৪ মাসের মধ্যে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা
৩০ জানুয়ারি ২০২০ ১৭:০৭
গত বছরের শেষে, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীন প্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে জানায় দেশটিতে করোনাভাইরাসের উপস্থিতির কথা। পরবর্তীতে চীনের গবেষকরা মাত্র ১০ দিনে প্রকাশ করেন ভাইরাসটির জেনেটিক কোড। অন্যান্য দেশের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে সে কোড বা নকশা শেয়ার করা হয়, যাতে দ্রুতই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক রিচার্ড হ্যাটচেট চেষ্টা করছেন আগামী ১৬ সপ্তাহ বা ১১২ দিনের মধ্যে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে। খবর দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমসের।
অসলোভিত্তিক গবেষণা সংস্থা দ্য কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপার্ডনেস ইনোভেশনস (সিইপিআই) এর প্রধান রিচার্ড হ্যাটচেট। তিনি ও তার দল এখন অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত তারা কাজ করছেন। যাতে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিতে পারেন।
তিন বছর আগে সরকারি ও বেসরকারি সহায়তায় গড়ে তোলা হয় সিইপিআই। প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটির। হ্যাটচেট জানান, সিইপিআই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর করোনাভাইরাসই প্রথম স্বাস্থ্য দুর্ভোগ যেটি মহামারি ধারণ করছে।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে মার্কিন বায়োটেকনলজিস্টদের একটি দল ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন। ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের প্রথম ধাপে, এ সময়ের মধ্যে সিইপিআই একজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করবে বলে পরিকল্পনা নিয়েছে।
সর্বশেষ ৬ বছর আগে, নতুন ভ্যাকসিন আবিষ্কারের এমন প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সে সময় পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলার সংক্রমণ ঘটেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাক এন্ড কোং ইবোলার ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে। কঙ্গোতে সে সময় ২ লাখ ৩৬ হাজার সাধারণ মানুষ ও ৬০ হাজার স্বাস্থ্য কর্মীকে ইবোলার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জনসন অ্যান্ড জনসন আশা করছে আগামী ৮ থেকে ১২ মাসের মধ্যে মানবদেহে তারা করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালাতে পারবে। এই একই প্রক্রিয়া কয়েক দশক পূর্বে ৫ থেকে ৮ বছরও লেগে যেত। কারণ বেশ কয়েকটি নিরাপদ সূচক নিশ্চিত হলে কোনো রোগের ভ্যাকসিন বাজারজাত করা হয়।
তাই বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামী কিছু মাসের মধ্যেই করোনাভাইরাস রোগীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া চ্যালেঞ্জিং এবং এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। আগামী এক বছরের মধ্যে সারাবিশ্বে করোনাইভাইরাসের ভ্যাকসিন সহজলভ্য হবে কি না সে ব্যাপারে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।