ১১ ধারায় নোট-গাইড বইয়ের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, যে পুস্তকসমূহ পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তুর আলোকে বিভিন্ন পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্নাবলির উত্তর লিপিবদ্ধ থাকে, যাহা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রয় করা হয়। এই সংজ্ঞাটির জায়গায় ‘অনুশীলনমূলক বই’ এর সংজ্ঞা চেয়েছেন প্রকাশকরা।

পুস্তক ব্যবসায়ীদের সংজ্ঞায় ‘`অনুশীলনমূলক বই’ অর্থ যে পুস্তকসমূহে পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তুর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ এবং পর্যাপ্ত নমুনা প্রশ্ন ও উত্তর কিংবা টেক্সট লিপিবদ্ধ থাকে, যাহার অনুশীলন শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনে সহায়ক হয়।”

আইনের ১৬ (১) ধারা নোট-গাইড বই বাজারজাত নিষেধ থাকলেও সমিতির পক্ষ থেকে ‘অনুশীলনমূলক বই’ প্রকাশ ও বাজারজাত করার সুযোগ চাওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

খসড়া আইনের ১৬ (২) ধারায় নোট-গাইড বই বিক্রিতে তিন বছরের কারাদণ্ড, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা ও উভয়দণ্ডের বিধান থাকলেও ‘অনুশীলনমূলক বই’ এর জন্য এই ধারা কার্যকর না করার দাবি জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির দাবি— অনুশীলনমূলক বই বন্ধ হলে পিইসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটবে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পুস্তক বিক্রয়কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এসব বিক্রয়কেন্দ্রের মূল আয় আসে অনুশীলনমূলক বই বিক্রির মাধ্যমে। অনুশীলনমূলক বই বিক্রি বন্ধ হলে ব্যবসায়ীরা তাদের বিক্রয়কেন্দ্র গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে। ফলে সৃজনশীল বইয়ের প্রকাশনাও হুমকির মুখে পড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় অনুশীলনমূলক বই প্রকাশের সঙ্গে প্রায় ৪ লাখ ৬২ হাজার মানুষ সরাসরি যুক্ত। এ খাত থেকে তাদের পরিবারের ২৩ লাখ মানুষের জীবিকা আসে। অনুশীলনমূলক বই বন্ধ হয়ে সেখানে কর্মরত লাখ লাখ মানুষ বেকার, অর্ধ- বেকার হয়ে যাবে।

আরও জানানো হয়, অনুশীলনমূলক বই প্রকাশ বন্ধ হলে কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট টিউটরদের চাহিদা বেড়ে যাবে। যেখানে একটি অনুশীলনমূলক বই ১৫০-২৫০ টাকায় কেনা যায় সেখানে কোচিং সেন্টার ও গৃহশিক্ষকের জন্য অভিভাবকদের কয়েকগুণ বেশি টাকা খরচ করতে হবে। গরিব অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের প্রাইভেট টিউশন বা কোচিংয়ের অর্থ জোগান দিতে পারবেন না। ফলে সে সব শিক্ষার্থী পিছিয়ে পড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন (ছোটন), সহ-সভাপতি শ্যামল পাল, কামরুল হাসান শায়ক, মির্জা আলী আশরাফ কাশেম, পরিচালক কাজী জহুরুল ইসলাম বুলবুল, পরিচালক কাজী শাহ আলম, শামসুল বাহার, নিরুপ সাহা নিরু, আনোয়ারুল ইসলাম, আমিনুর রহমান, সমিতির সাবেক সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটন, সাবেক পরিচালক বাহাউদ্দিন ভূঁইয়া, সাবেক পরিচালক প্রকৌশলী মেহেদী হাসান এবং বাংলাদেশ ওয়েব প্রিন্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাব্বানি জাব্বারসহ অন্যরা।

অনুশীলনীমূলক বই টপ নিউজ নোট-গাইড বই পুস্তক প্রকাশক বিক্রেতা সমিতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর