ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের দিয়ে কৃত্রিম লাইন, এজেন্টশূন্য ধানের শীষ
১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৬:০৭ | আপডেট: ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৬:১০
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডভুক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকার চারটি কেন্দ্রে ছাত্রলীগ নেতারা হলের শিক্ষার্থীদের দিয়ে কৃত্রিম লাইন তৈরি করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রগুলোর মধ্যে আছে উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র ও কার্জন হল কেন্দ্র।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে এসব কেন্দ্রের সামনে ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা না গেলেও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সেখানে অবস্থান করতে দেখা যায়। এছাড়া মোটরসাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাসের ভোটকেন্দ্রগুলোও দেখতে যান ছাত্রলীগ নেতারা।
প্রতিটি কেন্দ্রের সামনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের তথ্যসহায়তা কেন্দ্র থাকলে অন্য প্রার্থীদের কোনো তথ্যকেন্দ্র দেখা যায়নি।
কেন্দ্রগুলোতে বিএনপির প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার অন্তর্গত প্রত্যেকটি কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে আমি মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছি।’
এছাড়া সকাল ১০টায় কার্জন হল কেন্দ্রে ধানের শীষে ভোট দেওয়ায় এক ব্যক্তিকে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
কার্জন হল কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বের হওয়ার পর বাইরে থাকা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তার কাছে জানতে চান, তিনি কোন প্রতীকে ভোট দিয়েছেন। ওই ব্যক্তি ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন বলতেই তাকে মারধর শুরু করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাকে মারতে মারতে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের দিকে নিয়ে যান ছাত্রলীগের কর্মীরা।
তবে কার্জন হল কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার শামসুল আলম বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে ভোট হচ্ছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ধানের শীষের এজেন্ট এখানে নেই। কাউকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাইনি।’
এখন পর্যন্ত কতটি ভোট পড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সকাল ১০টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ৫৭টি ভোট পড়েছে। এখন ভোটারা ধীরে ধীরে আসছে।
এদিকে সকাল সাড়ে সাড়ে ১১টায় ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল পরিদর্শনে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ও ২১নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদসহ বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা।
পরিদর্শন শেষে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমি এবং আমার স্ত্রী বেলা পৌনে ১১টার দিকে উদয়ন স্কুলে ভোট প্রদান করেছি। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করায় উন্নয়নের আরও একধাপ এগিয়ে গেলাম। ডিজিটাল পদ্ধতির এই অভ্যস্ততা আগামী দিনগুলোতে মানুষ মনস্তাত্ত্বিকভাবে সহজে গ্রহণ করবে। ডিজিটাল পদ্ধতির এই ইভিএমে ভোট দেওয়া অত্যন্ত সহজ, শুধু বতাম টিপে সহজেই জনগণ ভোট দিতে পারছে।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২১নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমি সবগুলো ভোটকেন্দ্রে ঘুরেছি। সুষ্ঠু সুন্দরভাবে কেন্দ্রগুলোতে ভোট হচ্ছে তবে ভোটাররা একটু ধীর গতিতে আসছে। বেলা বাড়তে থাকলে ভোটারও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তবে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরোটারি স্কুল কেন্দ্রে প্রথম দুই ঘণ্টায় মাত্র তিনটি ভোট পড়ে।’