করোনাভাইরাসের সতর্কতাকারী সেই ‘হিরো’ চিকিৎসক মারা গেছেন
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:১২ | আপডেট: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:০৮
করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে প্রথম সতর্ক করেছিলেন চীনের উহান প্রদেশের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক লী ওয়েনলিয়াং। তার ভূমিকার জন্য তিনি চীনের ‘হিরো’ হয়ে উঠেছিলেন সবার কাছে। পরে তিনি নিজেও আক্রান্ত হয়েছিলেন এ ভাইরাসে। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) নিজ কর্মস্থলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার। খবর বিবিসি, রয়টার্স।
লী একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ। চীনের উহান প্রদেশের একটি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন তিনি। গত ডিসেম্বরে এ প্রদেশে নতুন ধরণের এক ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তবে শুরুতে চিকিৎসকরা এ ভাইরাস সম্পর্কে কোনো তথ্যও যেমন জানতেন না, তেমনই সতর্কতামূলক কোনো পদক্ষেপও নেওয়া হয়নি।
তবে রহস্যময় এ করোনাভাইরাস যে নিকট ভবিষ্যতে ব্যাপক মহামারির কারণ হতে যাচ্ছে, সে ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন লী ওয়েনলিং। সামাজিক মাধ্যমে তিনি এ ভাইরাসটিকে ২০০২-০৩ সালের সার্স ভাইরাসের মত ভয়ানক বলে সতর্ক করেছিলেন।
এমন সতর্কবানী প্রকাশের পর লী ওয়েনলিংসহ আরও ৭ জনকে গ্রেফতার করে চীনের পুলিশ। ভাইরাস সম্পর্কে ‘অসত্য’ তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে। এ মাসের শুরুতে লী’কে একটি জবানবন্দীতে স্বাক্ষর করানোর অভিযোগ ওঠে স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধে। ওই জবানবন্দীতে লী বলেন, তিনি ভাইরাস সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছেন তা ‘সামাজিক শৃঙ্খলা বিনষ্ট করেছে’।
তবে লী যে সতর্কতা দিয়েছিলেন, খুব শীঘ্রই তা বিশ্ব স্বাস্থ্য জরুরী অবস্থায় পরিণত হয়েছে। তার সতর্কতার এক সপ্তাহের মধ্যেই করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করে চীনে। ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য দেশেও। পরে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ লী ওয়েনলিংয়ের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে।
এরইমধ্যে নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন লী ওয়েনলিং। শুক্রবার সকালেই নিজ কর্মস্থলে মৃত্যু হয় তার। প্রথমদিককার একজন সতর্কতাকারী চিকিৎসক হিসেবে লী’র মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন চীনের নাগরিকরা।
উল্লেখ্য, শুক্রবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ৬৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পরিস্থিতিকে ‘জনগণের যুদ্ধ’ বলে ঘোষণা দিয়েছে চীন সরকার।