Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্ত্রীকে খুনের পর ধর্ষণের নাটক সাজিয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন


২৯ জানুয়ারি ২০২০ ১৯:৪২

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদে নিজ বাসায় এক গৃহবধূ খুনের আগে-পরের চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, ওই গৃহবধূকে খুন করেছে স্বামী। খুনের পর ঠাণ্ডা মাথায় ‘ধর্ষণের পর গৃহবধূকে খুনের’ নাটক সাজিয়ে ফোন করে পুলিশের হটলাইন নম্বরে (৯৯৯)। তবে শুরু থেকেই সন্দেহের মধ্যে রেখে স্বামীকে আটক করে পুলিশ।

বুধবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে স্বামী স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সফি উদ্দিনের আদালতে জবানবন্দি দেন বলে জানিয়েছেন বায়েজিদ বোস্তামি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার রাতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার শেরশাহ বাংলাবাজারের গুলশান হাউজিং কলোনির একটি বাসা থেকে গৃহবধূ বিবি ফাতেমা লিপির (২১) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লিপি দিনমজুর মো. কামরুজ্জামানের স্ত্রী। উভয়ের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলায়।

মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছিল, লিপির মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখে তাকে খুনের বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ। এছাড়া মরদেহের পাশে একটি রক্তমাখা নোড়া পাওয়া যায়। এছাড়া তার পরনের জামাও ছেঁড়া ছিল।

ওসি প্রিটন সরকার সারাবাংলাকে বলেন, ‘শুরু থেকেই কামরুজ্জামানের আচরণে আমাদের কাছে সন্দেহ লাগছিল। ৯৯৯ নম্বরে ফোন করায় এই সন্দেহ আরও বেশি হয়। তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিই। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর ভোর ৪টার দিকে সে হত্যার কথা স্বীকার করে পুরো ঘটনা আমাদের খুলে বলে।’

জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে ভিত্তিতে ওসি প্রিটন জানান, ২০১৭ সালে কামরুজ্জামানের সঙ্গে লিপির বিয়ে হয়। বিয়ের পর কামরুজ্জামান ওমানে চলে যায়। ২০১৯ সালের মার্চে ফিরে আসে। ফেরার পর নির্মাণাধীন ভবনে ঠিকাদারের অধীনে দিনমজুর হিসেবে কাজ শুরু করে। কামরুজ্জামান আরও জানায়, তার স্ত্রীর সঙ্গে এক ছেলের সম্পর্ক ছিল। তিনমাস আগে ওই ছেলের সঙ্গে লিপি পালিয়ে গিয়েছিল। পরে আবার কামরুজ্জামান তাকে ফিরিয়ে আনে। লিপি সারাক্ষণ মোবাইলে কথা বলত। ঠিকমতো রান্না করত না। এজন্য বিভিন্নসময় কামরুজ্জামানকে বাসায় ফিরে ভাতের বদলে হালকা খাবার খেয়ে থাকতে হতো।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার দুপুরে বাসায় ফিরে কামরুজ্জামান দেখে, তার স্ত্রী ভাত রান্না করেনি। এসময় দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হলে লিপিকে থাপ্পড় মারে কামরুজ্জামান। তখন লিপি তার কলার চেপে ধরে। এভাবে ঝগড়ার একপর্যায়ে কামরুজ্জামান লিপির মাথায় নোড়া দিয়ে আঘাত করলে সে লুটিয়ে পড়ে। তখন কামরুজ্জামান ধর্ষণের নাটক সাজাতে তার জামা-প্যান্ট ছিঁড়ে রাখে। এরপর আবার কাজে চলে যায়।

‘বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কামরুজ্জামানকে লিপিকে খুন করে। এরপর যেখানে কাজ করছিল সেখানে চলে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ফিরে আসে। প্রথমে নিজের ভাইকে ফোন করে বলে- লিপি খুব অসুস্থ, ডাক্তার যেন নিয়ে আসে। তার ভাই স্থানীয় একজন প্র্যাকটিশনারকে নিয়ে বাসায় যান। তখন ডাক্তার লিপিকে মৃত ঘোষণা করেন এবং পুলিশকে খবর দেওয়ার কথা বলে বেরিয়ে যান। ভাইও বেরিয়ে যান। এরপর কামরুজ্জামান হটলাইনে ফোন করে জানায়, তার স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।’

সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছেন। এদিকে লিপির বাবা মো. মাসুদ বাদী হয়ে কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মাসুদের অভিযোগ- ২০১৯ সালে দেশে ফেরার পর ব্যবসা করার জন্য তিনি কামরুজ্জামানকে এক লাখ টাকা দেন। এরপর আবারও লিপিকে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। টাকা না দেওয়ায় তার মেয়েকে খুন করা হয়েছে।

৯৯৯ চট্টগ্রাম টপ নিউজ ফোন স্ত্রীকে খুন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর