সরকারকে টেনে নামাতে গিয়ে নিজেরাই এখন রাস্তায় পড়েছে: তথ্যমন্ত্রী
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৪:৫৬ | আপডেট: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৯:৫১
ঢাকা: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির সমাবেশে ড. কামাল হোসেন যেভাবে সরকারকে টেনে রাস্তায় নামানোর কথা বলেছেন, তাতে সরকারকে নামানো তো সম্ভবই নয় বরং তারা নিজেরাই রাস্তায় এমনভাবে পড়ে গেছে যে, আর উঠে দাঁড়াতে পারছে না।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন যে মাপের লোক, তার মুখ দিয়ে এরকম কথা বলাটা মোটেই শোভা পায় না। এরপরেও তিনি এমন কথা বলেছেন। ওনার নিজের দলের দিকে নজর দেওয়া উচিত। টালমাটাল অবস্থা ওনার দলের। এখন তিনি অন্যদলের সমাবেশে গিয়ে আগুন ঝরা বক্তব্য দেন। যা মোটেই কাম্য নয়।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ড. কামাল হোসেন সমাবেশে যেভাবে কথা বলেছেন, তাতে তারা আইন ও আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়েছেন। কারণ বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার এখতিয়ার সরকারের নেই। এটি তারা ভালো করেই জানেন। এরপরেও তারা এমন বক্তব্য দিচ্ছেন। কারণ তারা আইন ও আদালত তো মানেন না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিক্ষোভ সমাবেশ তারা করতেই পারেন। তবে ভাষাগুলোর ব্যাপারে আরও সংযত হওয়া দরকার।’
গতকাল (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশে ড. কামাল হোসেন বলেছিলেন, ‘সরকারকে টেনে রাস্তায় নামালে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে বাধ্য হবে সরকার।’
এর আগে হাছান মাহমুদ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) আয়োজনে ৮ বিভাগের ২৪ জন সাংবাদিকের প্রশিক্ষণ উদ্বোধন উপলক্ষে পিআইবির সম্মেলন কক্ষে এক বক্তব্যে বলেন, ‘পৃথিবীর আর কোনো জনবহুল দেশ নেই যেখানে বছরের প্রথম দিনে ৩ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দেওয়া হয়, আর কোনো দেশ নেই যেখানে দেড় কোটি মায়ের মোবাইল ফোনে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে যায়, যেখানে মিড ডে মিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৯০১ সালে প্রথম ভারতীয় উপমহাদেশের কোলকাতায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। এরপর পূর্ববাংলায় ১৯১২ সালে বিদ্যুতের ব্যবহার শুরু হয়। গত ১০৮ বছরে বাংলাদেশ বিদ্যুতে স্বয়ং সম্পুর্ণতা অর্জন করেছে। বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
প্রশিক্ষণরত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা বাসসের সাংবাদিক। আপনারা নাগরিকদের হতাশাগ্রস্ত তথ্য দেবেন না। কারণ হতাশাগ্রস্ত তথ্য দিয়ে রাষ্ট্রকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। আশাবাদী তথ্য প্রচার করে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নেবেন। দেশের অগ্রগতির কথাগুলো মানুষকে জানাবেন। মানবিক হওয়ার কথাগুলো লিখবেন। সমাাজের অসঙ্গতি ও সুবিধাবঞ্চিত লোকদের কথাগুলোও বলবেন এবং তুলে ধরবেন। আগামী দিনে একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে আপনারা কাজ করবেন।’
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফীন সিদ্দীক বলেন, ‘সংবাদ হবে বস্তুনিষ্ঠ। বস্তুনিষ্ঠতা ছাড়া সাংবাদিকতা এগিয়ে যেতে পারে না। সত্যের কোনো বিকল্প নেই। সত্য প্রকাশে অনড় থাকবেন। আপনারা যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন, সেই প্রতিষ্ঠানের একটি নীতিমালা রয়েছে। সেই নীতিমালার আলোকেই তথ্য সংগ্রহ করবেন এবং তা প্রকাশ করবেন।’
অনুষ্ঠানে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব রেজাউল হাসান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের মাধ্যমে দেশ আজ স্বনির্ভর হতে যাচ্ছে। আগে ছিল মাইক্রো ক্রেডিট আর এখন হয়েছে মাইক্রো সেভিংস। এর আওতায় সারাদেশে গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে একত্রিত করা হয়েছে। তারা ৫ শতাংশ হারে উদ্যোক্তা লোন নিতে পারেন। আবার ৮ শতাংশ হারে অন্যান্য লোনও নিতে পারেন। মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে দেশকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ।
টপ নিউজ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)